ঈদ আনন্দে ধরলার পাড়ে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় ঈদের আনন্দ ও উৎসব উপভোগ করতে দর্শনার্থীরা ভীর জমিয়েছেন দেশের উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম সড়ক সেতু ‘শেখ হাসিনা ধরলা সেতুতে।
শনিবার (২২ এপ্রিল) ঈদের প্রথম দিন বিকালে ও ঈদের দ্বিতীয় দিন রবিবার (২৩ এপ্রিল) বিকালে শেখ হাসিনা ধরলা সেতু পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, শুধু ফুলবাড়ী উপজেলা নয় পার্শ্ববর্তী উপজেলা নাগেশ্বরী ও লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর দুই পাড়ে উৎসব মুখোর পরিবেশে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত। অনেকেই আবার শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি এক নজর দেখতে বিভিন্ন জায়গা থেকেও এসেছেন।
উত্তরাঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম সড়ক সেতু ‘শেখ হাসিনা ধরলা সেতু'র অবস্থান উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায়। উপজেলা সদর থেকে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর দুরত্ব মাত্র ২ কিলোমিটার।
রবিবার (২৩ এপ্রিল) সরেজমিনে দেখা যায় সেতুর দুই পাড় দিয়ে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরীরা পরিবার পরিজন নিয়ে পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ ভ্যান, রিকশা, অটো, মোটর সাইকেল, বাইসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে সেতুর মাঝে দাঁড়িয়ে প্রেমিক-প্রেমিকা, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার পরিজনদের সঙ্গে ছবি ও সেলফি তুলতে ব্যস্ত। কেউ ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে উপুভোগ করছেন ধরলার সৌন্দর্য, কেউ কেউ আবার ধরলার চর গুলোতেই ঘুরে ঘুরে দেখছেন। সেতুর দুই পাড়ে ১০টি ফুচকা, চানাচুর, আইক্রিমের দোকানের পাশাপাশি চুড়ি-ফিতা ও বেলুনসহ বিভিন্ন রকমারির দোকান বসেছে। সব গুলো দোকানেই তেক্রাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। শেখ হাসিান ধরলা সেতুর পাড়ে পর্যটন কেন্দ্রের দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রাসহ দূর-দূরান্তর থেকে আসা দর্শনাথীরা।
স্থানীয় এমদাদুল হক মিলন ও শহিদুল ইসলাম জানান, এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন ছিল এই শেখ হাসিনা সেতুটি। ফুলবাড়ীবাসীর স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। সেতু পাড়ে পর্যটন কেন্দ্রের পাশাপাশি সেতুর দুই পাড়ে ধরলার তীররক্ষা বাধের দুই পাশে সিমেন্টের বেঞ্চ জাতীয় কিছু বসার ব্যবস্থা করলে চটপটি ও ফুচকা ওয়ালাদের আগমনে দর্শক সমাগম বাড়তো বলে মন্তব্য করেন তারা।
লালমনিরহাট থেকে আসা সবজু মিয়া ও তুলি আক্তার বলেন, ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পরিবারের সাথে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি দেখতে এসেছি। অনেক ভাল ভাল ছবি ও সেলফি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছি। সেই সাথে ধরলায় ডিঙ্গি নৌকায় ঘুরেছি। সব মিলিয়ে আমরা এবারের ঈদ-আনন্দটা খুব ভালো উপভোগ করেছি।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলুর রহমান জানান, ঈদের দিন ও ঈদের দ্বিতীয় দিন দূর-দূরান্তর থেকে আসা হাজারও দর্শনার্থী ফুলবাড়ী উপজেলার শেখ হাসিনা ধরলা সেতু পাড়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটেছে। দর্শনার্থীরা যেন আপন মনে সেতু পাড়ে তাদের প্রিয়জনদের সাথে ঘুরে পাড়ে সে লক্ষ্যে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। বিকাল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত সেতু পাড়ে নির্বিঘ্নে ঈদের আনন্দ উৎসব করে দর্শনার্থীরা বাড়ি ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত পুলিশ সেতু পাড়ে থাকবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি প্রায় ১৯২ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৯ টি স্প্যান বিশিষ্ট ৯৫০ মিটার পিসি গার্ডারের কাজ সম্পন্ন করে এলজিইডি। গত ২০১৮ সালের ৩ জুন রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেখ হাসিনা ধরলা সেতুটি’র শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
/এএস