দুই মাসের মাঝে দাবার নিজস্ব ভেন্যু: ড. বেনজির
পুরস্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে শেষ হলো স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী প্রিমিয়ার বিভাগ ও প্রথম বিভাগ দাবা লিগের খেলা।
দাবা ফেডারেশনের উদ্যোগে এবং শাহ সিমেন্টের পৃষ্ঠপোষকতায় এবারের লিগ অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক ও দাবা ফেডারেশনের সভাপতি ড. বেনজীর আহমেদ গতকাল রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের অর্থ ও ট্রফি-মেডেল তুলে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি এবং সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন, আবুল খায়ের গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি মো. আবু সাঈদ চৌধুরী, সহসভাপতি কে এম শহিদুল্যা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবউদ্দিন শামীম, আবুল খায়ের গ্রুপের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল্লাহ চৌধুরী (অবসরপ্রাপ্ত), দাবা ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক ড. শোয়েব রিয়াজ আলম ও মাসুদুর রহমান মল্লিক, রুপায়ন গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান মাহির আলী খান রাতুলসহ অন্যরা।
প্রিমিয়ার লিগে ১১ খেলায় ২০ পয়েন্ট পেয়ে এবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা ধরে রেখেছে বাংলাদেশ পুলিশ। এ ছাড়া সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব রানার্স-আপ ও বাংলাদেশ বিমান তৃতীয় স্থান লাভ করে। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব ও বাংলাদেশ বিমান উভয়েই ১১ খেলায় ১৮ পয়েন্ট করে অর্জন করে। সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব ৩১ গেম পয়েন্ট নিয়ে রানার্স-আপ ও বাংলাদেশ বিমান ২৮ গেম পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থান লাভ করে। প্রথম বিভাগ দাবা লিগে ১১ খেলায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক রানার্স-আপ এবং ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা চেস ক্লাব তৃতীয় স্থান লাভ করে।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দাবা ফেডারেশনের সভাপতি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমি কিছুটা হতাশ হয়েছি। এবারের প্রিমিয়ার লিগে ৭১ জন খেলেছে। তার মধ্যে ২১ জনই বিদেশি। এক তৃতীয়াংশই বিদেশি খেলেছে। আমি চাই আরও বেশি বাংলাদেশি খেলোয়াড় এখানে খেলুক। কারণ ব্যক্তিগতভাবে আমি খুব অ্যাগ্রিসিভ লোক। যদি আমি লক্ষ্য নির্ধারণ করি তাহলে সেখানে পৌঁছেই ছাড়ব। পথ খুঁজে না পেলে ভেঙে নতুন পথ তৈরি করব। হাত দিয়ে ভাঙতে না পারলে বুলডোজার ব্যবহার করব। আমাদের যেসব ক্লাব আছে, অফিসিয়াল আছেন, খেলোয়াড়-কর্মকর্তা আছেন আমি চাই সবাই অ্যাগ্রিসিভ হবেন।’
আগামী দুই মাসের মধ্যে নিজস্ব জায়গায় দাবা খেলা দেখতে চান জানিয়ে বেনজির আহমেদ বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যে আমরা দাবার জন্য নিজস্ব জায়গা পাব। আগামী দুই মাসের মধ্যে আমরা নিজস্ব ভেন্যুতে খেলব। এটা আমার প্রত্যাশা। যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী রাসেল সাহেবের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা। অনেক বাধা-বিপত্তির পরও উনি আমাদের একটা জায়গা বরাদ্দ দিয়েছেন। সেখানে আমরা আমাদের ফেডারেশন সাজাব। একটা টুর্নামেন্ট হলে আমাদের যে ফাইভস্টার হোটেল ভাড়া করতে হয়; লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হয়, সেটা আর হবে না। ফেডারেশনেই আমরা খেলা চালাব। আর সেই টাকা দাবার উন্নয়নে খরচ করব। নতুন জায়গাতে একটা বিশাল অডিটোরিয়াম থাকবে। যেখানে প্লেয়াররা খেলতে পারবে। ডরমেটরি থাকবে। বিদেশি খেলোয়াড়রাও সেখানে থাকবে। দাবার জন্য লাইব্রেরি করব। অনলাইন লাইব্রেরি করব ইনশাল্লাহ।’
লন দাবা ফেডারেশনের সহসভাপতি এবং সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, ‘সভাপতি মহোদয় ড. বেনজীর আহমেদ আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানের শ্রী বৃদ্ধি করেছেন। আমরা আমাদের সভাপতির যোগ্য নেতৃত্ব, অনুপ্রেরণা আর নির্দেশনায় দাবাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। দাবা ফেডারেশন আন্তর্জাতিক অনেক টুর্নামেন্ট আয়োজনের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ের খেলাকে নিয়মিত পরিচালনা করে যাচ্ছে। এর মধ্যে প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগ, প্রথম ও দ্বিতীয় বিভাগ দাবা লিগ। আমাদের সভাপতির উদ্যোগে এবং নির্দেশনায় এ প্রথম আমরা দেশের ৬৪টি জেলায় দাবা লিগ আয়োজন করতে সমর্থ হয়েছি। এটা সত্যিই গর্বের। তৃণমূল পর্যায় থেকে দাবাড়ু তুলে আনাই আমাদের লক্ষ্য। গত চার বছর ধরে আমরা দাবা ফেডারেশনে যারা আছি তারা এই কাজ অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে করে যাচ্ছি।’
এমপি/এসএন