রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১০ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

কুড়িগ্রামের চাকিরপশার ‘বিল’ না ‘নদী’, বিতর্ক চরমে

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার অভ্যন্তরে অবস্থিত চাকিরপশার বিলকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। এটি নদী না বিল এ নিয়ে চলছে পক্ষে বিপক্ষে তুমুল বিতর্ক। পরিবেশবাদী সংগঠন রিভারনাইন পিপলস ও চাকিরপশার সুরক্ষা কমিটি এটিকে নদী ঘোষণার জন্য আন্দোলন চালিয়ে আসছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের টেকনিক্যাল কমিটি। স্থানীয় প্রভাবশালী মহল কর্তৃক দখল করা বিলটি যখন উদ্ধার করা যাচ্ছিল না, তখন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তৎপরতায় পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য এটি আশাব্যঞ্জক হলেও চাকিরপশার বিলকে কীভাবে নদ বা নদী বলা যায় তা নিয়ে বিতর্ক থামছেই না।

বিতর্কের মাঝেই জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের টেকনিক্যাল কমিটি তাদের প্রতিবেদনে চাকিরপশারকে কোথাও নদ বা নদী হিসেবে উল্লেখ করেনি। তারা এটিকে বিল হিসেবে উল্লেখ করে বিলের পানির প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য পরামর্শক হিসেবে ইটাকুড়ি বিল থেকে চাকিরপশার বিল পর্যন্ত প্রতিবন্ধক সড়কগুলোতে সেতু নির্মাণ এবং ব্যক্তি মালিকানায় দখল করা জায়গা রেকর্ড সংশোধনের মাধ্যমে পুকুর পাড় অপসারণ করে পানির প্রবাহ ঠিক রাখার পরামর্শ দিয়েছে। তারপরও কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিলের নাম গোপন করে এটিকে নদ বা নদী হিসেবে উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করছেন। যার আদৌ কোনো সত্যতা, তথ্য-উপাত্ত বা ভিত্তি পাওয়া যায়নি।

সরেজমিন চাকিরপশার বিলে গিয়ে দেখা যায়, দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা শহরের এক কিলোমিটারের মধ্যেই অবস্থিত একটি অশ্বখুড়ের মতো গোলাকার বিল বা ছড়া। মাঝখানে কৈলাশকুটি নামে একটি গ্রাম রয়েছে। এই বিল বা ছড়ার সাথে নদীর কোনো সংযোগ নেই। আশির দশকে তৎকালীন জিয়া সরকার খাল খনন কর্মসূচির মাধ্যমে বিলের পানি সহজে নদীতে স্থানান্তর করতে একটি সংযোগ খাল তৈরি করে। যা উলিপুরের বুড়ি তিস্তা খাল হয়ে ব্রহ্মপূত্র নদে গিয়ে পড়ত।

পরবর্তীতে পানি উন্নয়ন বোর্ড পানি নিষ্কাশন ও খাল খনন প্রকল্পের আওতায় জমি অধিগ্রহণ করে। তারা সেচ কার্যক্রম ও পানির প্রবাহ ধরে রাখার জন্য পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের গোড়াইপিয়ার নামক স্থানে একটি রেগুলেটর স্থাপন করে। পরবর্তীতে অধিগ্রহণ করা খাল বা নালার সংস্কার কাজ না করায় এখন সেটি সরেজমিনে পরিণত হয়েছে। কোথাও নালার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। চাকিরপশার বিল থেকে রেগুলেটরের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার। মাঝখানে কোনো খাল বা নালার অস্তিত্ব না থাকায় চাকিরপশারকে কীভাবে নদ বা নদী বলা হচ্ছে এ নিয়ে হতবাক এলাকার মানুষ। তথাকথিত চাকিরপশার নদের উৎপত্তিস্থল বলা হচ্ছে ৩ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত ইটাকুড়ি বিল থেকে। ইটাকুড়িও একটি বদ্ধ জলাশয়, বিল বা নালা। এর সাথে তিস্তা নদীর কোনো সংযোগ নেই। এই বদ্ধ বিল বা জলাশয় থেকে নদ বা নদী কীভাবে উৎপত্তি হলো তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে। ফলে রিভারনাইন পিপলসের নদী নিয়ে আন্দোলন কতটা যুক্তিসঙ্গত- তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের টেকনিক্যাল টিমের এক কর্মকর্তা জানান, নদী রক্ষা কমিশন থেকে যে টেকনিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছিল তাদের কর্মকাণ্ড ছিল একপেশে। ফলে টেকনিক্যাল টিমের সাথে ভিন্নমত পোষণ করে তাতে স্বাক্ষর করেননি কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রাজারহাট উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা।

