সাকিব নিয়মিত খেলবে- এ প্রত্যাশা প্রধান নির্বাচকের
সাকিব, সাকিব, সাকিব- ক্রীড়াঙ্গনে এখন যেন এ একটি শব্দ। এ নামের আগে-পেছনে যুক্ত হচ্ছে এক এক রকম শব্দ। কখনো সমালোচনার তীব্র ঝাঁজ। কখনো পজেটিভ দৃষ্টি ভঙ্গিতে দেখার চেষ্টা। তবে পজেটিভের চেয়ে সমালোচনার ঝাঁজই বেশি।
শুক্রবার (১১ মার্চ) সকালে নির্বাচক কমিটি সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলে ২০২২ সালের ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তি নিয়ে। কিন্তু সেখানে প্রশ্ন এসেছে সাকিবকে নিয়েই বেশি। দেখে মনে হবে সংবাদ সম্মেলন সাকিবের চলমান ঘটনা নিয়েই। সাকিবকে নিয়ে প্রশ্নবানে জর্জরিত প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নুকে করা প্রশ্ন কেড়ে নিয়ে নির্বাচক কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক নিজেই উত্তর দিতে গিয়ে মেজাজ হারান। পরে অবশ্য নিজেকে সামলে নিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাকিবকে নিয়ে একাধিক প্রশ্নের কারণ ছিল টেস্ট ক্রিকেট খেলার প্রতি অনাগ্রহ থাকার পরও তাকে কেন টেস্ট ক্রিকেটের চুক্তিতে রাখা হয়েছে। এর ব্যাখ্যা দিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন জানান, সাকিব নিয়মিত খেলবে বলেই রাখা হয়েছে।
নান্নু বলেন, ‘ ও (সাকিব) ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্রাম নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে। তারপর থেকে ও অ্যাভেইলেবল। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে সে অনুযায়ী তিন ফরম্যাটের জন্যই ও অ্যাভেইলেবল আছে। অনেক বড় মাপের খেলোয়াড়। বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডারের একজন। ওর কাছে সবসময় সেরাটাই আমরা চাই। সেজন্য ওকে তিন ফরম্যাটেই রাখা হয়েছে।’
নান্নুর প্রত্যাশা সাকিবকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে এরপর সাকিব ‘রিফ্রেশ’ হয়ে ফিরে আসবে বলে প্রত্যাশা করেন। তিনি বলেন, ‘ যেহেতু এ বছর আমাদের অনেক খেলা আছে। আগামী এক বছর আমরা সাকিবের কাছ থেকে আরও ভালো পারফরম্যান্স চাচ্ছি। ২০২২ সালে তিন ফরম্যাটেই অনেক খেলা আছে। সে হিসাবে আমাদের অনেক খেলোয়াড় লাগবে। সেরা খেলোয়াড়কে আমরা সবসময়ই তিন ফরম্যাটে চাই। আশা করছি সে রিফ্রেশ হয়ে ফিরে এসে তিন ফরম্যাটেই খেলবে।’
নান্নু বলেন, ‘ আমরা প্রায় এক মাস আগে এ তালিকা জমা দিয়েছি। ও ( সাকিব) এলে অবশ্যই কথা বলব।’
সাকিব প্রসঙ্গ ছাড়াও প্রধান নির্বাচক চুক্তির দুই নতুন মুখ ইয়াসির আলী রাব্বি ও মাহমুদুল হাসান জয়কে রাখা প্রসঙ্গে বলেন, ‘ জয়ের সেঙ্গে রাব্বিকেও নেওয়া হয়েছে লাল বলের ক্রিকেটে উৎসাহ বাড়ানোর জন্য। টেস্ট ক্রিকেটকে আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। কিছু তরুণ খেলোয়াড়কে চুক্তিতে নেওয়া হয়েছে যাতে বাকি ক্রিকেটারদেরও টেস্টের প্রতি আগ্রহ থাকে এবং মনোযোগের সঙ্গে খেলে। সেই চিন্তা করেই এ দুজনকে নেওয়া হয়েছে।’
নতুনদের যোগদানে আবার বিয়োগও ঘটেছে। টেস্ট দলে নিয়মিত থাকার পরও বাদ পড়েছেন পেসার আবু জায়েদ রাহী। কিন্তু দলে থাকলেও তিনি সেরা একাদশে খেলার সুযোগ পান কমই। নান্নু বলেন, ‘রাহী মাঝখানে অনেকদিন ধরে নিয়মিত হতে পারছে না। এজন্য ওকে এক বছরের জন্য আমরা বাইরে রেখেছি। তারপরও নিয়মিত হয়ে গেলে আমরা আবারও তাকে চুক্তিবদ্ধ করতে বলব।’
মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন বাদ পড়েছেন ইনজুরির কারণে। তার বিষয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘সাইফউদ্দিন ইনজুরিতে আছে। আপনারা জানেন গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দীর্ঘ সময়ের ইনজুরিতে পড়েছে। ওকে বোর্ড যথেষ্ট সময় দিচ্ছে প্রস্তুত হচ্ছে। ও যখন খেলায় ফিরে আসবে, জাতীয় দলের জন্য অ্যাভেইলেবল হয়ে যাবে তখন আমরা আবার তাকে চুক্তিবদ্ধ করব।’
নির্বাচকরা ২১ ক্রিকেটারের নাম প্রকাশ করলেও কে কোন গ্রেডে তা চূড়ান্ত করেননি। এ নিয়ে প্রধান নির্বাচক বলেন, ‘আপনারা ইতোমধ্যে ২১ জনের একটা তালিকা পেয়েছেন। আমরা চুক্তির নামগুলো দিয়েছি। এক বছরের জন্য নির্বাচক প্যানেল এ নামগুলো বোর্ডে দিয়েছে। পরবর্তীতে গ্রেডিং ঠিক করা হবে। এটা ক্রিকেট অপারেশন্স থেকে করা হয়। এ ২১ জনকেই আমরা দিয়েছি।’
এমপি/এসএন