বাসায় বসে খাস আদায়! তোপের মুখে তহশিলদার
সরকারি নিয়ম অনুযায়ী হাট-বাজার ইজারার চুড়ান্ত না হওয়ার পর সরকারি লোক দিয়ে খাস কালেকশন করার কথা। কিন্তু এটির কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই গোপনে পূর্বের হাট ইজারা দিয়ে বাসায় বসে খাস আদায় করার অভিযোগ উঠেছে তহশিলদার মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টিসহ তোপেড় মুখে পড়েন তহশিলদার।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী হাটে এ ঘটনা ঘটেছে। আর এ কাজটি করার অভিযোগ উঠেছে ওই ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশিলদার মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়,রাতারাতি সাপ্টিবাড়ী হাটের পূর্বের ইজারাদারের সঙ্গে আতাত করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে প্রকাশ্যে ডাক না দিয়ে ইজারা আদায় করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪২৯ বাংলা সনের এক বছরের জন্য সাপ্টিবাড়ী হাটটি ইজারা দেওয়া হয়। আর ওই হাটের মেয়াদ শেষ হয় ১লা বৈশাখ ১৪৩০ সনে। এদিকে ৪র্থ দফায় সরকারীভাবে ওই হাটের নিলাম ডাকে কোন ডাককারীর ডাক মনোনীত না হওয়ায় সাপ্টিবাড়ী হাটসহ আরও কয়েকটি হাটবাজার এক থেকে দুই সপ্তাহের জন্য প্রকাশ্য ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটে শুধু সাপ্টিবাড়ী হাটে।
এদিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই কয়েকটি হাটের ডাক চুড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত প্রকাশ্যে ডাক অথবা তহশিলদার নিজে এসব হাটের খাজনা আদায় করবেন। কিন্তু সাপ্টিবাড়ী ভুমি অফিসের তহশিলদার মাহফুজুর রহমাব বাসায় বসে উপজেলা প্রশাসন ও সংবাদকর্মীদের জানিয়েছেন তিনি নিজেই খাজনা আদায়ের কাজটি করছেন।
তবে সরেজমিন সাপ্টিবাড়ী হাটে গিয়ে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। সেখানে গিয়ে কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি ইউনিয়ন তহশিলদার মাহফুজুর রহমান ও তার লোকজনকে। তবে ওই হাটের টেবিলে বসে পূর্বের ইজারাদার খাজনা আদায় করছেন। তবে খাজনা আদায় হচ্ছে ১৪২৯ সালের রশিদ বই দিয়ে। একটি ছাগল বিক্রির বিপরীতে ক্রেতা ও বিক্রেতার কাছ থেকে ২৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। তবে সরকারীভাবে শুধুমাত্র ক্রেতার কাছ থেকে ছাগল প্রতি মাত্র ৬০ টাকা নেওয়ার কথা।
এদিকে ওই হাটে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর তহশিলদার মাহফুজুর রহমান মোবাইল ফোনে এ প্রতিনিধিকে বলেন, ভাই সমস্যা নেই,আমি ওদেরকে (পূর্বের ইজারাদার) বলছি আপনাকে ম্যানেজ করবেন। এসময় তিনি আরও বলেন, স্যারকে (ইউএনও) এসব বিষয় বলার দরকার নেই। আমি এখন ডাক্তার দেখাতে যাচ্ছি। কালকে আপনার সঙ্গে কথা বলব। কিছুক্ষণ পর হাটে আসেন পূর্বের ইজারাদারের ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন সাদ। তিনি এ প্রতিনিধিকে ডেকে বলেন, সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমি ৬টি হাট তহশিলদার এর নিকট থেকে নিয়েছি।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কার্যালয়ের প্রশাসনিক প্রধান মজিবর রহমান জানান, তহশিলদারকে বার বার বলা হয়েছে প্রকাশ্যে হাটের নিলাম দিতে। যদি প্রকাশ্যে নিলাম দিতে না পারে তাহলে তাকে (তহশিলদার) তার অফিসের লোকজন দিয়ে খাস আদায় করতে হবে।
তিনি প্রকাশ্যে নিলাম কিংবা খাস আদায় না করায় তিনি চরম অন্যায় করেছেন। বিষয়টি তিনি ইউএনওকে জানিয়েছেন বলে দাবী করেন। আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জি,আর সারোয়ার বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
এএজেড