রাজারহাট ভূমি অফিসের রেকর্ড অনুসারে দেখা যাচ্ছে, রাজারহাট ও চাকিরপশার ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত চাকিরপশার বিলটি বদ্ধ জলাশয় হিসেবে তৎকালীন ১৯৪০ সালে ভারত সম্রাটের নামে ‘বিল শ্রেণি’ হিসেবে সিএস রেকর্ডে নথিভুক্ত হয়। ৫টি মৌজায় ৬টি খতিয়ানে মোট ২৫৯.৪৫ একর জমি নথিভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে পাকিস্তান সরকারের পক্ষে রংপুর কালেক্টরের নামে ১ নম্বর খাস খতিয়ানে ৫টি মৌজায় ৫টি খতিয়ানে ১৮৪.০৮ একর জমি ‘বিল শ্রেণি’ হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করা হয় ১৯৬২ সালে। এরপর নব্বই দশকের সময় ভূমিখোরদের আগ্রাসনে কমতে থাকে সরকারি নথিভুক্ত জমি। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সিএসএ জমি রেকর্ড করা হয় ২৬৫,৩১ একর, এসএ রেকর্ডে ১৮৪.০৮ একর এবং আরএস রেকর্ডে ৩৬.২৮ একর। অসাধু ব্যক্তিরা কতটা বেপরোয়া হলে এমন হতে পারে সেটি এখানকার জমির সর্বশেষ অবস্থান দেখলে বোঝা যায়। দীর্ঘ সময় ধরে বিলগুলো গ্রাস করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে তারা আসলে কার পক্ষে কাজ করেছেন।

নথি ঘেটে ৫টি মৌজায় কীভাবে বিলগুলো গ্রাস হয়েছে তার চিত্র দেখে চমকে উঠার মতো। চাকিরপশার তালুকে সর্বশেষ রেকর্ড করা হয়েছিল ২০.৩৩ একর জমি। এখন সরকারের ভাগে রয়েছে মাত্র ৫.১১ একর জমি। ভূমি দস্যুদের নামে রেজিস্ট্রি হয়ে গেছে ১৫.২২ একর জমি । নাফাডাঙ্গা বিলের ৮৮.৫৩ একর জমির মধ্যে বন্দোবস্ত ও ব্যক্তিগত মামলায় লোপাট হয়ে গেছে ২,৪০৫ একর জমি। একই অবস্থা চান্দামারী বিলের ৮৩.৭৯ একর জমির। এই বিলের ৪২,৬৭ একর ভূমি সরকারি ফাইল থেকে গায়েব হয়ে ব্যক্তি মালিকানায় চলে গেছে। সদাগড় বিলের ২৩.৫৩ একর জমির মধ্যে ১৬.৭৩ একর রেকর্ডভুক্ত হয়েছে ব্যক্তি মালিকানায়। সর্বশেষ খালিশা বিলের ৮৩.৭৯ একর জমির মধ্যে বন্দোবস্ত ও ব্যক্তিগত মামলায় লোপাট হয়ে গেছে ৪৯.১৩ একর জমি । এ ব্যাপারে রাজারহাট ভূমি অফিসের ভাষ্য, সরকার থেকে মাঠ পর্যায়ে ব্যক্তির নামে রেকর্ড সংশোধনের জন্য রংপুর জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসে আপত্তি দায়ের করা হয়েছে এবং আদালতের ডিগ্রির বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

