গল টেস্ট জিতে ইতিহাস গড়ল পাকিস্তান
ইতিহাস সৃষ্টি করে গল টেস্ট নিজেদের করে নিয়েছে পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কার ছুড়ে দেয়া ৩৪১ রান অতিক্রম করার চ্যালেঞ্জ ছিল তাদের। এই রান অতিক্রম করতে হলে গল টেস্টে দুইটি নতুন ইসিহাস লিখতে হতো পাকিস্তানকে।
একটি গলেতে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান করতে হবে, অপরটি সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতা। দুইটিই পাকিস্তান নিজেদের করে নিয়েছে ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিকের হার না মানা ১৬০ রানের সুবাদে । ম্যাচ জিতেছে ৪ উইকেটে।
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংসে ২২২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৩৭ রান করেছিল। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ ছিল ২১৮। দ্বিতীয় ইনিংসে তারা করে ৬ উইকেটে ৩৪৪ রান। ম্যাচ সেরা হয়েছেন আব্দুল্লাহ শফিক। দুই টেস্টের সিরিজে পাকিস্তান এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে। দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে গলেতেই ২৪ জুলাই।
চতুর্থ ইনিংসে চারশরও বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে টেস্ট ক্রিকেটে। এরকম নজির মাত্র চারটি। তিনশোর্ধ রান অতিক্রম করে জয়ের নজিরও খুব একটা নেই। শ্রীলঙ্কা যখন ৩৪১ রানে লিড নেয়, তখন পাল্লা ভারি তাদের দিকেই ছিল। কিন্তু পাছে আবার ভয় ছিল প্রতিপক্ষ পাকিস্তান হওয়াতে। কারণ ২০১৫ সালে এই তাদের বিপক্ষেই পাকিস্তান ৩৮২ রান করে ম্যাচ জিতেছিল ২০১৫ সালে পাল্লেকেলেতে। এবারও তার ব্যতীক্রম হয়নি। এই ম্যাচ যে পাকিস্তান জিততে চলেছে তা চতুর্থ দিন শেষেই তাদের পাল্লা ভারি করে তুলেছিল। পাকিস্তান চতুর্থ দিন শেষ করেছিল ৩ উইকেটে ২২২ রান করে।
জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল আরও ১২০ রানের। হাতে সাত উইকেটে। উইকেটে ওপেনার আব্দুল্লাহ শফিক ১১২ ও মোহাম্মদ রিজওয়ান ৭ রানে অপরাজিত। এই দুইজনই দলকে অনেক দূর নিয়ে যান। জুটিতে তারা যো করেন ৭১ রান। পঞ্চম দিন আসে ৫৪ রান। রিজওয়ান ৪০ রান করে প্রবাথ জয়াসুরিয়ার তৃতীয় শিকার হন। তিনি আউট হওয়ার পর লাঞ্চর আগে-পরে ৫ রানের ব্যবধানে প্রথমে আগা সালমান ও পরে হাসান আলী আউট হলে পাকিস্তান কিছুটা চাপে পড়ে যায়। আগা সালমানকে প্রবাথ জুয়াসুরিয়া আউট করে চতুর্থ শিকার নেয়ার পাশাপাশি টানা চতুর্থ ইনিংসেও ৫ উইকেট নেয়ার সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেন। হাসান আলীকে আউট করেন ধনাঞ্জায়া ডি সিলভা।
এ সময় লঙ্কানরাও নতুন করে আশা তৈরি করে। পাকিস্তানের জয়ের জন্য তখনো প্রয়োজন ৩৯ রানের। আব্দুল্লাহ শফিক ছাড়া বাকি সবাই লোয়ার অর্ডার। আস্থা রাখা কঠিনই। কিন্তু মোহাম্মদ নেওয়াজ এসে জুটি বাধার পর ম্যাচের চিত্রনাট্যে আর কোনো নাটকীয়তা তৈরি করতে দেননি আব্দুল্লাহজ শফিক। অবশ্য জয় থেকে যখন ১১ রান দূরে, তখন বৃষ্টি এসে একটা বাধা সৃষ্টি করেছিল। তবে তা ক্ষনিকের জন্য। আবার খেলা শুরু হলে ১৮ বলে কাজ সেরে নেন তারা। জয় সূচক রান আসে আব্দুল্লাহ শফিকের ব্যাট থেকে বাউন্ডারি মাধ্যমে।
ম্যাচ সেরা আব্দুল্রাহ শফিক ৫২৪ মিনিট ক্রিজে থেকে ৪০৮ বল খেলে ১৬০ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ইনিংসে ছিল সাতটি চার ও একটি ছক্কা। মোহাম্মদ নেওয়াজ দারুণ সঙ্গ দিয়ে ৩৪ বলে ১৯ রানে অপরাজিত থাকেন। এই জুটিতে রান আসে অপরাজিত ৪১। বাঁ হাতি স্পিনার প্রবাথ জয়াসুরিয়া ১৩৫ রানে নেন ৪ উইকেট।
এমপি/এমএমএ/