কল্পনা নয় বাস্তব, জিতলেই সিরিজ বাংলাদেশের
এটা কী কল্পনা, না বাস্তব? শরীরে চিমটি কেটে জানান দেয় কল্পনা নয়; বাস্তবই। টি-টোয়েন্টি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে আজ জিতলেই সিরিজ হবে বাংলাদেশের।
সংস্করণের নাম যেহেতু টি-টোয়েন্টি। আর দলটি বাংলাদেশ। যারা প্রতিনিয়ত এখানে খায় হাবুডুবু। খেলা দেখে মনে হবে দুগ্ধ শিশু! সেই বাংলাদেশের সামনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়দের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের হাতছানি, এটি চাট্টিখানি কথা নয়।
যতই ইংল্যান্ড বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হোক। আর বাংলাদেশের সামনে সুযোগটি ‘চাট্টিখানি’ হোক, এটা কিন্তু বাংলাদেশ এমনি এমনি পায়নি। অর্জন করে নিয়েছে। যে অর্জনের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে। যেখানে ইংল্যান্ডকে পাত্তাই দেয়নি। ব্যাটে-বলে তারুণ্যের ঝলকানিতে কোণঠাসা হয় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর প্রথম মাঠে নেমেই হারের নোনা স্বাদ পেয়েছিল তারা। একইভাবে বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর বাংলাদেশেরও ছিল প্রথম ম্যাচ।
যেখানে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের অবস্থা শোচনীয়, সেখানে একটি জয় কিন্তু নিজেদের শক্তিমত্তার কথা জানান দেয় না। কিন্তু যেভাবে বাংলাদেশ জিতেছে, তাত করে সেখানে ছিল দিন বদলের গান।
এমনিতেই ইংল্যান্ডেরর বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ পাঁচ পাঁচটি পরিবর্তন এনে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিল। এই ‘ডাক’ই দিয়েছে পালা-বদলের সুর। বল হাতে ইনিংসে হাসান মাহমুদের দৃষ্টিনন্দন প্রত্যাবর্তন, পরে ব্যাট হাতে নাজমুল-রনি-তৌহিদের উদ্দীপক ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অধিনায়ক সাকিবের দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আগ্রাসী ব্যাটিং-বাংলাদেশ দলের শক্তিমত্তার কথাই জানান দিয়েছে। তরুণ হাসান মাহমুদের কণ্ঠে ছিল সে রকমই আওয়াজ, ‘ এই মুহূর্তে আমাদের যে দলটা আছে, সেটা ওয়ান অব দ্য বেস্ট বাঞ্চ অফ প্লেয়ার্স। খুবই এনার্জেটিক, সবাই মাঠে খুব এফোর্ড দেয়। এটা যদি ধরে রাখতে পারি, এই ব্যাচটাকে যদি রাখতে পারি, তাহলে যে কোনো সংস্করণে এগিয়ে থাকব।’ এই শক্তিতে উদ্ভুদ্ব হয়ে বাংলাদেশ আজ সিরিজ জেতার স্বপ্ন বুনন করেছে। হাসান মাহমুদের কণ্ঠে ছিল তাই জয়েরই আবহ সংগীত, ‘এখন পর্যন্ত আমরা খুব ভালো খেলেছি। ওদেরকে চট্টগ্রামে হারিয়েছি। চেষ্টা থাকবে এখানেও ওদের হারানোর। প্রথম ম্যাচে যেহেতু হারিয়েছি। মোমেন্টামটা আমাদের দিকে। চেষ্টা থাকবে সেটা ধরে রাখার।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে যেখানে বাংলাদেশের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়, হারার তালিকায় আছে হংকং-স্কটল্যান্ডের মত দলও। সেখানে সিরিজ জয় তাই কম থাকারই কথা। তারপরও আছে অস্ট্রেলিয়া-নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের কৃতিত্ব । তবে এই সব নিয়ে আবার প্রশ্নও ছিল। ঘরের মাঠে স্পিন ট্র্যাক পিচ বানিয়ে অতিথিদের ‘বধ ‘ করেছিল বাংলাদেশ। এই দুই দেশের বাইরে উইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের নজির আছে। তবে এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরজ জিতলে পারলে সেখানে ‘ঘরের মাঠে’ সুবিধা নেওয়ার প্রশ্ন উঠার সুযোগ নেই। তাই অবারিত এই সুযোগ মুঠো বন্দি করতে প্রস্তুত সাকিব বাহিনী।
আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ দলের অপরিবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নামার সম্ভাবনা বেশি। কিন্তু ইংল্যান্ড দল চাইলেও পরিবর্তন করতে পারবে না। কারণ খেলোয়াড় ঘাটতি। স্কোয়াডের সদস্য সংখ্যা মাত্র ১৩ জন। ইনজুরির কারণে উইল জ্যাকস ইংল্যান্ড ফিরে গেছেন। একই কারণে আসতে পারেননি টিম অ্যাবল।
প্রথম ম্যাচে খেলা একাদশের বাইরে আছেন যে দুইজন হলেন তারা হলেন মূলত বোলার। রেহান আহমেদ ও রেস টপলি। এই দুই জনই বোলার। দলে প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান বলতে আছেন মাত্র ৫জন। তারা হলেন, ‘জস বাটলার, মঈন আলী, ডেবিড মালান, বেন ডাকেট ও ফিল সল্ট। বাকিরা সব অলরাউন্ডার। স্পিনিং উইকেটের কথা চিন্তা করে তারা হয়ত রেহান আহমেদকে দলে ভেড়াতে পারে।
এমপি/এসএন