বয়সটা খুব বেশি নয়। সামনের মাসে ৩০ বছরে পা ফেলবেন রাফায়েল ভারানে। জাতীয় দলে তার চেয়ে বেশি বয়সী সতীর্থ আছে। চাইলে তিনিও দখলে রাখতে পারতেন দেশের জার্সি। কিন্তু না, আচমকাই ফ্রান্সকে বিদায় বলে দিলেন বিশ্বকাপজয়ী এই ডিফেন্ডার।
রাশিয়ায় বিশ্বকাপ জেতা ফ্রান্স দলে অবিচ্ছিন্ন এক অংশ ছিলেন ভারানে। গত বছরের ডিসেম্বরে কাতারে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে হেরে যাওয়া বিশ্বকাপের ফাইনালেও ফ্রান্সের দলে ছিলেন তিনি। ৯৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা এই ডিফেন্ডার দিদিয়ের দেশমের স্কোয়াডে অন্যতম অভিজ্ঞ একজন সদস্য ছিলেন।
গত মাসে যখন গোলরক্ষক হুগো লরিস আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান, তখন ভারানেকেই নেতৃত্বভার নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। অথচ তিনি হাঁটলেন লরিসের দেখানো পথে। সবাইকে চমকে দিলেন আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে।
২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ভারানের। তিনি বর্তমানে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড শিবিরে আছেন। পেশাদার ফুটবলে মনোযোগ দিতেই জাতীয় দলের জার্সি তুলে রেখেছেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে অবসর বার্তায় এমনটাই জানিয়েছেন রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই ডিফেন্ডার।
ওই পোস্টে ভারানে লিখেছেন, ‘এক দশক ধরে আমাদের মহান দেশের প্রতিনিধিত্ব করা আমার জীবনের অন্যতম সেরা সম্মান। যতবার আমি এই বিশেষ নীল জার্সি পরেছি, আমি অনেক গর্ব অনুভব করেছি। আমি বেশ কয়েক মাস ধরে এটি নিয়ে ভাবছি এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেওয়ার এটাই সঠিক সময়।’
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস (ইনসটে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা)। ছবি: সংগৃহীত
মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
স্কাই নিউজ বুধবার (৫ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে। এতে ড. ইউনূস বলেন, শেখ হাসিনার বিচার হবে। তিনি বাংলাদেশে উপস্থিত থাকুন বা অনুপস্থিত থাকুন না কেন তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হবেন।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার সরকারে থাকাকালীন জোরপূর্বক গুমের ব্যবস্থা তত্ত্বাবধান করেছিলেন। সেই সাথে গত বছরের জুলাই ও আগস্টে বিক্ষোভকারীদের গণহত্যার ঘটনাও তার তত্ত্বাবধানে হয়েছে।
স্কাই নিউজের সাথে কথা বলতে গিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিচার হবে। কেবল তারই (শেখ হাসিনা) নয়, বরং তার সাথে যুক্ত সবার, তার পরিবারের সদস্য, তার মক্কেল বা সহযোগীদেরও বিচার হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে বর্তমানে ভারতে পালিয়ে আছেন শেখ হাসিনা। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গোপন আটক কেন্দ্রের একটি নেটওয়ার্ক তত্ত্বাবধান করেছিলেন। যেখানে রাজনৈতিক বিরোধীদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধরে আনা হতো, নির্যাতন করা হতো এবং কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছিল। এ সবই হাসিনা করতেন ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ এর ব্যানারে।
বাংলাদেশ হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ হাসিনার গ্রেপ্তারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছে কিন্তু নয়াদিল্লি থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাননি।
তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশে শারীরিকভাবে উপস্থিত হয়ে অথবা ভারতে অনুপস্থিতিতে আদালতের মুখোমুখি হবেন।
অধ্যাপক ইউনূস সম্প্রতি আয়নাঘর নামে পরিচিত কুখ্যাত গোপন কারাগারগুলোর মধ্যে একটি পরিদর্শন করেছেন। দরিদ্রদের ব্যাংকার হিসেবে পরিচিত এবং বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অর্থনীতির এই অধ্যাপক বলেন, তিনি যা দেখেছেন তাতে তিনি হতবাক। ‘এটি সবচেয়ে কুৎসিত জিনিস; যা আপনি দেখতে পাচ্ছেন। অনুভব করতে পারছেন, অথবা আপনি পর্যবেক্ষণ করতে পারছেন।’
