ক্রীড়াঙ্গনে মেয়েদের অংশগ্রহণ বেড়েছে
আজ বিশ্ব নারী দিবস। স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অন্যান্য ক্ষেত্রে নারীরা যেমন এগিয়ে এসেছেন, তেমনি ক্রীড়াঙ্গনেও। তবে তুলনা করলে ক্রীড়াঙ্গনের নারীদের অগ্রগতি কম। তারপরও এগিয়ে যাচ্ছেন ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের মেয়েরা।
এক সময় ক্রীড়াঙ্গনে মেয়েদের অংশগ্রহণ ছিল খুবই সীমিত। এর মূল কারণ ছিল পারিবারিক ও সামাজিক। সময়ের বিবর্তনে সেখানে পরিবর্তন এসেছে। এখন পারিবারিক উৎসাহও আছে। সামাজিক প্রতিবন্ধকতাও অনেকটা কেটে গেছে। বাংলাদেশের মেয়েরা শর্ট প্যান্ট পরে ফুটবল খেলছে এটা এক সময় সমাজ ব্যবস্থায় কল্পনাও করা যেতো না। এই মেয়েরা কিন্তু আবার শহরের নয়। গ্রাম থেকে, কেউ কেউ অজো পাড়া গা থেকে উঠে এসেছেন। শুরুতে তাদের অনেকেই প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। কিন্তু এখন তারা সবার মন জয় করে নিয়েছেন। এলাকায় অনেকের কাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন। এই মেয়েরাই ফুটবল খেলে পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা এনে দিয়েছেন। ফুটবলে মেয়েরা এখন সাফের সেরা। ক্রিকেটে মেয়েরা এবার প্রথমবারের মতো ব্শ্বিকাপ খেলছে। ইতিমধ্যে তারা এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পড়েছে। ফুটবল-ক্রিকেট ছাড়াও মেয়েরা হ্যান্ডবল, কাবাডি, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, দাবা, কারাতে, জুডো, তায়াকোয়ান্দো, সাঁতার অ্যাথলেটিকস, রাগবি, কুস্তি, ভারোত্তলন, বডি বিল্ডিং, রোলার স্কেটিং এ রকম আরও অনেক খেলায় অংশগ্রহণ করছে। তবে এ সব খেলায় ফুটবল বা ক্রিকেটের মতো সাফল্য কম।
জাতীয় টেবিল টেনিসে ১৬ বার চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিনেস বুকে নাম লেখানো সাবেক জাতীয় টেবিল টেনিস খেলোয়াড় জোবেরা রহমান লিনু বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছরে সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের মেয়েরা অনেক এগিয়ে গেছেন। ক্রীড়াঙ্গনেও অগ্রযাত্রা আছে। আগের তুলনায় অনেক এগিয়েছে। তবে অন্য সব পেশার সঙ্গে তুলনা করলে সেটা কম হয়। এর কারণ আর্থিক নিরাপত্তা কম। ক্রিকেট ও ফুটবলে আর্থিক নিশ্চয়তা আছে বলে এখানে মেয়েদের অংশগ্রহণও বেশি। সাফল্যও আসছে। মেয়েদের আর্থিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিলে ক্রিকেট-ফুটবলের মতো অন্য খেলায়ও মেয়েরা বেশি করে এগিয়ে আসবে। সাফল্যও আসবে।’
জাতীয় দলের সাবেক হ্যান্ডবল খেলোয়াড় কামরুন্নাহার স্বপ্না। যিনি খেলার পাশাপাশি মডেলিং করেছেন। পরে বিদেশি এয়ারলাইনসে চাকুরিও করেছেন। এখন একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার। তিনি বলেন, ‘নারী হলো মায়ের জাত। মায়ের বিকল্প নেই। আমাদের প্রতিটি দিনই নারী দিবস। আমাদের ঘর-বাহির সব সামাল দিতে হয়। স্বাধীনতার পর ক্রীড়াঙ্গনে আমাদের যতটুকু এগুনো দরকার ছিল, ক্রিকেট ও ফুটবল বাদ দিলে আমরা সেভাবে এগুতে পারিনি। তবে আশার কথা এখন আগের তুলনায় ক্রীড়াঙ্গনে মেয়েদের অংশগ্রহণ অনেক বেড়েছে। সামাজিক যে বাঁধা ছিল, তা দূর হয়েছে। পরিবার থেকে উৎসাহ পাচ্ছে। কম-বেশি অর্থনৈতিক সুবিধাও আছে। আমার বিশ্বাস আগামীতে ক্রীড়াঙ্গনে মেয়েদের অংশগ্রহণ আরও বাড়বে।’
এমপি/এসএ/