কী অবাক বিষয় মাশরাফি সবার উপরে!

বিপিএলে এক একটি দল চার থেকে ছয়টি করে ম্যাচ খেলেছে। এখন পর্যন্ত ৯ উইকেট নিয়ে সবার উপরে মাশরাফি বিন মর্তুজা। বিষয়টি অবাক করার মতোই। শুধু অবাক বললেও ভুল হবে। অত্যাশ্চর্যও বলা যায়। কারণ অগণিত। প্রথমতো তিনি ইনুজরির সঙ্গে লড়াই করে টিকে আছেন। বল করেন এখনো অনেকটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। আবার নেই নিয়মিত মাঠে।
বিপিএলে সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে মাঠে নামার আগে সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেছিলেন প্রায় ১০ মাস আগে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেটে। তারিখ ছিল ২৮ এপ্রিল। লিজেন্ড অব রূপগঞ্জের হয়ে প্রতিপক্ষ ছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে। মাশরাফির দল জিতেছিল ৮ উইকেটে। মাশরাফি ৮ ওভার বোলিং করে ২১ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। সেই মাশরাফি ১০ মাস পর বিপিএলের আগে কয়েকদিন মাত্র বোলিং করে জাতীয় দল, বিদেশি ও তরুণ বোলারদের পেছনে ফেলে অবস্থান করছেন চূড়ায়। ৬ ম্যাচ খেলে উইকেট নিয়েছেন ৯টি। সেরা বোলিং ছিল ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ৪৮ রানে ৩টি।
এখন পর্যন্ত মাশরাফি যে ৬টি ম্যাচ খেলেছেন, একটি বাদে তার প্রতিটিতেই তিনি উইকেট পেয়েছেন। ঢাকা ডমিনেটরসের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচে তার উইকেট না পাওয়ার কারণ ছিল মাত্র ১ ওভার বোলিং করা।
মাশরাফি ৬ ম্যাচে বোলিং করেছেন ২০ ওভার। ১৩৫ রান দিয়ে নিয়েছেন এই ৯ উইকেট। গড় ১৫.০০। জাতীয় দলের কোনো বোলার নেই তার আশপাশে। ৭টি করে উইকেট নিয়েছেন ৬ জন বোলার। সেখানে নেই জাতীয় দলের কেউ। সেই ৭ জন হলেন- রংপুর রাইডার্সের রবিউল হক, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তানভীর ইসলাম, ঢাকা ডমিনেটরসের আল আমিন হোসেন, সিলেট স্ট্রাইকার্সের পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিম, খুলনা টাইগার্সের ওয়াহাব রিয়াজ।
মাশরাফি যেমন সবার উপরে আছেন, তেমনি নিজের দল সিলেট স্টাইকার্সকেও এখন পর্যন্ত রেখেছেন সবার উপরে। নতুন ফ্রাঞ্চাইজি হিসেবে টানা পাঁচ ম্যাচ জিতে বিশ্বরেকর্ড গড়া সিলেট যদিও ষষ্ঠ ম্যাচে গিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কাছে পেয়েছে প্রথম হারের স্বাদ। কিন্তু তারপরও ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে দলটি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফরচুন বরিশালের পয়েন্ট ৬। তারা ম্যাচ খেলেছে ৪টি। বরিশালের একমাত্র হার ছিল সিলেটের কাছে আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচ।
সিলেটের হারে এবারের আসরে আর কোনো দল নেই অপরাজিত। তেমনি জয়হীনও নেই কোনো দল। জয়হীন থাকা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও খুলনা টাইগার্স পেয়েছে জয়ের দেখা। কুমিল্লা ৬ উইকেটে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ও খুলনা ৯ উইকেটে রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে পেয়েছিল প্রথম জয়ের স্বাদ।
মাশরাফি কিংবা সিলেট শুধু শীর্ষে নয়, ব্যাটিং পজিশনেও দলের তৌহিদ হৃদয় নিজের শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছেন। চট্টগ্রামে ৪ দিনে ৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিতে হলেও কোনো ব্যাটসম্যানই তাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি। ৪ ম্যাচে তৌহিদের রান ১৯৫। তবে তাকে ছুঁই ছুঁই করছেন একই দলের নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬ ম্যাচে তার রান ১৯২। ১৬৩ রান করে তিনে আছেন চট্টগ্রামের পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ওসমান খান। গত দুই ম্যাচে ভালো খেলে পাঁচে উঠে এসেছেন কুমিল্লার লিটন কুমার দাস। তার রান ১৬০। চারে আছেন চলতি আসরে প্রথম সেঞ্চুরি করা চট্টগ্রামের আজম খান।
চট্টগ্রামে আজ কোনো খেলা নেই। আগামীকাল (১৯ জানুয়ারি) থেকে আবার শুরু হবে খেলা। এরপর দুই দিন খেলা হওয়ার পর ইতি ঘটবে চট্টগ্রাম পর্বের। তারপর বিপিএলের ট্রেন ফিরে আসবে আবার রাজধানীতে। আগামীকাল প্রথম ম্যাচে কুমিল্লা ও ঢাকা এবং দ্বিতীয় ম্যাচে বরিশাল ও রংপুর মুখোমুখি হবে।
এমপি/এসজি
