ছেলের লাশের জন্য মর্গে বাবা-মায়ের ৩৮ ঘণ্টা!
হবিগঞ্জের বাহুবলে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ব্যাডমিন্টন খেলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হয় মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র কামরান আখঞ্জী (১৪)। তারপর ময়নাতদন্তের জন্য রাত ৯টার দিকে হবিগঞ্জ মর্গে আনা হয় কামরানের মরদেহ। কোন চিকিৎসক না থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে ময়নাতদন্ত হয়নি। কিশোর ছেলের মরদেহ গ্রহণ করার জন্য পরদিন শুক্রবার সারাদিন শেষে রাতও কাটাতে হয়েছে মর্গের সামনে।
অবশেষে শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ১১টায় ময়নাতদন্তে কামরান আখঞ্জীর নিথর দেহ ফিরে পান তার বাবা-মা। কামরানের বাবা আব্দুল হাই আখঞ্জী বলেন, ছেলে খেলতে গিয়ে নিহত হয়েছে। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল না। আমরা চেয়েছিলাম ময়নাতদন্ত ছাড়াই আমার ছেলের দাফন-কাফন করতে চেয়েছিলাম। আইনি জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত মর্গে আনতে হয়েছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবহেলা করেছে। আমার ছেলের লাশ মর্গের ভেতরে রেখে এই দীর্ঘসময় পার করতে আমাদের খুব কষ্ট হয়েছে। আমি ও কামরানের মা সন্তান হারানোর ব্যথাই সহ্য করতে পারছি না। এর মধ্যে মর্গের ভেতরে বরফ-চা পাতা দেয়া আমার ছেলের মৃতদেহ রেখে বাহিরে আমাদের সময় কাটছিল না।
ময়নাতদন্ত করতে এত সময় কেন লাগল, এই প্রশ্নের জবাবে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মোমিন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, হাসপাতালের সকল চিকিৎসক প্রধানমন্ত্রীর একটি সম্মেলনে ছিলেন। যে কারণে ময়নাতদন্ত করতে দেরি হয়ে গেছে। শনিবার দুপুর ১২টায় ময়নাতদন্তের পর ওই ছাত্রের মরদেহ পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রকিবুল হাসান খান জানান, বৃহস্পতিবার রাতে মাদ্রাসাছাত্র কামরান আখঞ্জীর মরদেহ সুরতহালের পর ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়। দীর্ঘ সময় পর শনিবার দুপুরে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। এরপর পরিবারের কাছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতদহ বুঝিয়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাহুবল উপজেলার চলিতাতলা মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র কামরান আখঞ্জী গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ব্যাডমিন্টন খেলছিল। হঠাৎ অসাবধানতাবশতঃ খেলার জন্য টানা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে কামরানে মৃত্যু হয়। রাত ৯টার দিকে উদ্ধারের পর কামরানের মরদেহ হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় বাহুবল মডেল থানা পুলিশ।
এএজেড