নিউ জিল্যান্ড পেসারদের চ্যালেঞ্জ নিতে চান মুমিনুল
ছবি: স্পোর্ট নিউ জিল্যান্ড
বাংলাদেশের জন্য নিউ জিল্যান্ড এক বিভীষিকার নাম। ২০০০ সালে টেস্ট মযার্দা পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত যতবার সফর করেছে, সেখানে হারই নিত্যসঙ্গী। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে নেই কোনো জয়। এই ঘটনা একমাত্র নিউ জিল্যান্ডের ক্ষেত্রেই ঘটেছে। অন্য যে কোনো দেশের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটে অন্তত একটি জয় আছে বাংলাদেশের। যখনই বাংলাদেশ দল নিউ জিল্যান্ড সফরে গিয়েছে, তখনই আশায় বুক বেঁধেছে। আর প্রতিবারই হতাশ হতে হয়েছে। অতীতের বিবর্ণ ইতিহাস আরও বিবর্ণ হয়েছে।
এবার আবারও বাংলাদেশ দল নিউ জিল্যান্ড সফরে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হিসেবে দুই টেস্ট খেলবে সেখানে। আগামীকাল বাংলাদেশ সময় ভোর চারটায় মাউন্ট মঙ্গানুয়ে শুরু হবে দুই টেস্টের সিরিজের প্রথম টেস্ট। মুখের কথনে যথারীতি সেই আশার আলোর জ্বালানোর প্রতিশ্রুতি।
দলপতি মুমিনুলর কথন, ‘নিউজিল্যান্ডে অবশ্যই অনেক বেশি চ্যালেঞ্জ থাকবে। আগে থেকেই যদি নেতিবাচক চিন্তা করেন তাহলে ভালো ফলাফল আসবে না। যত চ্যালেঞ্জ থাকুক, আশাবাদী থাকা গুরুত্বপূর্ণ। যতগুলো টেস্ট জিতেছি, তা দলগত পারফরম্যান্সের কারণে। সেদিকেই মনোযোগ দিতে হবে।’
এখন দেখার পালা অতীত ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটে, না কি বিবর্ণ ইতিহাসের উপর জমে থাকা ধুলো কিছুটা পরিষ্কার হবে? মুমিনুলের ভাষ্য, ‘এবার অনুশীলন বেশ ভালো ছিল। আগের রেকর্ড অতীত হয়ে গেছে। এটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করে কোনো লাভ হবে না। ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তাভাবনা করাই ভালো। সবসময় আশাব্যাঞ্জক ও ইতিবাচক চিন্তা করা উচিৎ।’
পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে বুক কেঁপে উঠবে যে কারও। নিউ জিল্যান্ডে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত তিন ফরম্যাটে ৩২ ম্যাচ খেলে জয় পায়নি একটিতেও। কিন্তু এবার বাংলাদেশ দলটি অনভিজ্ঞ। পঞ্চপাণ্ডবের আছেন শুধুই মুশফিকুর রহিম। মাশরাফি অবশ্য অনেক আগেই থেকেই টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলেছেন। বাকি তিনজনের একজন মাহমুদউল্লাহও টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিয়েছেন। তামিম ইকবাল ইনজুরির কারণে নেই। আর সাকিব নেই ব্যক্তিগত কারণে। অভিজ্ঞ বলতে মুশফিকুর রহিমের সাথে আছেন শুধুই দলপতি মুমিনুল। বাকিরা নবীনের মিছিল।
বাংলাদেশ যেখানে নবীনের মিছিলে, সেখানে নিউ জিল্যান্ড অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। অভিজ্ঞতার সঙ্গে কিছু তারুণ্যের সংমিশ্রণে। এর ফলে স্বাগতিকরা হয়ে উঠেছে অপ্রতিরোধ্য। নিউ জিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশকে বেশি ভুগিয়েছেন তাদের বোলাররা। এবং তা অবশ্যই পেস ডিপার্টমেন্ট। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।
অভিজ্ঞ তিন পেসার টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট আর নেইল ওয়েগনারের সঙ্গে তরুণ কাইল জেমিসন। তাদের নামের পাশে উইকেট সংখ্যা দেখলে চোখ কপালে উঠে যাবে। সাউদি ৮১ টেস্টে ৩২২ উইকেট, ট্রেন্ট বোল্ট ৭৩ টেস্টে ২৯২ উইকেট, নেইল ওয়েগনার ৫৪ টেস্টে ২২৯ উইকেট। এমনকি হাল জমানার কাইল জেমিসন ১০ টেস্ট খেলে ঝুলিতে ৫২ উইকেট জমা করে ফেলেছেন। কাকে বাদ দিয়ে কাকে সামাল দেবেন মুমিনুল এন্ড কোম্পানি!
সাউদি-বোল্টের সিম আর সুইং, নাকি ওয়েগনার-জেমিসনের গতি আর বাউন্স। কে জানে স্পিনার রাচি রবিন্দর হাত ঘুরানোর সুযোগ পান কিনা কে জানে? মুমিনুল-মুশফিকের অভিজ্ঞতার সঙ্গে তরুণ সাদমান, মাহমুদুল, নাজমুল, লিটন দাসরা কিভাবে সামাল দেবেন তার জন্য ঘুমকাতর চোখে আগামীকাল ভোর ৪টা হতে টিভি সেটের সামনে বসে পড়তে হবে।
এখানেও মুমিনুল কথনে জয়ী হওয়ার চেষ্টা, ‘ওদের পেস বোলিংই সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং হবে। পেসারদের চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সামর্থ্য আমাদের আছে।’
এমপি/এসএ/