দীর্ঘ সময় ধরে এসএ ও আরএস এর মাধ্যমে কতিপয় অসাধু ব্যক্তিদের খাস করা জমি এখন ১১৬টি হোল্ডিংয়ে পরিণত হয়েছে। অবৈধ কাগজপত্র তৈরি করে তারা ষাটের দশক থেকে এ সব জমি ভোগদখল করে আসছে। আগে বাপ-দাদারা জমি ভোগ করেছে, এখন করছে তাদের সন্তানরা। হচ্ছে হাত বদল। সারা বছর ধরে পানির প্রবাহ থাকা বিলকে তারা শ্রেণি পরিবর্তন করে জলাশয় থেকে কাগজে-কলমে দোলা শ্রেণিতে পরিণত করেছে। এর ফলে উজানের শত শত কৃষকের একরের পর একর ফসলি জমি বর্ষায় জলাবদ্ধতার কারণে খালি ফেলে রাখতে হচ্ছে।

এদিকে চাকিরপশার বিলের প্রবাহ বন্ধ করে পুকুরের মতো পাড় দিয়ে ছোট ছোট ডোবায় ভাগ-বাটোয়ারা করে ব্যক্তিগতভাবে মাছ চাষ করছে অবৈধ দখলদাররা। এতে সৃষ্টি হয়েছে প্রতিবন্ধকতা। এর ফলে উজানের পানি এখন আর এদিক দিয়ে বের হচ্ছে না। নিষ্ঠুরভাবে পরিবেশ ও প্রতিবেশের উপর দেয়াল তুলে দিয়েছে তারা। সরকারের এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের এই বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের ফলে চাকিরপশার বিল হারিয়ে ফেলেছে তার শারীরিক কাঠামো। এতে বৃত্তবানদের কাছ থেকে মালিকানা হারিয়েছে সাধারণ মৎসজীবীরা। পানিতে নামলেই লাঠিয়াল বাহিনী তেড়ে আসছে। ভূমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে উচ্ছেদে যেতেও পারছে না প্রশাসন।

সমাজকর্মী ও হরিশ্বর তালুক উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল লতিফ মোল্লা (৭৪) জানান, আমরা কখনো দেখিনি এটা নদী। জন্মের পর থেকে রাজারহাটবাসী এটাকে বিল হিসেবে দেখে আসছে। জোড় করে বিলকে নদী বলা যায় না। যে বিলের মাছ খেয়েই আমরা বেড়ে উঠেছি।

চাকিরপশার কিশামত পূর্ণকর গ্রামের আবু হানিফ (৭১) বলেন, ‘হামার বাপ-দাদারা বৃটিশ আমল থাকি এটা বিল বলি জানছে। মাঝোত নদী নিয়ে আন্দোলন হইলো। এতে হামার কি লাভ হইল। আগোত হামরা মাছ মারি খাছি। এ্যালা বিলোত নামবেরে দেয় না। বড়লোকেরা বিলটা খায়া ফেলাল বাহে। হামরা সাধারণ মানুষ মাছ খাবার পাই না।’

তথ্যানুসন্ধান করে দেখা যায়, এই বিলের বড় একটি অংশ প্রায় ৬ একর জমি দখল করে আছে সাবেক চেয়ারম্যান পনির উদ্দিন আহমেদের সন্তান মিন্টু ও বাবলুরা। সাবেক ইসমাইল চেয়ারম্যানের নাতি টিটুরা দখল করে আছে ১০ একর জমি এবং আব্দুল্লাহ সরওয়ার্দীর ছেলে বর্তমান রাজারহাট উপজেলা চেয়ারম্যান বাপ্পীরা দখল করে আছে ৬ একর জমি। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা আবু বকর ১২ একর জমি দখলে নিয়ে ফারুক নামে একজনকে লিজ দিয়েছে। অপরদিকে পাঠানপাড়া ঈদগাহ মাঠ এলাকার সরকারি লিজকৃত জমি ভোগ করছে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবুনুর গ্রুপের মোশাররফ, রনিসহ বেশ কয়েকজন। ব্র্যাক অফিস থেকে চান্দামারী রামশিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত সরকারি লিজকৃত জমি ভোগদখল করছে বাপ্পী গ্রুপের রিপন, মুন, রাইসুলসহ বেশ কয়েকজন। এখানে বছরের পর বছর যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত তারা এখন মাছবিহীন জীবনযাপন করছে।

