এই চট্টগ্রামেই হয়েছিল চারশোর্ধ রানের ইনিংস
বাংলাদেশের ক্রিকেটকে দুই হাতে ভরে দিয়েছে চট্টগ্রাম। এই চট্টগ্রামেই বাংলাদেশ পেয়েছে ২০০৫ সালে প্রথম টেস্ট জয়। জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছিল ২২৬ রানে। এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে পাওয়া সেই জয় ছিল এই স্টেডিয়ামের সর্বশেষ টেস্ট। আবার এই স্টেডিয়ামেই একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বাংলাদেশ পেয়েছিল প্রথম ওয়ানডে জয়। এটি ছিল এই স্টেডিয়ামের সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। চট্টগ্রামের সাফল্যের ঝুড়ি এখানেই শেষ নয়, আরও আছে।
২০১১ সালে ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচে উইন্ডিজের কাছে মাত্র ৫৮ রানে অলআউট হয়ে দেশবাসীকে লজ্জায় ডুবিয়েছিল। সেই যাতনা দেশবাসী ভুলে উৎসবে মেতে উঠেছিলেন চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডকে হারানোর মাধ্যমে। একই ম্যাঠে বাংলাদেশ পরের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকেও হারিয়ে ফিরেছিল ঢাকায়।
ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল ২০১৫ সালে। সেই সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচের ফয়সালা হয়েছিল এই চট্টগ্রামেই। এভাবেই চট্টগ্রামের মাটির সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের অনেক সুখের কাব্য।
চট্টগ্রাম কী শুধু সুখই দিয়েছে বাংলাদেশকে, বেদনা দেয়নি! বেদনার পাল্লাও অনেক ভারী। যার সর্বশেষ নজির এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচ। গত বছর ডিসেম্বর তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছিল। চট্টগ্রামের ম্যাচ হয়ে উঠেছিল শুধুই আনুষ্ঠানিকতার। আরেক দৃষ্টিকোন থেকে বাংলাদেশের সামনে হোয়াইটয়াশ করার সুযোগ। ভারতের হোয়াইটওয়াশ এড়ানো। বাংলাদেশ পারেনি, ভারত পেরেছিল। তারা এমনভাবে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছিল, যেখানে বাংলাদেশ দল লজ্জ্বায় লাল হয়ে গিয়েছিল। বাংলাদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো চারশোর্ধ রানের ইনিংস হয়েছিল। প্রথমবারের মতো হয়েছিল ডাবল সেঞ্চুরিও।
টস জিতে বাংলাদেশ দল ভারতকে ব্যাটিং করতে পাঠিয়ে নিজেদের বিপদ নিজেরাই ডেকে এনেছিল। ভারত করেছিল ৮ উইকেটে ৪০৯ রান। ঈষান কিষান প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে করেন প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। ২১০ রান করে তিনি আউট হয়েছিলেন। বিরাট কোহলি করেছিলেন ১১৩ রান। এমন ব্যাটিং স্বর্গ পিচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা পা পিছলে পড়েন। দাঁড়াতেই পারেননি পিচে। আসা-যাওয়ার মিছিলে পলিণত করেন পিচকে। মারত ৩৪ ওভার খেলে ১৮২ রানে অলআউট হয়ে হার মেনেছিল ২২৭ রানে। দলগত সংগ্রহ বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ হলেও রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় হার একটুর জন্য হয়নি। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হার পাকিস্তানের কাছে। ২০০০ সালে তারা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হেরেছিল ২৩৩ রানে।
এই চট্টগ্রামেই আজ ভারতের মতো পরিস্থিতি নিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে নামবে। ভারতের মতো হোয়াইটওয়াশ এড়িয়ে বাংলাদেশ কী পারবে সে রকম কোনো কিছুর দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে।
এমপি/এসএন