বদলি খেলোয়াড়ই সিরিজ জেতালেন বাংলাদেশকে
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ বাংলাদেশ জিতেছিল ৬ উইকেটে। সেই ম্যাচে একাদশে ছিলেন না মেহেদি হাসান মিরাজ। রবিবার সিরিজ জয়ের দ্বিতীয় ম্যাচে তাকে রাখা হয় একাদশে। বাদ পড়েন শামীম হোসেন পাটোয়ারী।
সেরা একাদশে খেলতে নেমেই ব্যাটে-বলে রেখেছেন অসাধারণ ভূমিকা। প্রথমে বল হাতে তার ঘূর্ণিতে কাবু করেন ৪ ইংরেজ ব্যাটসম্যানকে। রান দেন ৪ ওভারে মত্র ১২। এরপর ব্যাট হাতে তুলেন ঝড়। ১৬ বলে ২ ছক্কায় খেলেন ২০ রানের ক্যামিও ইনিংস। তার এই ২ ছক্কায়ই ছিল বাংলাদেশের ইনিংসের একমাত্র। পরে জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
একাদশে ফিরে ম্যাচ জেতায় ভূমিকা রাখতে পেরে বেজায় খুশি মিরাজ বলেন, ‘ টিম ম্যানেজমেন্ট আমার ওপরে ভরসা করে আমাকে এই ম্যাচে খেলিয়েছে। মনে করেছে, আমি এই ম্যাচে খেললে দলকে কিছু একটা দিতে পারব; বিশেষ করে এই উইকেটে। তারা যে আমাকে বিশ্বাস করেছিল, সেটার প্রতিদান দিতে পেরে নিজের কাছে খুবই ভালো লাগছে।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যেকোনো ফরম্যাটে প্রথম সিরিজ জিততে পেরেও মিরাজ খুশি। তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। এই প্রথম আমরা ইংল্যান্ডের সাথে সিরিজ জিতেছি, তাও টি-টোয়েন্টি। ওরা তো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দলকে হারিয়ে নিজেদের কাছে খুব ভালো লাগছে। সবচেয়ে বড় কথা, ওদের সাথে আমাদের খেলা বেশি হয় না। খেলার তেমন সুযোগও পাই না। ২০ বছরে মনে হয় ১০টা ( হবে এই সিরিজে আগে ১টা) টি-টোয়েন্টিও খেলিনি ওদের সাথে। এটাই প্রথম সিরিজ ছিল। এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া, যেহেতু আমরা সিরিজটা জিতেছি।’
নিজের বোলিং নিয়ে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই মিরপুরে খেললে আমরা সুবিধা পাই। এখানে যে কন্ডিশন থাকে, স্পিনাররা একটু সহায়তা পাই। যেহেতু আমি স্পিন বোলার, সেই সুবিধাটা নেওয়ার চেষ্টা করি। সেটাই হয়তো কাজে লাগে।
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বাংলাদেশ বিদায় নিয়েছিল গ্রুপ পর্বে থেকেই। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা হেরে যাওয়াতে শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষের ম্যাচে বাংলাদেশের সেমিতে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। জিতলেই সেমিফাইনাল খেলতে পারত। কিন্তু পারেনি। তারপর স্বল্প সময়ে বাংলাদেশের এ রকম সাফল্য নিয়ে মিরাজ বলেন,‘ আপনি বললেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমরা ভালো খেলতে পারিনি। কিন্তু আমার মনে হয়, আমরা ভালো ক্রিকেটই খেলেছি। আমাদের জন্য বড় সুযোগও ছিল। পাকিস্তানের সাথে জিতলেই আমরা সেমিফাইনাল খেলতাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত জিততে পারিনি। এখন যে খেলোয়াড়রা আছে, তারা সবাই ইতিবাচকভাবে খেলছে। টি-টোয়েন্টি খেলাটা কিন্তু চিন্তা করার কিছু নেই। এখানে প্রতিটা বলেই ঝুঁকি ও সাহস নিয়ে খেলতে হয়। আমাদের খেলোয়াড়রা সবাই মানসিকতা পরিবর্তন করেছে যে আমরা কীভাবে গ্লেম প্ল্যান করব, কীভাবে খেলব। এভাবেই হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটার এসেছেন। তারাও ভালো ক্রিকেট খেলছেন। বিশেষ করে তৌহিদ হৃদয়, ওকে দেখে মনে হয় না যে ওর অভিষেক হয়েছে। আর শান্তকে দেখেন, তাকে নিয়ে আমরা অনেকে অনেক কথা বলেছি, সবাই অনেক বাজে মন্তব্য করেছে। ও কিন্তু এখন ভালো ক্রিকেট খেলছে। ও ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং নিজেকে মানসিকভাবে শক্ত করেছে। এখন আলহামদুলিল্লাহ, ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলছে অনেক দিন ধরেই। বিশ্বকাপে ভালো খেলেছে, বিপিএলে সর্বোচ্চ রান করেছে, এই সিরিজেও ভালো খেলেছে। এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলোই দলের জন্য অনেক বড় সহায়তা করছে।’
এমপি/এসআইএইচ