মাজাপাড়া গ্রামের নুর ইসলাম (৪৬) জানান, এই চাকিরপশার বিল ও চান্দামারী বিলকে ঘিরে রয়েছে প্রায় আড়াই হাজার পরিবার। যারা বৃটিশ আমল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। মাছের উপর র্নিভরশীল। এসব মাঝি পরিবার এখন পেশী শক্তির কাছে তাদের পেশা হারাতে বসেছে।

রাজারহাট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনিমেষ ও মহসিন জানায়, বিলের উপরে এলজিইডি কর্তৃক পাকা সড়ক করা হয়েছে। যারা জমি দখলে রেখেছেন তারাও তীরে পাড় দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছেন। ফলে পরিবেশ ও প্রতিবেশের বিশাল ক্ষতি হয়েছে। এসব কারণে শত শত বিঘা আবাদী জমি জলাবদ্ধতায় চাষাবাদ করা যাচ্ছে না। এখানে ২২ থেকে ২৫টি পরিবারের জন্য শত শত কৃষক চোখের জল ফেলছে। আমাদের আন্দোলন বিলকে পূর্বের অবস্থায় ফিরে নিয়ে যাওয়া হোক। এটা নদী নয়। জোড় করে এটিকে নদী বানানো যাবে না।

এদিকে চাকিরপশা নদী না বিল এ নিয়ে গত ২০২১ সালের ২ ও ৩ নভেম্বর টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। কমিশনের পরিকল্পনা ও মনিটরিং বিশেষজ্ঞ সৈয়দ মতলুবুর রহমানকে আহ্বায়ক, সহকারি প্রধান মাহমুদুল হাসানকে সদস্য সচিব, পানি বিশেষজ্ঞ মো. সাজিদুর রহমান, কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সদস্য করা হয়। টেকনিক্যাল কমিটির সঙ্গে ছিলেন কুড়িগ্রাম এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী, কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, রাজারহাটের উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার এবং রাজারহাটের ভূমি কর্মকর্তা।

