বিপিএল ঘিরে সিলেটে ক্রিকেটপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস
সিলেটে বিপিএলের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন ছিল একই রকম। তবে তৃতীয় দিনের অবস্থা আরও বর্ণনাতীত। ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত দীর্ঘ লাইন। পায়ে হেঁটে, সিএনজি-অটোরিকশায় যে যেভাবে পারছেন গন্তব্যে পৌঁছার চেষ্টায়। তাদের মধ্যে কেবল কিশোর-তরুণ নয়, রয়েছে কিশোরী-তরুণী ও বয়স্করা। স্টেডিয়ামমুখী এমন স্রোত সিলেটে নতুন নয়। সিলেটে ক্রিকেটপ্রেমীদের উচ্ছ্বাস, আনন্দ অনেক আগে থেকেই। বিসিবি কর্মকর্তাদেরও বিস্ময়ভরা চোখ জনস্রোতের দিকে।
এত উপস্থিতি দেখে ঢাকা থেকে আসা বিসিবির এক কর্মকর্তা অকপটে স্বীকার করলেন, বিপিএলের পুরোটা সিলেটেই হওয়া উচিত। কেন এখানে সবচেয়ে কম ম্যাচ? এমনকি আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোর মূল ভেন্যু হওয়া উচিত এই সিলেট। কারণ এখানে এখন সব সুবিধা আছে। বিমানবন্দর, ভেন্যুর অবস্থান, পাঁচ তারকা হোটেল, রিসোর্ট সবই আছে। রয়েছে আন্তর্জাতিক মানের আরেকটি মাঠ। প্রায় ৫ মিনিটের আলাপে তিনি তার নাম প্রকাশে অপারগতার কথা জানান।
সিলেট আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনের সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। ২০১৪ সালের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০১৮ সালে ১১৬তম টেস্ট ভেন্যু হিসেবে মর্যাদা লাভের পর বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে একটি টেস্টসহ অনেক ম্যাচ এখানে সফলভাবে হয়েছে। বিভিন্ন সময় সিলেটের মাঠ, আতিথেয়তায় মুগ্ধতার কথা প্রকাশ করেছেন দেশি-বিদেশি খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা।
তবুও সিলেটকে নিয়ে অবহেলার শেষ নেই বিসিবির। ২০২০ সালের মার্চের পর এই ভেন্যুতে হয়নি আন্তর্জাতিক কোনো ম্যাচ। ভারত-পাকিস্তানসহ বড় দলগুলোর খেলা এখানে নেই বললেই চলে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে আসতে যাওয়া ইংল্যান্ড দলেরও এখানে কোনো ম্যাচ নেই।
ইংল্যান্ড নাকি এখানে খেলতে রাজি হয়নি, এমন খবর রটেছে সর্বত্র। বিসিবি পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, আমি মনে করি, ইংল্যান্ডের সঙ্গে সিলেটের যে সম্পর্কটা এবং ইংল্যান্ড দলে যারা খেলেন, তাদের কিন্তু সিলেটে খেলার ব্যাপারে আগ্রহ আছে। এখানে যে সুযোগ-সুবিধা আছে সেটা তো অন্য জায়গায় এভাবে নেই। তারা আসতে চাইবে না, এটা আমি জানি না আসলে।
ক্রিকেটারদের আবাসন নিয়ে সমস্যা কেটে গেলেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ না পাওয়ায় নাদেলের কণ্ঠে শোনা যায় তির্যক মন্তব্য, এখন হয়তো আমাদের সেভেন স্টার খুঁজতে হবে। ফাইভ স্টার তো হয়ে গেছে। বিসিবির পরিচালক হয়েও অসহায়ত্ব ফুটে উঠল নাদেলের কণ্ঠে। তিনি বিসিবির কাছে অনুরোধ করলেন সিলেটে আরও বেশি ম্যাচ দিতে।
এমন হতাশামাখা অবস্থার মাঝে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) খেলা দেখতে সিলেট আসেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তার আগমন ঘিরে নতুন করে সাজে স্টেডিয়াম। মূল ফটকসহ বেশ কিছু জায়গায় তার ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড ঝুলতে দেখা যায়। গ্যালারিতে যখন নেই তিল ধারণের জায়গা, সেখানে ভিআইপি বক্সের শূন্যতাও ঘুচেছে কাল। ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, তার আগমনে হয়তো আন্তর্জাতিক ম্যাচের শূন্যতাও এবার ঘুচবে সিলেটের।
এসজি