কেমন হবে বাংলাদেশের একাদশ?
নতুন বছরে বাংলাদেশ দল প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামবে আগামীকাল ৯ মার্চ চট্টগ্রামে। প্রতিপক্ষ বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। যাদের বিপক্ষে বাংলাদেশ এর আগে মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছিল। ২০২১ সালে সেই ম্যাচে বাংলাদেশ হেরেছিল ৮ উইকেটে।
বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ দল আর কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেনি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যর্থতা সর্বজনবিদিত। সেই ব্যর্থতা থেকে বের হয়ে আসতে এবারের দলে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশ্বকাপের দল থেকে নেই ৫ জন ক্রিকেটার। তারা হলেন- মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, এবাদত হোসেন চৌধুরী, সৌম্য সরকার, শরিফুল ইসলাম ও ইয়াসির আলী। তাদের পরিবর্তে দলে নেওয়া হয়েছে ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়, পেসার রেজাউর রহমান রাজা ও স্পিনার তানভীর ইসলাম। এই তিনজনই প্রথমবারের মতো দলে ডাক পেয়েছেন। আবার দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ওপেনার রনি তালুকদার ও মিডল অর্ডার ব্যাটার শামীম হোসেন পাটোয়ারীকে।
দল থেকে বাদ পড়া ৫ জনের তিনজনই আবার বিশ্বকাপ ক্রিকেটে পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছিলেন। এই তিনজন হলেন- সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন ও এবাদত হোসেন। তাই প্রথম ম্যাচে অন্তত তিনটি পরিবর্তন হতেই যাচ্ছে।
বাংলাদেশের একাদশ গঠন করা হবে পিচ দেখে। জানা গেছে, প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ যে পিচে খেলা হয়েছিল সেই পিচেই ম্যাচ গড়াবে। সেই পিচ ছিল মন্থর। দুই দলই অলআউট হয়েছিল। পিচ নিয়ে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলেছেন, ‘এই পিচে দুই দিন আগে ওয়ানডে ম্যাচ হয়েছে। কাজেই দুই দিনেই কোনো কিছু বদলানো যাবে না। যতটুকু মনে হচ্ছে উইকেটের চরিত্র একই রকম হবে।’
শেষ ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ সেরা একাদশে তিনজন স্পিনার রেখেছিল। সেই তিনজনের একজন তাইজুল ইসলাম আবার নেই দলে। পিচের কথা বিবেচনা করলে বাংলাদেশ তিন স্পিনার নিয়েই মাঠে নামবে। সাকিব-মিরাজের সঙ্গে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদেরই থাকার কথা। কিন্তু ১৭ উইকেট নিয়ে বিপিএলে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তানভীর ইসলামও জোর দাবি জানাচ্ছেন। সুযোগ পেলে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পথচলা শুরু হবে। সেই ম্যাচে দুই পেসার খেলেছিলেন- তাসকিন ও মোস্তাফিজ। তাসকিন আছেন সেরা ফর্মে। মোস্তাফিজ ফর্মের সঙ্গে লড়াই করলেও শেষ ওয়ানডেতে খুবই আটোসাঁটো বোলিং করেছেন। এই দুই পেসারের উপরই ভরসা রাখার সম্ভাবনা বেশি। তিন পেসার খেলালে তানভীরের আর সুযোগ হবে না। এখানে বিপিএলে ১৩ উইকেট নেওয়া তরুণ রেজাউরের চেয়ে হাসান মাহমুদ এগিয়ে আছেন দুই কারণে। প্রথমত বিপিএলে তিনি তানভীরের মতোই সমান ১৭ উইকেট পেয়েছেন। গড় রানে নেমে গেছেন দুইয়ে। দ্বিতীয়ত তার আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা। ৬টি ওয়ানডে আর ১০টি টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা আছে তার ঝুলিতে।
তানভীর কিংবা রেজাউরের অভিষেক নিয়ে দোলাচল থাকলেও তৌহিদ হৃদয়ের অভিষেক নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য তৌহিদ হৃদয় বিপিএলে দারুণ খেলে বাজিমাত করেছেন। ৫ হাফ সেঞ্চুরিতে বিপিএলে তিনি রান করেছিলেন ৪০৩। তালিকায় তিনি ছিলেন তৃতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। বিপিএলে তার দলে ডাক পাওয়াটা যেমন ছিল প্রত্যাশিত, তেমনি একাদশেও। ৭৮তম টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটার হিসেবে তিনি লাল-সবুজের ক্যাপ পড়ার অপেক্ষায় আছেন।
তৌহিদ হৃদয়ের মতো বিপিএলে দারুণ পারফর্মার ছিলেন রনি তালুকদার। ৩ হাফ সেঞ্চুরিতে ৪২৫ রান করে তিনি ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় দুইয়ে। ৮ বছর পর দলে ফিরে তাই তারও সেরা একাদশে ফেরাটা শুধুই সময়ের ব্যাপার।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, নাজমুল হোসেন শান্ত, তৌহিদ হৃদয়, রনি তালুকদার, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, নুরুল হাসান সোহান, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ/তানভীর ইসলাম/নাসুম আহমেদ।
এমপি/এসজি