শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ একাদশে আসছে একাধিক পরিবর্তন!
স্বপ্নের সিঁড়ি বেয়ে নয়, বাস্তব অর্জন নিয়েই বাংলাদেশ ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয়ের আশা করেছিল। এই আশার পালে হাওয়া লেগেছিল টানা ৭টি সিরিজ জয়। এই ৭ জয়ের মাঝে ছিল ভারতও। এই ভারতের বিপক্ষে জয় ছিল আবার একেবারে টাটকা। এখনো তিন মাস পার হয়নি। কিন্তু ইংল্যান্ডকে হারানোর সেই স্বপ্ন জালে এসে ধরা দেয়নি। উল্টো প্রথম দুটি ম্যাচই হেরে সিরিজ খুইয়েছে টাইগাররা। এই দুই হারের শেষটি ছিল আবার খুবই বাজেভাবে।
প্রথম ম্যাচে ২০৯ রান করেও বাংলাদেশ লড়াই করেছিল। কয়েকবার জয়ের ক্ষেত্রও তৈরি করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে হার মেনেছে ১৩২ রানের শোচনীয় ব্যবধানে। ইংল্যান্ডের ৭ উইকেটে করা ৩২৬ রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল মাত্র ১৯৪ রানে। দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটারদের পাশাপাশি বোলাররা বাজে খেলেছেন।
সোমবার (৬ মার্চ) সিরিজের শেষ ম্যাচ শুধুই আনুষ্ঠানিকতার। ইংল্যান্ডের জন্য হোয়াইটওয়াশ করা আর বাংলাদেশের জন্য এড়ানো। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য তার চেয়েও বড় হয়ে উঠেছে সেরা একাদশের বাইরে থাকাদের পরখ করে নেওয়া। যেহেতু এ বছরই অনুষ্ঠিত হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। সংবাদ সম্মেলনে কথা বলতে এসে রঙ্গনা হেরাথ দিয়েছেন সে রকমই ইঙ্গিত, যখনই সুযোগ আসবে, দলে থাকা অন্য তরুণদের সুযোগ দিতে হবে। আমরা এই সিরিজ হেরে গেছি। সামনে আমাদের বিশ্বকাপ। আমরা সামনে খেলব আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে। তাই আমাদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
ইংল্যান্ড সিরিজের পরপরই শুরু হবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ। তাই সিরিজ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় এখন একাদশের বাইরে থাকাদের পরখ করে নেওয়ার সুযোগ। টিম ম্যানেজমেন্টও সেরকম ভাবনায় এগোচ্ছে। শেষ ম্যাচে দেখা যেতে পারে তাই একাধিক পরিবর্তন।
দুইটি ম্যাচেই বাংলাদেশ অপরিবর্তিত একাদশ খেলিয়েছে। ১৪ জনের দলে না খেলার তালিকায় আছেন বিপিএল মাত করা ব্যাটার তৌহিদ হৃদয়, পেসার এবাদত হোসেন ও হাসান মাহমুদ। শেষ ম্যাচে তাই দেখা যেতে পারে তিনজনকেই!
দুইটি ম্যাচেই বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা ছিল ভয়াবহ। বিপিএলে ভালো করে জাতীয় দলে ফিরে নাজমুল হোসেন শান্ত একাদশেও ফিরেছেন। প্রথম ম্যাচে শান্ত (৫৮) ও দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিব আল হাসান (৫৮) পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস খেলতে পেরেছিলেন। আর কেউই নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। অধিনায়ক তামিম ইকবাল দুই ম্যাচে ২৩ ও ৩৫ ও মাহমুদউল্লাহ ৩১ ও ৩২ রান করেন। এ ছাড়া মুশফিক ১৬ ও ৪, আফিফ ৯ ও ২৩ এবং লিটন ৭ ও ০ রান করেন।
তৌহিদ হৃদয়কে পরখ করে নিতে মুশফিক, আফিফ ও লিটনের মাঝ থেকে যে কারও উপর নেমে আসতে পারে খড়গ। বিশ্বকাপের কথা মাথায় রাখলে খড়গ নেমে আসার সম্ভাবনা মুশফিকের উপরই বেশি। আবার ব্যাটিং ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে যদি বোলার একজন কমিয়ে ব্যাটার বাড়ানো হয়, সেক্ষেত্রে ব্যাটিং লাইনে কোনো পরিবর্তন না এনেই তৌহিদ হৃদয়কে খেলানো হতে পারে! ওপেনিং, ওয়ান ডাউন, টু ডাউন সব পজিশনেই খেলায় অভ্যস্ত আছেন এই তরুণ।
মোস্তাফিজের বাদ পড়া বলা যায় শুধুই সময়ের ব্যাপার। দুই ম্যাচে তিনি কোনো উইকেটই পাননি। প্রথম ম্যাচে ৮ ওভারে রান দিয়েছেন ৪২। দ্বিতীয় ম্যাচে ১০ ওভারে ৬৩ রান। তার জায়গায় হাসান মাহমুদের খেলার সম্ভাবনা বেশি। তাসকিন আবার দুইটি ম্যাচেই উইকেট পেয়েছেন ৪টি। প্রথম ম্যাচে তার বোলিং ছিল খুবই ভালো। ৯ ওভারে মাত্র ২৬ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচে ৩ উইকেট পেলেও ১০ ওভারে রান দিয়েছিলেন ৬৬। এবাদতকে যদি বাজিয়ে দেখতে হয়, সে ক্ষেত্রে তাসকিনকে বিশ্রামে রাখার চিন্তা করছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
প্রথম দুই ম্যাচে বাংলাদেশ তিনজন করে স্পিনার খেলিয়েছে। তৃতীয় ম্যাচে স্পিনারদেন জন্য কিছু নেই। তাই একজন বাদ পড়তে যাচ্ছেন। সেই হিসেবে তাইজুলের নাম আসবে সবার আগে। আবার তিন পেসার খেলানো হতে পারে। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে ভারতের ৮ উইকেটে করা ৪০৯ রানের ইনিংসে বাংলাদেশ তিন পেসার খেলিয়েছিল। তাসকিন-মোস্তাফিজের সঙ্গে সেই ম্যাচ খেলেছিলেন এবাদত। তিনি ৯ ওভারে ৮০ রান দিয়ে উইকেট নিয়েছিলেন ২টি। ৮৯ রান দিয়ে ২টি উইকেট ছিল তাসকিনেরও। মোস্তাফিজ ৬৬ রান নিয়েছিলেন ১ উইকেট।
কে খেলবেন আর কে বাদ পড়বেন সেটা যাই হোক না কেন শেষ ম্যাচে একাদশে একাধিক পরিবর্তনের দিকেই হাঁটছে টিম ম্যানেজমেন্ট!
এমপি/এসজি