সুযোগ পেলে কাজে লাগানোর অপেক্ষায় মোসাদ্দেক
প্রস্তুতি ম্যাচের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি সফরকারি দলের জন্য। স্বাগতিক দলের জন্য তেমন একটা গুরুত্ব বহন করে না। তবে মূল দলের যে সব ক্রিকেটার প্রস্তুতি ম্যাচে সুযোগ পান, তাদের জন্য নিজেদের জালাই করে নেয়া একটা প্লাটফর্ম হয়ে উঠে তখন। এ দৃষ্টিকোন থেকে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একমাত্র দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে মূল দলে ছিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার সুযোগ পাওয়াটাও ছিল কাকতলীয়। প্রথমে তিনি ডাক পাননি। পরে নির্বাচকরা তাকে ডেকে নেন। যে কারণে একমাত্র মোসাদ্দেককে রাখা হয়েছিল প্রস্তুতি ম্যাচে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এই অলরাউন্ডার না ব্যাটিং, না বোলিংয় কিছুই করতে পারেননি। এই না পারারা জন্য নিজেকে ‘আনলাকি’ ভাবছেন মোসাদ্দেক। আজ বিএকএসপিতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক। বৃষ্টির ওপর আসলে কারও কোনো হাত নেই। খেলতে পারলে অবশ্যই খুব ভালো হতো। লাল বলে একটা অনুশীলনও হতো। সেক্ষেত্রে অকশ্যই একটু আনলাকি বলবো।’ দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে দুই দিনে খেলা হয়েছে ১৮.২ ওভার। প্রথম দিন ৮.৩ ওভার, দ্বিতীয় দিন ৯.৫ ওভার। শ্রীলঙ্কার করেছিল ১ উইকেটে ৫০ রান।
মোসাদ্দেকের জন্য লাল বরে প্রস্তুতিটা খুবই জরুরি ছিল। কারণ লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তিনি সম্প্রতি ব্যাটে-বলে দারুণ ছন্দে ছিলেন। কিন্তু লঙ্গার ভার্সন ম্যাচে তিনি সেভাবে নিজকে মেলে ধরতে পারেননি। পরিসংখ্যান খুব একটা পেটমোটা নয়। এই পেটমোটা না হওয়ার কারণে মোসাদ্দেক দলে সুযোগ পাওয়ার পর মনে মনে প্রস্তুতি ম্যাচে নিজের ‘প্রস্তুতি’ করে নিতে চেয়েছিলেন। মনে মনে একটা পরিকল্পনাও করে রেখেছিলেন। কিন্তু বিধিবাম। তিনি বলেন, ‘যখন জানতে পেরেছি যে আমি স্কোয়াডে আছি তখন থেকেই টুকটাক একটু শুনতেছিলাম যে হয়তো একটা খেলার সম্ভাবনা আছে। তো ওই সময় থেকেই একটা পরিকল্পনা তো নিজের মধ্যে কাজ করতেছিল যে কিভাবে খেলবো বা আমার কি কি রোল আসতে পারে বা আমি কিভাবে দলে অবদান রাখবো।’
মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের অভিষেক টেস্ট ছিল স্মরণীয়। এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই ২০১৭ সালে কলম্বোর পিএসএসে বাংলাদেশের শততম টেস্টে তিনি প্রথম খেলতে নেমেছিল। ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে সৈকত ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছিলেন। আর ব্যাট হাতে করেছিলেন প্রথম ইনিংসে ৮ নম্বারে নেমে ৭৫, দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ নম্বারে নেমে ১৩। কিন্তু শুরুর এই ধারবাহিকতা ধরে রাখতে না পারাতে, কখনো কখনো কম্বিনেশনের কারণে দলে অনিয়মিত হয়ে পড়েন। আবার এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে তিনি ফিরতে যাচ্ছেন আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলে। এবার সুযোগ পেলে ভালো করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি যখন শুরু করছি টেস্ট ক্রিকেট ওই সময় থেকে ভালো, এখন পর্যন্ত যেখানেই খেলছি, সেখানেই ভালো খেলার চেষ্টা করছি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে টিম কম্বিনেশনের কারণ হয়তো আমার জায়গা হয়নি। আবার সুযোগ আসছে। আমি চেষ্টা করবো এটা যেন ধরে রাখতে পারি।’ দলে এভাবে সুযোগ বাদ পড়তে তার মাঝে আফসোসও হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে আফসোস তো অবশ্যই হয়, কিন্তু যেটা আমার হাতে নেই সেটা আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো না। ‘এখন যেহেতু একটা নতুন সুযোগ আসছে আমি অবশ্যই চাইবো এটা আমি খুব ভালোভাবে নিতে পারি।’ এবার সুযোগ পেলে ব্যাট হাতে তিন অংকের মালা গাঁথতে চান মোসাদ্দেক। বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। আমি যে কয়েকটা ম্যাচ খেলতে পারছি, আমি মনে করি যে আমি যেভাবে শুরু করেছিলাম ওই জায়গা থেকে সুযোগ আমার জন্য সেভাবে আসেনি। কিন্তু অবশ্যই সুযোগ যদি আসে আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করবো।’
প্রতিপক্ষকে নিজেদের খুবই চেনা প্রতিপক্ষ উল্লেখ করে মোসাদ্দেক বলেন, ‘ওরা আমাদের খুবই পরিচিত একটা প্রতিপক্ষ। এর আগে অনেকবার আমরা ওদের সঙ্গে খেলেছি এবং ওদের সঙ্গে জেতা হারার সবকিছু স্মৃতি আমাদের মধ্যে আছে। অবশ্যই আমরা চেষ্টা করবো আমাদের শতভাগ আমরা দিতে পারি এবং অবশ্যই আমাদের জেতার দিকে লক্ষ্য থাকবে।’
এমপি/