এবারই ক্যারিয়ারের শেষ মৌসুম খেলবেন আশরাফুল
বাংলাদেশের ক্রিকেট আজ শক্ত কাঠানো্ উপর দাঁড়িয়ে। ওয়ানডে ক্রিকেটে জয় পাচ্ছে হর হামেশাই। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে জয় আসে মাঝে মাঝে। এই সব জয় এক এক সময় থাকে এক একজনের ভুমিকা। কিন্তু এক সময় বাংলাদেশ দলের কাছে জয় ছিল আকাশের চাঁদ। ধরা দিত মাঝে মাঝে। আর সেই সব জয়ে নাম থাকত একজনেরই ।
তিনি হলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ২০০৫ সালে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে কার্ডিফে অস্ট্রেলিয়াকে হারানো ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছিল তিন অঙ্কের ম্যাজিকি ফিগার। আগ-পরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের একমাত্র জয়।
এক সময় আশরাফুল হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের পোস্টার বয়। সেই পোস্টার বয় মাঝে আবার ফিক্সিং কাণ্ডে জড়িয়ে আইসিসি কর্তৃক ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ার পর নিজেরে সেই ব্যাটিং শৈলি হারিয়ে ফেলেন।
নিষেধাজ্ঞা শেষে আবার মাঠে ফিরলেও নিজেকে আর ফিরে পাননি। খুঁড়িয়ে খুড়িয়ে চলে তার ক্যারিয়ার কিন্তু এভাবে আর কতদিন? ৩৯ ছুঁই ছুঁই আশরাফুল তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন ক্যারিয়ারের ‘ইতি’ টানার।
এ বছর প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটই হবে আশরাফুলের শেষ মৌসুম। আর আসন্ন বিসিএল ও এনসিএল হবে শেষ প্রথম শ্রেণির আসর। তারপর গুটিয়ে রাখবেন ব্যাট-প্যাড।
শনিবার (৪ মার্চ) মোহামেডানের হয়ে প্রিমিয়ার লিগে নাম লিখিয়ে তিনি ব্যক্ত করেন নিজের এই সিদ্ধান্তর কথা।
ব্রাদার্স ইউনিয়ন থেকে মোহামেডানে নাম লেখানোর পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এটাই হবে আমার শেষ মৌসুম। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে সীমিত ওভারের ম্যাচ থেকে অবসরে যাচ্ছি। আর সামনে যে বিসিএল ও এনসিএল আছে, সেগুলো হবে লঙ্গার ভার্সনে আমার শেষ মৌসুম। আমি ঘরোয়া ক্রিকেটের সব ধরনের টুর্নামেন্ট থেকে অবসরে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছি।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে যত আসরই হোক না কেন প্রিমিয়ার লিগের গুরুত্ব আর উত্তেজনাই আলাদা। এই প্রিমিয়ার লিগ খেলেই আশরাফুলের উত্থান। এমনকি অনেক ক্রিকেটারেরও। যদিও টেস্ট মযার্দা পাওয়ার পর বিসিবির কাছে এই আসর গুরুত্ব হারিয়েছে। বিসিবির কাছে সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়ে থাকে বিপিএল। কিন্তু খেলোয়াড়দের কাছে প্রিমিয়ার লিগই এখনো গুরুত্ব পায় বেশি।
অবসর নিতে গিয়ে আশরাফুলও চেয়েছিলেন যাতে করে বড় কোনো দলে খেলে অবসর নিতে পারেন। তার সেই ইচ্ছে পূরণ হয়েছে শৈশবের প্রিয় দল মোহামেডানে নাম লেখাতে পেরে। নিজের সেরা সময়ে ২০০৯ সালে তিনি মোহামেডানে খেলেছিলেন। সে বছর মোহামেডান হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন। এরপর আর চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি।
আশরাফুল বলেন, ‘আমার ইচ্ছে ছিল বড় দলে খেলে অবসর নিতে। আমি ছোটবেলা থেকেই এই দলটার সমর্থক। ২০০৯ সালে শেষবার আমি যখন মোহামেডানে খেলেছিলাম, তখন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এবার আমি চেষ্টা করব আমার শেষ মৌসুমে ভালোভাবে খেলে মোহামেডানকে আবার চ্যাম্পিয়ন করাতে।’
জাতীয় দলের হয়ে আশরাফুল ৬১ টেস্ট খেলে ২৭৩৭ রান, ওয়ানডেতে ১৭৭ ম্যাচে ৩৭৬৮ রান ও টি-টোয়েন্টি ২৩ ম্যাচ খেলে ৪৫০ রান করেন তিনি। এ ছাড়া প্রথম শ্রেণির ১৮৩টি ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৯১৯২ রান। ২১টি সেঞ্চুরির সঙ্গে হাফ সেঞ্চুরি আছে ৪২টি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ২৭৯ ম্যাচ খেলে রান করেছেন ৬১৫৮। ১১টি সেঞ্চুরির সঙ্গে হাফ সেঞ্চুরির আছে ৩১টি।
এমপি/এমএমএ/