৩ ফিফটির পরও ২৪৬ রানে অলআউট বাংলাদেশ
২০৯, ১৯৪ রানের পর বাংলাদেশ তৃতীয় একদিনের ম্যাচে রান করেছে ৪৮.৫ ওভারে ২৪৬। হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে এই রান মোটেই নিরাপদ নয়। আবার নিরাপদ হয়ে উঠতে পারে যদি বোলাররা প্রথম ম্যাচে ২০৯ রানের মূলধন নিয়ে যেভাবে চেপে ধরেছিলেন সেভাবে যদি ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের চেপে ধরতে পারেন।
তবে প্রথম ম্যাচে হার মেনেছিলেন ৩ উইকেটে। ম্যাচ শেষে ৩০-৩৫ রান কম হওয়ার আফসোস ছিল সবার কণ্ঠে। এই ম্যাচে সেই ৩০-৩৫ রানের ঘাটতি পূরণ হয়েছে। ২০৯ রানের চেয়ে ৩৭ রান বেশি। কিন্তু আজকের ম্যাচ বিবেচনায় আবার এই রান নিরাপদ কি না তা নির্ভর করবে বোলারদের বোলিংয়ের উপর।
টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর বাংলাদেশের যে সূচনা হয়েছিল, সেই বিবেচনায় এই রান দলের জন্য অনেক ভালোই মনে হবে। কারণ এসময় ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই লিটন দাস কোনো রান না করেই স্যাম কারানের বলে উইকেটের পেছনে অধিনায়ক জস বাটলারের হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন। স্যাম তার পরের ওভারের শেষ বলে ফিরিয়ে দেন অধিনায়ক তামিম ইকবালকে। প্রথম ওভারে উইকেট হারানোর পরও তামিম অবশ্য শুরু করেছিলেন আক্রমণাত্মক। স্যাম কারানের বলে আউট হওয়ার আগে সেই ওভারে ১৪ রান আদায় করে নেন তিনি। তখন দলের রান ২ উইকেটে ৩ ওভারে ১৭।
তামিম আউট হওয়ার পর আবার পরবর্তী তিন ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তর ৫৩, মুশফিকুর রহিমের ৭০ ও সাকিব আল হাসানের ৭৫ রানের ইনিংসের দিকে তাকালে মনে হবে বাংলাদেশের পুঁজি কমই হয়েছে। এর কারণ বাকিরা আর কেউ রান করতে পারেননি।
দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে তামিম আউট হওয়ার পর নাজমুল ও মুশফিক জুটি গড়ে দলের বিধ্বস্ত অবস্থার পরিবর্তন এনে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান জুটিতে ২১.৩ ওভারে ৯৮ রান যোগ করে। এই জুটি আরও বড় হতে পারত, যদি না নাজমুল রানআউটের শিকার না হতেন। মাত্রই তিনি হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন ৬৯ বলে ৫ বাউন্ডারিতে। প্রথম ম্যাচে তিনি করেছিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চরি। খেলেছিলেন ৫৮ রানের ইনিংস। এবার হাফ সেঞ্চুরি করার পরপরই তিনি রানআউটের শিকার হন মুশফিকের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে। অভিষিক্ত রেহান আহমেদের বলে সুইপ করে রান নিতে গিয়েও পরে আর নিতে চাননি। কিন্তু এসময় মুশফিক নিজের প্রান্ত ছেড়ে বের হয়ে আসলে পরে নাজমুলও নিজের প্রান্ত ছেড়ে দৌড় দেন। কিন্তু ক্রিজে আর পৌঁছাতে পারেননি। বাটলারের থেকে বল পেয়ে রেহান রানআউট করেন।
নাজমুল আউট হওয়ার ওভারেই মুশফিক নিজের ক্যারিয়ারের ৪৩তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন নাজমুলের সমান ৬৯ বল খেলে। বাউন্ডারি ছিল একটি কম চারটি। সাকিবের সঙ্গে মিলে তিনি আরেকটি জুটি গড়ার পথে এগোচ্ছিলেন। কিন্তু বেশিদূর যাওয়া সম্ভব হয়নি। জুটিতে ৩৮ রান আসার পর মুশফিককে ফিরে যেতে হয় আদিল রশিদের গুগলিতে পরাস্ত হয়ে বোল্ড হলে। মুশফিকের বিদায়ের পরপরই মাহমুদউল্লাহও (৮) দ্রুত ফিরে গেলে বাংলাদেশ আবার কিছুটা চাপে পড়ে যায়। আফিফকে নিয়ে সাকিব আবার এই চাপ সামলে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন। কিন্তু সাকিবকে আক্ষরিক অর্থে সেভাবে কেউ আর সঙ্গ দিতে পারেননি। আফিফই কিছুটা সঙ্গ দেন। যে কারণে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে রান আসে ৯ ওভারে ৪৯। আফিফ ১৫ রান করে ওকসের বলে মঈন আলীর হাতে ধরা পড়ার আগেই সাকিব ৪৭তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ৫৫ বলে ৩ চারে। কিন্তু আফিফ আউট হওয়ার পর তিনি একেবারেই সঙ্গী হারা হয়ে পড়েন। মিরাজ (৫), তাইজুল (২) দ্রুতই বিদায় নেন। এরকম অবস্থায় সাকিব আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন। আউট হওয়ার আগে ১৬ বল খেলে ৪ বাউন্ডারিতে ২৫ রান যোগ করে ৭৫ রানে জোফরা আর্চারের বলে জেসন রয়ের হাতে ধরা পড়েন।
জোফরা আর্চার ৩৫ রানে নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন আদিল রশিদ ২১ ও স্যাম কারান ৫১ রান দিয়ে। ক্রিস ওকস ২৭ ও অভিষিক্ত রেহান আহমেদ ৬২ রানে নেন ১টি করে উইকেট।
এমপি/এসজি