পরবর্তীতে চাকিরপশার বিলকে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করতে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠকে বসে এই কমিটি। তবে দ্বিধাবিভক্ত দেখা দেয়। ফলে প্রতিবেদনে স্বাক্ষরদানে বিরত থাকেন কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এসি ল্যান্ড। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের প্রতিবেদনটি সর্বজনিন হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ব্যর্থ হলেও তারা ঢাকায় গিয়ে নিজেদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রতিবেদনটি জেলা প্রশাসক ও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুড়িগ্রাম অফিসকে প্রেরণ করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, নদ বা নদীর যে উপসঙ্গগুলো থাকে সেটি এখানে নেই। এখানে কোনো চর পড়ে না, নদী ভাঙন নেই, স্রোতে বা পানির প্রবাহ নেই, তীর বা পাড় নেই। ১০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত তিস্তা নদীর সঙ্গে কোনো প্রকার সংযোগ নেই। এখানে শুধুমাত্র বর্ষা মৌসুমে তদন্ত করা হয়েছে, শুকনো মৌসুমে এর অবস্থান নির্ণয় করা হয়নি। কিছুটা তাড়াহুড়ো ছিল। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো বিশেষজ্ঞকে দিয়ে পরীক্ষা করা হয়নি। ফলে কমিটি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়লেও চূড়ান্ত প্রতিবেদনে চাকিরপশার বিলের নাম উল্লেখ না করে পার্শ্ববর্তী উলিপুর উপজেলার বুড়ি তিস্তা বিলের নাম উল্লেখ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, পাকিস্তান আমল থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড তাদের অধিগ্রহনকৃত জমির খাজনা দিয়ে আসছে। আমরা ২০২২-২৩ অর্থবছরে খাল/নালা হিসেবে গত বছরের ২৪ মে ৫ হাজার ৯১২ টাকা খাজনা দিয়েছি। বিল এবং সেচ জমির জন্য রেগুলেটর স্থাপন করা হয়েছে। ফলে এটিকে নদ বা নদী বলার কোনো অবকাশ নেই।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন তাদের চূড়ান্ত রিপোর্টে বলেছেন, গত ১৪/১১/২০২১ তারিখে কমিটি জুম মিটিংয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করে হয়। তৈরি করা প্রতিবেদনে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌখিকভাবে জানান যে প্রেরিত প্রতিবেদনের সাথে কিছু বিষয়ে তাদের মতদ্বৈততা রয়েছে এবং কিছু বিষয়ে পরিবর্তন প্রয়োজন। পরবর্তীতে মতপার্থক্য দূর না হওয়ায় এবং সেটিতে স্বাক্ষর না হওয়ায় কিছু সুপারিশ দিয়ে চাকিরপশারকে বুড়ি তিস্তার অংশ হিসেবে ধরে এটিকে বিল হিসেবে চুড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের রিপোর্টের ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে সিএস রেকর্ড অনুযায়ী চাকিরপশার একটি বিল। যা এসএ রেকর্ডে অনেক ব্যক্তির নামে বিল বা দলা শ্রেণি হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করা আছে। এ ছাড়া ১ নম্বর খাস খতিয়ানের কৃষি জমি সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী ইজারা প্রদান করা আছে। সিএস জরিপ ও বর্তমান অবস্থান অনুযায়ী চাকিরপশার বিলের অভ্যন্তরে বুড়ি তিস্তা নদীর কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক ১৯৮০ সালে ব্যক্তির জমি অধিগ্রহণ করে একটি খাল খনন করা হয়। যার মাধ্যমে রাজারহাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলের পানি নিষ্কাশিত হয়। চাকিরপশার বিলের সাথে বুড়ি তিস্তা নদীর কোনো সম্পর্ক নেই।

এ বিষয়ে রাজারহাট মীর ঈসমাইল হোসেন ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাজেদুর রহমান চাঁদ জানান, এর আগে ইটাকুড়ি বিল ভোগদখল করে আসছিল ড. তুহিন ওয়াদুদের বাপ-দাদারা । তার দাদা সাফাতুল্যাহ প্রেসিডেন্ট (সাবেক চেয়ারম্যান) ইটাকুড়ি ও চাকিরপশার বিল সংযোগ স্থান ভোগদখল করে নেন। এরপর তার ছেলে অর্থাৎ ড. তুহিন ওয়াদুদের বাবা আব্দুল কুদ্দুছ ডাক্তার সেই জমিগুলো বিক্রি করে দেন।

তিনি আরও জানান, রাজারহাটের ছাটমল্লিকবেগ গ্রামের আহমদ উল্যাহর ছেলে লেবু মিয়া ও তার চাচাতো ভাই ফারুক মন্ডল সেই জমি কিনেছেন। আরো অনেকে সেই জমি কিনে নিজ স্বত্বমূলে ভোগদখল করছে। আগে সে আন্দোলন করেনি। এখন তার বাড়ি চাকিরপশার বিলের উজানে। চাকিরপশার বিলের মধ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় তাদের পারিবারিক কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ জন্য বিলকে নদী বানাচ্ছেন। নিজেকে সুশীল সমাজের ধারক বাহক হিসেবে পরিচিত করতে তিনি এই হীনচেষ্টা চালাচ্ছেন। যেটা কারো কাম্য নয়।

রাজারহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম জানান, জন্মের পর থেকে বিল হিসেবে দেখে আসছি। চাকিরপশা যদি নদী হয় তাহলে চলনবিলকে এরা মহাসাগর হিসেবে দাবি করবে। জেলার বাইরের মানুষের কাছে আমরা হাসির খোরাক হয়ে দাঁড়িয়েছি। আমাদেরকে বলা হচ্ছে এখানে নাকি নদ-নদী গ্রাস করা হচ্ছে। যেখানে ৪০ দশক থেকে বিল হিসেবে পরিচিতি পেয়ে আসছে সেখানে কোনো বিশেষজ্ঞ দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে কাউকে খুশি করার জন্য এই বিলকে নদী বলা হচ্ছে।বাইরের মানুষ এসে দেখুক চাকিরপশার বদ্ধ জলাশয়, আসলে নদী না বিল।

