লিডের অপেক্ষায় বাংলাদেশ
তৃতীয় দিনের খেলা শেষে যখন বাংলাদেশ তিন উইকেটে ৩১৮ রান করেছিল তখনও খেলার নিয়ন্ত্রণ কোনও দলের পক্ষে যায়নি। সেটার সম্ভাবনা বেশি ছিল বাংলাদেশের। ম্যাচের ফলাফল আনতে হলে চতুর্থ দিন বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল প্রথমে শ্রীলঙ্কার রান অতিক্রম করে দ্রুত নিজেদের লিড বাড়িয়ে নেওয়া। কিন্তু এখানে বাংলাদেশ খুব একটা সফল হতে পারেনি। প্রথমে বৃষ্টি, পরে নিজেদের ধীরগতির ব্যাটিং। বৃষ্টির কারণে খেলা আধা ঘণ্টা বিলম্বে শুরু হয়। পরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম দ্রুত রান সংগ্রহ করতে পারেননি। ফলে মধ্যাহ্ন বিরতিতেও শ্রীলঙ্কার করা ৩৯৭ রান পাড়ি দিতে পারেননি তারা। এখনও পিছিয়ে আছে ১২ রানে। বাংলাদেশের সংগ্রহ তিন উইকেটে ৩৮৫ রান। এই সেশনে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ২৭ ওভারে ৬৭ রান। লিটন দাস ৮৮ ও মুশফিকুর রহিম ৮৫ রানে অপরাজিত।
মধ্যাহ্ন বিরতির পর দুজনেই সেঞ্চুরি করতে পারলে তা হবে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে দ্বিতীয় ঘটনা। এর আগে ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্টে এক ইনিংসে তিন সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন মুশফিকুর রহিম (২০০), মোহাম্মদ আশরাফুল (১৯০) ও নাসির হোসেন (১০০)। তবে এক টেস্টর দুই ইনিংসে তিন সেঞ্চুরি করেছিলেন হাবিবুল বাশার, মোহাম্মদ রফিক, খালেদ মাসুদ পাইলট। ২০০৪ সালে উইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে হাবিবুল বাশার ১১৩, মোহাম্মদ রফিক ১১১ ও দ্বিতীয় ইনিংসে খালেদ মাসুদ পাইলট ১০৩ রান করেন।
তৃতীয় দিন শেষে শ্রীলঙ্কার রানের চেয়ে বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিল ৭৯ রানে। হাতে সাত উইকেট থাকাতে এই রান পাড়ি দিয়ে নিজেদের সংগ্রহ অনেক দূর নিয়ে যাওয়া সম্ভব। সকালে বৃষ্টি হওয়াতে আধা ঘণ্টা বিলম্বে দিনের খেলা শুরু হওয়ার পর লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম ছিলেন বেশ সাবধানী। কারণ কন্ডিশনের কারণে পিচে পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক। পিচের সেই চরিত্র বুঝতেই দুই ব্যাটসম্যানের সাবধানী পথ চলা। লিটন দাস কিছুটা আক্রমণাত্বক হলেও মুশফিকুর রহিম ছিলেন অতিমাত্রায় সাবধানী। তবে বৃষ্টি হলেও পিচে খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। কিন্তু রান সংগ্রহের গতি ক্রমেই কমতে থাকে। দ্বিতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের রান সংগ্রহ ছিল ওভার প্রতি চারের উপরে। তৃতীয় দিন শেষে তা নেমে আসে তিনে। চতুর্থ দিনের প্রথম শেসনে তা আরো নিচে নেমে এসে দাঁড়িয়েছে ২.৮৭ করে।
লিটন ও মুশফিক জুটিতে ৯৮ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেছিলেন। তা গিয়ে ঠেকেছে ১৬৫ রানে।
প্রথম সেশনে যখন কোনো উইকেট পড়েনি। দুই ব্যাটসনম্যানই আছেন সেঞ্চুরির কাছাকাছি। হয়তো সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে দুজনেই থাকবেন সাবধানী। তবে এর পাশাপাশি দ্রুত রান বাড়িয়ে নেওয়াটা জরুরি, যাতে করে ভালো একটা লিড পাওয়া যায় অথবা ইনিংস ঘোষণা করার মতো লিড থাকে। প্রথম সেশন নরমালি ব্যাটিং করলেও দিনের বাকি দুই সেশনে দ্রুত রান সংগ্রহ করতে হবে, যাতে করে অন্তত লিড ২০০ রানের মতো হতে পারে। বেশি হলে আরো ভালো। তারপর শেষ দিন প্রথম ঘন্টায় দ্রুত আরো কিছু রান করে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে আঘাত হানতে হবে। অংকের হিসেবে বাংলাদেশ তখন হাতে সময় পাবে আড়াই শেসনের মতো।
এসআইএইচ