দেশে ফিরে আসল উৎসব করতে চান সাবিনা
সাফের নতুন রানি হওয়ার পর বাংলার সূর্যকন্যারা বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকায় ফিরবেন। তাদের এই শিরোপা জেতার মাধ্যমে নারী-পুরুষ মিলিয়ে অবসান হয়েছে দীর্ঘ ১৯ বছরের শিরোপা না জেতার আক্ষেপ।
কাঠমান্ডুতে উৎসব শেষ হয়েছে। এবার দেশে এসে উৎসব করার পালা। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক সাবিন খাতুন বলেন, ‘উৎসবতো আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন, মেয়েরা মাঠে কেমন উল্লাস করেছে। আমার মনে হয় ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরে আসল উদযাপনটা করব’।
মেয়েদের সাফের আসর মানেই ভারত-নেপাল ফাইনাল। মাঝে ২০১৬ সালে একবার বাংলাদেশ ভাগ বসিয়েছিল নেপালকে হটিয়ে। কিন্তু প্রতিবারই মসনদে বসেছ ভারত। এবারও শিরোপা জেতার স্বপ্ন থাকলেও ভারত-নেপালকে টপকে তা জয় করা ছিল হিমালয় জয় করার মতোই কঠিন। কিন্তু গ্রুপ পর্বে ভারতকে ৩-০ গোলে হারানোর পরই সেই স্বপ্ন মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। ক্রমেই নাগালের মাঝে আসতে শুরু করে।
সেমি ফাইনালে ভুটানকে ৮-০ গোলে উড়িয়ে দেওয়ার পর সেই বিশ্বাসে আরও জোর লাগে। ফাইনালে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল থাকলেও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন সাবিনারা খুব বেশি। তাইতো ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে নেপাল প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে খেলে একটি গোল পরিশোধ করার পরও দলের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেনি বলে জানিয়েছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন।
তিনি বলেন, ‘এক গোল যখন আমরা খেয়েছি, তখন মনে হয়েছে লড়াই হবে। মনে হচ্ছিল যেকোনো কিছু ঘটতেই পারে। কোচও আগেই বলে দিয়েছিলেন, ম্যাচে এরকম ঘটনা ঘটেই। এটাই স্বাভাবিক ব্যাপার, কিন্তু ম্যাচ থেকে হারানো যাবে না। যখন নব্বই মিনিট শেষ হয়, ৪ মিনিট অতিরিক্ত সময় দিয়েছে, তখন মনে হয়েছে, না এবার, হয়েই যাচ্ছে, শিরোপা আমাদেরই।’
এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। আমি যেহেতু দীর্ঘদিন থেকে ফুটবল খেলছি। আমি এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চেয়েছিলাম। ডে বাই ডে আমি ম্যাচে সেটাই প্রয়োগ করার চেষ্টা করি। নেপাল ও ভারত দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শীর্ষ দল। আমাদের লক্ষ্য ছিল, বাংলাদেশের মেয়েরা যে ফুটবলে উন্নতি করছে, সেটা এই টুর্নামেন্টে প্রমাণ করব।’
আসরের সর্বোচ্চ গোলদাতা ও সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতা সাবিনা মনে করেন এটি তার ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্ত। প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সাবিনা বলেন, ‘নিজর চেষ্টা এবং পরিশ্রম মাঠে দিয়ে গেছি, তার পুরস্কার অবশেষে পেয়েছি। নিঃসন্দেহে এই টুর্নামেন্ট আমার ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্ত।’
সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর এখন নিজেদের সীমানা আরও প্রসারিত করতে চান। বয়সভিত্তিক ফুটবলে বাংলাদেশ এশিয়া পর্যায়ে খেলেছে। সাবিনা বলেন, ‘এখন আমরা দক্ষিণ এশিয়ায় ট্রফি জিতেছি। এরপর স্বপ্নটা যখন আরও বড় হবে, তখন নিজেরও ভালো করার পরিকল্পনা থাকতে হবে।’
এমপি/আরএ/