পরিবেশবাদী সংগঠন রিভারনাইন পিপলস’র পরিচালক ও রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, চাকিরপশার একটি প্রাকৃতিক প্রবাহ আছে। এর বর্তমান দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার। কোথাও চাকিরপশার, কোথাও মরাতিস্তা কোথাও বুড়িতিস্তা নামে পরিচিত। কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের তালিকাভুক্ত বুড়িতিস্তা নদীর উজানের অংশ চাকিরশপার।

তিনি আরও জানান, রাজারহাটের ইটাকুড়ি থেকে উলিপুরের থেতরাইয়ের তিস্তা পর্যন্ত একে বাধাহীন করতে হবে, সিএস নকশা ধরে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে হবে, সাধারণদের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়ন করলে চাকিরপশার বাঁচবে। হাজার হাজার একর জমির জলাবদ্ধতা দূর হবে। জেলেরা জীবিকা ফিরে পাবে, জীববৈচিত্র রক্ষা পাবে।

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন কর্তৃক গঠিত টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য ও রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে তাসনিম জানান, আমাদের সংগৃহিত রেকর্ডকৃত কাগজপত্র কখনোই বলছে না চাকিরপশার একটি নদ বা নদী। ফলে কমিটির সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করি। বিলের অধিকাংশ জমি বন্দোবস্ত ও ব্যক্তি মালিকানায় রেকর্ডভুক্ত হয়েছে। তাদেরকে আমি বৈধ কাগজপত্র নিয়ে ডেকেছিলাম। তারা কাগজপত্র দেখিয়েছে। এখন তাদের দাবি করা কাগজপত্র যে সঠিক নয় এটি প্রমাণ করতে আমাকে আইনগতভাবে এগুতে হচ্ছে। উচ্ছেদ করতে গেলে আমাকে আইন মেনেই এগুতে হবে। ভুলগুলো সংশোধন করতে হবে। যে প্রক্রিয়াটা চলমান রয়েছে।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, সবগুলো অভিযোগ পেয়েছি। পর্যালোচনা করছি। এটি জটিল আকার ধারণ করেছে। সমন্বিতভাবে সমাধান করতে হবে। ইতোমধ্যে চাকিরপশার বিলের ইজারা স্থগিত করা হয়েছে। বিলগুলো অন্যায়ভাবে ব্যক্তি মালিকানা বলে রেকর্ড করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, গেজেট হয়ে থাকলে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইবুনালে আপিল করা হবে। মামলা করা হবে। যদি না হয়ে থাকে তাহলে জোনাল সেটেলমেন্ট রংপুর জোনে আপত্তি করা হবে। যে কাজগুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এসআইএইচ

Header Ad
Header Ad

প্রধান উপদেষ্টা সাথে দেখা করতে

চোখে লাল কাপড় বেধে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুয়েটের ৮০ শিক্ষার্থী  

ছবিঃ সংগৃহীত

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাছুদ, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শরিফুল ইসলামের অপসারণ ও নতুন নিয়োগসহ ছয় দফা দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দেখা করতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে এই সাক্ষাত হওয়ার কথা রয়েছে।

সকাল ৮টায় কুয়েট ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাসে করে ৮০ শিক্ষার্থী ঢাকার পথে রওনা দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের মাথায় লাল কাপড় বাঁধা ছিল।

ঢাকার পথে রওনার আগে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীন। এজন্য আমরা দাবি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করব। এরপর নিরাপদ জায়গায় চলে যাব। সেখান থেকেই অনলাইনে আমাদের কার্যক্রম চলবে। যতদিন দাবি পূরণ না হচ্ছে, ততদিন ক্যাম্পাসে ফিরব না।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এই মুহূর্তে ক্যাম্পাস ছেড়ে দিচ্ছি। আমরা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সাহস করে যেতে পারছি না । তাই নিজেদের অর্থায়নে ক্যাম্পাসে বাস ডেকে এনেছি।

