ঠাকুরগাঁওয়ে স্বস্তির বৃষ্টির আশায় মানুষ ব্যাকুল
টানা কয়েকদিনের চলমান কড়া রোদ ও তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের জীবনযাত্রা। দিনভর চারদিকে কড়া রোদে হাঁসফাঁস অবস্থা। দিনে-রাতে ঘাম ঝরানো গরমের যন্ত্রণা। বাতাস থমকে আছে। কোথাও কোনো স্বস্তি নেই। তার উপর রমজান মাস। এই সময় গরমের তীব্রতায় তৃষ্ণার্ত মানুষ ও প্রাণীকুলে নাভিশ্বাস উঠেছে। চারিদিকে একটু শীতল পরশ লাভের জন্য মানুষের যেন ব্যাকুল প্রচেষ্টা।
আজ শনিবার (১৫ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁওয়ে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়োস পর্যন্ত উঠেছে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাতের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও অস্বাভাবিক থাকে। এ কারণে গরমের তীব্রতা আরো অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
একটু স্বস্তির জন্য সকলে খোঁজেন ছায়াযুক্ত জায়গা। তীব্র এই গরমে সাধারণ মানুষ বের না হওয়ায় আয় কমেছে খেটে খাওয়া মানুষদের। স্বল্প আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন খেটেঁ খাওয়া মানুষগুলো।
তাপদাহে অবিরাম ঘাম ঝরে অসুস্থ হয়ে পড়ছে অসংখ্য মানুষ। ডায়রিয়াসহ পেটের পীড়া, জ্বর-সর্দি-কাশির রোগী বেশিরভাগ ঘরে। গরমের দাপট বৃদ্ধির সঙ্গে বাজারে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে রোজাদারদের ভোগান্তি-কষ্ট আরো বেড়ে গেছে। বিশেষত হতদরিদ্র, দিনমজুর, শ্রমিক কিংবা রিকশাচালক, নিম্নআয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। তাদের আয়-রোজগার কমে গেছে। ঈদ বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতার ব্যস্ততা এমনিতেই কম। টানা তাপদাহের কারণে আরও কমে গেছে।
শহরের রিকশাচালক রুবেল বলেন, ‘তীব্র রোদের কারণে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এত গরম যে রাস্তায় দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। গরমের কারণে মানুষ কম বের হচ্ছে। ফলে আয়-ইনকাম কমে গেছে।’
রহমত নামের এক ভ্যানচালক বলেন, ‘রোদের তেজ অনেক বেশি। একটু রোদে গাড়ি চালালেই শরীর জ্বলতে শুরু করে। তার উপরে রোজা রাখছি। পানির তৃষ্ণা পাচ্ছে কিন্তু কিছু করার নেই। অপরদিকে রোদের তাপে লোকজন বাসা থেকে বের হচ্ছে না। ফলে ভাড়াও তেমন পাচ্ছি না। আবার জিনিসের দাম বেশি। সব মিলিয়ে আমাদের অবস্থা খুব খারাপ।’
ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রকিবুল ইসলাম চয়ন বলেন, বেশ কয়েকদিন থেকে তীব্র রোদের দাপটে বয়স্করা গরমের কারণে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন। শিশুরা বেশিরভাগ নানা রোগ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। রোদের তীব্রতার কারণে আমরা বেশি করে খাবার সেলাইন পানি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে পার্শ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, সচরাচর বৈশাখ মাসের প্রথম দিকে আকাশে মেঘ থাকে না। সেই কারণে তীব্র গরম অনুভূত হয়। এটি আরো বেশ কয়েকদিন থাকবে।
এসআইএইচ