চার হাফ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩০৩/২
আগের দিনই তামিম ইকবাল বলছিলেন। টস জিততে পারলে খুশি, না জিততে পারলে সমস্যা নেই। প্রথম এক থেকে দেড় ঘন্টা যা একটু সমস্যা হতে পারে। টস তিনি জিততে পারেননি। তাই ব্যাট করতে নামতে হয়েছিল। কিন্তু তাতে তার পূর্বাভাস অনুযায়ী ব্যাটিংয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। নিজে করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। আউট হয়েছেন ৬২ রান। সঙ্গে হাফ সেঞ্চুরি আছে আরো তিনটি। লিটন দাস ৮১ রান করে মাসলপুল হওয়াতে রিটার্য়াড করেন। তিন বছর পর ওয়ানডে ক্রিকেটে ফিরে আসে এনামুল হক বিজয় করেন ৭৩ রান। উইন্ডিজ এমনকি পাঁচে নামা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও ২০ রানে অপরাজিত থাকেন। সফরের পর আবার ফিরে এসে মুশফিকুর রহিমও হাফ সেঞ্চুরি হাঁকান।অপরাজিত থাকেন ৫২ রানে। প্রথম চার ব্যাটসম্যানের হাফ সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ সংগ্রহ করেছে দুই উইকেটে ৩০৩ রান। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটি ছিল বাংলাদেশের ষষ্ঠবার তিনশোর্ধ রানের ইনিংস। আগের ইনিংসগুলো ছিল ৩২২/৩, ৩২২/৮, ৩২১/৬, ৩২০/৮, ৩১৩/৬।
রান তিনশোর্ধ। উইকেট পড়েছে মাত্র দুইটি। অথচ সেখানে নেই কোনো সেঞ্চ মুশফিক ছিলেন অপরাজিত। আরেকজনের লিটন দাসের মাসলপুল হওয়াতে পরে ব্যাট করতে পারেননি। এই লিটন দাসেরই সেঞ্চুরি করার সম্ভাবনা ছিল। সর্বোচ্চ ইনিংসও খেলেন তিনি। কিন্তু বাদ সাধে মাসুলপুল। তবে সেঞ্চুরি না থাকলেও টস হারের পর ব্যাট করতে নেমে এ রকম তিনশোর্ধ রানের ইনিংস খেলার মাঝেই ফুটে উঠে ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ যে সুসময় পার করছে। এখন এই রানকে অতিক্রম করতে না দেয়ার কাজটি করতে হবে ব্যোলারদের। তবেই সেখানে আসবে পূর্নতা।
টস হারের পর ব্যাট করার জন্য আমন্ত্রিত হওয়াতে বাংলাদেশের দুই ওপেনারের শুরুটা ছিল সতর্ক। যে কারণ ব্যাটিং পাওয়ার প্লের প্রথম ১০ ওভারে রান আসে বিনা উইকেটে ৪০। তামিমের হাফ সেঞ্চুরিও আসে ৭৯ বলে সাত বাউন্ডারিতে। এটি ছিল তার ৫৪তম হাফ সেঞ্চরি। ম্যাচের সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রানের গতিও বাড়তে থাকে। ৬২ রান করে তামিম যখণ আউট হন তখন দলের রান ওভার প্রতি পাঁচের কাছাকাছি ২৫.৪ ওভারে ১১৯। আউট হওয়ার আগে তামিম বাংলাদেশের প্রথম ও বিশ্বের ৩৩তম ব্যাটসম্যান হিসেবে আট হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। লিটন দাসও শুরুতে একটু সাবধানী ছিলেন। কিন্তু হাফ সেঞ্চুরি পুর্ন করার পরই তিনি হাত খুলে খেলতে থাকেন। ওয়েলিংটন মাসাকাদাজর যে ওভারে তিনি এক রান ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছিলেন ৭৫ বলে, সেখানে সেই ওভারেই মারেন পরপর তিন বাউন্ডারি। মাসলপুল হয়ে মাঠ ছাড়ার আগে তিনি আরো যে ৩১ রান যোগ করেছিলেন, সেখানে বল খেলেছিলেন মাত্র ১৪টি। এ সময় তিনি পাঁচটি চার আর একটি ছক্কা মারেন। যেভাবে খেলছিলেন তাতে করে ক্যারিয়ারের ষষ্ট সেঞ্চুরি পাওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু ৮১ রানে তাকে থেমে যেতে হয় মাসলপুলের কারণে।
তিন বছর প্রিয় ওয়ানডে ফরম্যাটে ফিরতে পেরে এনামুল হক বিজয়ও তার প্রতিদান দেন। ঘরোয়া ওয়ানডে আসরে বিশ্বের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে হাজার রান করা এনামুলও শুরুতে ছিলেন সতর্ক। তবে তার এই সাবধানতা খুব বেশি সময় ছিল না। দ্রুতই হাত খুলে খেলতে থাকেন। যে কারণে তার হাফ সেঞ্চুরি এসেছে ৪৭ বলে চারটি চার ও দুইটি ছক্কায়। এটি ছিল তার পঞ্চম হাফ সেঞ্চরি। কিন্তু ৬২ বলে ৭২ রান করে তাকে থেমে যেতে হয় নিয়াউচির বলে বোল্ড হলে। তার ইনিংসে ছিল তিন ছক্কা আর ছয়টি চার।
পবিত্র হজ করতে যাওয়ার কারণে উইন্ডিজ সফর থেকে ছুটি নেয়া মুশফিকুর রহিম ফিরে এসে নিজেকে মেলে ধরেন ৪৯ বলে পাঁচ চারে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস খেলে। তার ৪৩তম হাফ সেঞ্চুরি আসে ৪৮ বলে পাঁচ চারে।
শুরুতে সতর্কতা, পরে হাত খুলে খেলা-এই কারণে শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশের রান আসে ৯০। শেষ পাঁচ ওভারে আসে ৩৯। বাংলাদেশের রানকে আটকে রাখতে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক রেজিত চাকাভা আট জন বোলার ব্যবহার করেও ফায়দা নিতে পারেননি।
এমপি/এএস