সিরিজ জিততে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১১৮ রান
সিরিজ বাঁচিয়ে রাখার প্রত্যয়ে ইংল্যান্ড সেরা একাদশে একটি পরিবর্তন আনার পাশাপাশি ব্যাটিং অর্ডারেও পরিবর্তন আনে। উদ্দশ্য বড় সংগ্রহ। কিন্তু তাতেও তাদের কল্যাণ বহে আনেনি। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তারা শেষ বলে অলআউট হয়েছে ১১৭ রানে।
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথমবারের মত সিরিজ খেলতে নেমে বাংলাদেশ এখন সিরিজ জয়ের আশা করতেই পারে। বোলাররা তাদের করণীয় করে দিয়েছেন। এখন কাজ ব্যাটসম্যানদের।
পিচের কথা বিবেচনা করা টস জয়টা মূখ্য হয়ে উঠেছে। সিরিজে টানা পঞ্চমবারের মতো টস জিতে বাংলাদেশ। যে কারণে পছন্দসই সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ আসে কাপ্তান সাকিবের কাছে। তিনি সেই সিদ্ধান্ত বোলারদের হাত বল তুলে দিয়ে। সাকিবের সেই সিদ্ধান্তের যথাযথ সম্মান দেন বোলাররা।
বাংলাদেশের একাদশে যে একটি পরিবর্তন ছিল সেখানে শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে বাদ দিয়ে মেহেদি হাসান মিরাজকে দলে নেওয়া হয়। একে স্পষ্ট হয়ে উঠে পিচ স্পিনিং। সাকিব-নাসুমের সঙ্গে হাত ঘুরাবেন মিরাজও। সঙ্গে তিন পেসার তাসকিন-মোস্তাফিজ-হাসান মাহমুদ।
কোনো কারণে কোনো বোলার ভালো করতে না পারলে, সেখানে হাতে আছে অপশন। প্রথম ম্যাচে সাকিব ৫ বোলার দিয়েই কোটা শেষ করেছিলেন। আজ ৬ বোলার থাকার পরও ইংল্যান্ডকে আরও বেশি চাপে ফেলতে নাজমুল হোসেন শান্তকে দিয়ে ‘জুয়া’ খেলেন সাকিব। সাকিব যখন নাজমুলে হাতে বল তুলে দেন, তখন ইংল্যান্ডের রান ১১ ওভারে ৪ উইকেটে ৬৭। ওভার প্রতিরান ছিল ৬.০৯।
নাজমুল ১ ওভার বোলিং করে রান দেন ৯। এরপর তিনি আক্রমণে নিয়ে আসেন আফিফকে। তিনিও ১ ওভার বোলিং করে রান দেন ৭।
সাকিব এ রকম ‘জুয়া খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন শুরুতেই তার বোলাররা ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের টুটি চেপে ধরলে। প্রথম ম্যাচে ১০ ওভারে ১ উইকেটে ৮০ রান করার পরও পরে আর সেই তাল ধরে রাখতে না পারতে ইংল্যান্ড পরের ১০ ওভারে করেছিল ৫ উইকেটে ৭৬। এ সময় বাংলাদেশের বোলাররা প্রচণ্ডভাবে চেপে ধরেছিলেন তাদের। আজ তাই বাংলাদেশের বোলাররা যাতে আর চেপে বসতেনা পারেন, সে জন্য ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা শুরু থেকেই আক্রমণকেই প্রধান হাতিয়ার বানিয়ে খেলা শুরু করেন। যে কারণে একদিকে যেমন রান আসতে থাকে, তেমনি উইকেটেরও পতন হতে থাকে।
ব্যাটিং পাওয়ার প্লে পর্যন্ত ইংল্যান্ড সঠিক পথেই ছিল। তাদের রান ছিল ১ উইকেটে ৫০। এরপরই তারা খেই হারিয়ে ফেলে। শুরুটা সাকিবের হাত ধরেই। আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকা ওপেনার ফিল সল্টকে (১৯বলে ২৫) সাকিব নিজের বলে নিজেই ক্যাচ ধরে বল আকাশে ছুড়ে মারেন। পরের ২ ওভারে হাসান মাহমুদ জস বাটলারকে (৪) বোল্ড ও মিরাজ মঈন আলীকে (১৭ বলে ১৫) অতিরিক্ত ফিল্ডার শামীম হোসেন ক্যাচে পরিণত করে আউট করলে ইংল্যান্ড চাপে পড়ে যায়। এ সময় তারা ১৬ বলে ৭ রানে হারায় ৩ উইকেট। ফলে ১ উইকেটে ৫০ রান থেকে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ৫৭।
এই চাপ সামাল দেওয়ার জন্য বেন ডাকেট ও স্যাম কুরান হাল ধরার চেষ্টা করেন। কিছুটা সফলও হন তারা। উইকেট পতন রোধ করে রান যোগ করেন ৫.১ ওভার ৩৪। এরপর মিরাজ তার দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম ওভারেই প্রথমে স্যাম কুরানকে (১২ বলে ১৬) ও পরে ক্রিস ওকসকে (২ বলে ০) স্ট্যাম্পিং করলে বাংলাদেশ ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ১৫ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের রান দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ৯৬। মিরাজ পরের ওভারে যখন ক্রিস জর্ডানকে ৩ রানে ফিরিয়ে দেন, তখন ইংল্যান্ডের রান ৭ উইকেটে ১০০। এ সময় তারা ৯ রানে হারায় ৩ উইকেট। মিরাজ তার দ্বিতীয় স্পেলে ২ ওভারে ৬ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। ইনিংসে তার বোলিং ছিল ১০-০-১২-৪। এটি তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। আগের সেরা বোলিং ছিল ১৭ রানে ৩ উইকেট। গত বছল দুবাইতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে নিয়েছিলেন।
ইংল্যান্ডের ৭ উইকেট পতন হলেও বেন ডাকেট থাকায় তখনও কিছু রান যোগ হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। শেষ পর্যন্ত তিনি ২৮ বলে ২৮ রান করে শেষ ওভারে মোস্তাফিজের বলে নাজমুল হোনে শান্তর অসাধারণ ক্যাচে আউট হলে ইংল্যান্ডের রান গিয়ে পৌঁছে ১১৭। বেন ডাকেটের পর ঐ ওভারে অভিষিক্ত রেহান আহমেদ (১১ বলে ১১ রান) ও জোফরা আর্চারের উইকেট হারালেও তারা শেষ বলে অলআউট হয়। দুই জনেই রান আউট হন। শেষ ৩ উইকেট তারা হারায় ৪ রানে।
হাসান মাহমুদ ২ ওভারে ১০ রানে,তাসকিন ৪ ওভারে ২৭ রানে,মোস্তাফিজ ...রানে ও সাকিব ৩ ওভারে ১৩ রান দিয়ে ১টি করে উইকেট নেন।
এমপি/এমএমএ/