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি তার নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশকে ব্যবহার করে শত শত অ্যাক্টিভিস্টকে অপহরণ, নির্যাতন এবং হত্যা তদারকি করছেন।
যদিও হাসিনা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, তাকে রাজনৈতিকভাবে নির্যাতিত করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা ৮০০টিরও বেশি গোপন কারাগারের নেটওয়ার্ক তদারকির অভিযোগে অভিযুক্ত। যাদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছেন।অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অপরাধের সাথে জড়িতদের সংখ্যা এবং পরিসর নিয়ে কাজ করতে সময় লাগছে।
ড. ইউনূস বলেন, সবাই এতে জড়িত ছিল। পুরো সরকার (হাসিনার সরকার) এতে জড়িত ছিল। তাই আপনি পার্থক্য করতে পারবেন না কে সত্যিই এবং উৎসাহের সাথে এটি করছিল। কে আদেশে এটি করছিল এবং কে এসব সমর্থন করত না কিন্তু এই ধরণের কাজগুলো বাধ্য হয়ে করেছিল।
তিনি আরও বলেন, কিছু লোককে শাস্তি দেওয়া হবে। কিছু লোক তদন্তাধীন থাকবে। কিছু লোককে শনাক্ত করা যাবে না।
পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খান জেলার একটি সেনানিবাসে জোড়া আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন হামলাকারীসহ মোট ২১ জন।
নিহতদের মধ্যে হামলাকারী ৬ জন, বাকিরা বেসামরিক এবং হামলার শিকার। এই বেসামরিকদের মধ্যে ৪ জন শিশু ও ২ জন নারী রয়েছেন। যে ৬ হামলাকারী নিহত হয়েছেন, তাদেরকেও শনাক্ত করা হয়েছে। নিহত এই ৬ জন পাকিস্তানের নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল তেহরিক ই তালিবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সদস্য ছিলেন।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার (৪ মার্চ) পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খান জেলার একটি সেনানিবাসে জোড়া এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রোজা ভাঙার সময় সেনা নিবাসের ওই এলাকায় দু’টি বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি ঢুকে পড়ে। তার পরপরই ঘটে বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের ধাক্কায় নিকটবর্তী একটি মসজিদ এবং একটি বাড়ির ছাদ ভেঙে পড়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
হামলায় হতাহতদের নিকটবর্তী ডিস্ট্রিক্ট হেডকোয়ার্টার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের একজন মুখপাত্র পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে ১৫ জনই বেসামরিক। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৫ জন।
গতকাল সোমবার (৪ মার্চ) খাইবার পাখতুনখোয়ার একটি মাদ্রাসায় আত্মঘাতী বোমা হামলায় ঘটেছিল। এতে স্থানীয় শীর্ষ তালেবান নেতাসহ নিহত হয়েছিলেন ৬ জন।
বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলাম) ও তার পরিবারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ১১ ব্যক্তির বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুদক জানায়, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে ১০০ কোটি ডলার পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানকালে জানা যায় যে কোনো সময় দেশ হতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পালিয়ে বিদেশে অবস্থান নিবেন। তাদের বিদেশ গমন রহিত করা আবশ্যক।
এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি এস আলম পরিবারের নামে থাকা ৩৬৮ কোটি ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকার ১৭৫ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া গত ১৪ জানুয়ারি তাদের ২০০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন একই আদালত। এরপর ১৬ জানুয়ারি এস আলম পরিবারের ২৪টি কোম্পানিতে ৩২ কোটি ১০ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৮টি শেয়ার জব্দ করা হয়। যার মূল্য ৩ হাজার ৫৬৩ কোটি ৮৪ লাখ ২১ হাজার ৩০০ টাকা।