'আমরা কুয়েট অথরিটির কাছে বাস সহায়তা চেয়েছিলাম। তারা আমাদের কোনো সহায়তা করেননি। সরকার যেহেতু আমাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তাই আমরা চোখে লাল কাপড় বেঁধে ক্যাম্পাস টোটালি শাটডাউন করে চলে যাচ্ছি। আমাদের দাবি পূরণ হওয়ার আগ পর্যন্ত কুয়েট ক্যাম্পাসে কোন রকমের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজ চলবে না, বলেন তারা।

তারা আরও বলেন, 'ঘটনার পাঁচ দিন পরেও সরকারের কাছ থেকে কোনো ধরনের সহায়তার আশ্বাস আসেনি। আমাদের নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর চাপাতি, রামদা দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে, যা জুলাই বিপ্লবের পর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন হামলা করতে কেউ সাহস করেনি । অথচ এই হামলায় আমাদের শিক্ষার্থীদের মাথা ফেটে গেছে ,হাত তিন টুকরো হয়ে গেছে।

যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই বিপ্লবের ওপর দাঁড়িয়েছে সেই সরকার আমাদের দেড় শতাধিক শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরার পরও যোগাযোগ করেনি । সেই সরকারকে আমাদের রক্তের দায় নিতে হবে। ইমেইলের মাধ্যমে স্মারকলিপি পাঠানোর তিন দিন পার হয়েছে, কিন্তু সরকারের থেকে কোনো সাড়া পাইনি। এই ক্যাম্পাস আমাদের জন্য সেফ না। যেখানে হামলার পর সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা নিরাপত্তা দেওয়ার কথা সেখানে কুয়েটের নিরাপত্তারক্ষী ছাড়া কেউ নেই। আমাদের নিরাপত্তা এখন আমরাই দিয়ে যাচ্ছি।

শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ক্যাম্পাসের বাইরে যেসব শিক্ষার্থী থাকে, তাদের বাড়িওয়ালা বাড়ি ছেড়ে দিতে বলেছেন। তারা অনেক জায়গা থেকে হুমকি পাচ্ছেন। আমরা সবাই আতঙ্কিত, আমাদের পরিবার আতঙ্কিত। আমরা ক্যাম্পাসের ভিতরে বাইরে সেইফ না । আমরা অভিভাবকহীন। আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার কেউ নেই।

তারা বলেন, ভিসিসহ কিছু শিক্ষক বলার চেষ্টা করছেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বক্তব্য। হামলাকারীরা স্পষ্ট এবং চিহ্নিত কিন্তু তাদের বাদ দিয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। রক্তাক্ত কুয়েট প্রদর্শনীতে অস্ত্রধারীদের নাম পরিচয়, ছবি বিস্তারিত দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কুয়েটে ছাত্রদল সমর্থক ও বিএনপির লোকদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। আমাদের মনে হচ্ছে কুয়েট প্রশাসনেরই সমস্যা রয়েছে।

এর আগে, প্রধান উপদেষ্টার কাছে ই-মেইলে চিঠি পাঠান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৩তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত হয়। তা স্বত্বেও ছাত্রদল ক্যাম্পাসে রাজনীতি শুরু করতে চাইলে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েট শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের ফর্ম বিতরণের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ মিছিলের ডাক দেয়। এসময় কুয়েট ছাত্রদলের কর্মীরা হঠাৎ মিছিলে এসে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষার্থীদের হুমকি দেয়। এতে কুয়েট ছাত্রদল এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। ওই হামলায় কুয়েটের শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয় এবং চার ঘণ্টা যাবত এই হামলা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন আমাদের কোনো ধরনের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। এই মর্মে আমরা ভিসি ও প্রো-ভিসির পদত্যাগসহ ৬ দফা দাবি উত্থাপন করি।

Header Ad
Header Ad

বিয়ে বাড়িতে গান বাজানোর জেরে বাসর ঘরে হামলা  

ছবিঃ সংগৃহীত

নাটোরে বাগাতিপাড়া উপজেলায় বিয়ে বাড়িতে উচ্চ শব্দে গান বাজানোকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় বাসরঘরে ঢুকে বরকে মারধর ও বাসরঘর ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বরের মা, নানীসহ আরও তিনজন।

শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার জয়ন্তীপুর এলাকার মিন্টু আলী শাহের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন দয়ারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মাহাবুবুর রহমান মিঠু। দুই পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ১ নম্বর জয়ন্তীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাগাতিপাড়ার জয়ন্তীপুর এলাকার মিন্টু আলী শাহের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান দয়ারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মাহাবুবুর রহমান মিঠু।

এ ঘটনায় শনিবার দুই পক্ষকে নিয়ে বসে বিষয়টি মীমাংসা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ১ নম্বর জয়ন্তীপুর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ওই গ্রামের মিন্টু আলী শাহের ছেলে আরাফাত শাহের (২১) সঙ্গে নাটোরের লালপুরের ওয়ালিয়া ছোটময়না এলাকার আব্দুল মজিদের মেয়ের বিয়ে হয়।

বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে দুইদিন ধরে বাড়িতে সাউন্ড বক্সে উচ্চশব্দে গান বাজিয়ে উদ্‌যাপন করেন আগত অতিথিরা।

বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেশী আব্দুল আওয়াল শাহ অভিযোগ করলে বরের বাবা মিন্টু বক্সের সাউন্ড কমিয়ে দেন।

পরে শুক্রবার রাতে ফের উচ্চশব্দে গান বাজালে আব্দুল আওয়াল শাহ ও তার ছেলেসহ স্থানীয় কয়েকজন এসে বর, তার মা, নানীসহ চারজনকে মারপিট করে। এসময় তারা বাসর ঘরটিও ভাঙচুর করেন।

মিন্টু আলী শাহ স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, হঠাৎ করে আব্দুল আওয়াল শাহ তার ছেলেসহ স্থানীয় তিনজন আমার ছেলেকে বাসর ঘর থেকে টেনে বাইরে নিয়ে এসে মারপিট করেন।

এরপর তারা বাসর ঘরে ঢুকে বাড়িতে আগত অতিথিদের বলে- তোরা এখন গান বাজা, আমরা বাসর করবো।’ এরপর ঘরে থাকা খাটসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন তারা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল আওয়াল শাহ বলেন, কয়েকদিন ধরে উচ্চস্বরে গান বাজিয়ে এলাকার কাউকে ঘুমাতে দিচ্ছে না বিয়ে বাড়ির লোকজন। আমরা তাদের গান বাজাতে মানা করেছি, কাউকে কোনো মারপিট করা হয়নি।

এ বিষয়ে শনিবার রাত ৮টার দিকে ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ঘটনায় গ্রাম্যভাবে বসা হয়েছে, বিষয়টি সমাধান করা হচ্ছে। বক্স বাজানোকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনা ঘটছে।

তবে তিনি বলেন, ভাঙচুর করেনি, এগুলো মিথ্যা। এখন সেই সালিশে আছি, পরে কথা বলি।

তাহলে সালিশ করছেন কী নিয়ে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ওইযে মারামারি করিছিল, তখন হয়তোবা ইয়া হইছে…। ওরা নিজেরাই হয়তো ভাঙচুর করি এখন ঝামেলা করতিছে।

এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিয়ে বাড়িতে সাউন্ড বক্স বাজাচ্ছিল সেই বিষয়কে কেন্দ্র করে একটা ঝামেলা হয়েছিল। বাসরঘরের ফুলটুল টান দিয়ে ছিঁড়ছে, অন্য কিছু না। গান বাজাচ্ছিল এ নিয়ে, রাগের মাথায় দুই একটু হয় না!

চারজন আহত হয়েছে জানেন কিনা জানতে চাইলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, বাসরঘর ভাঙচুর ও মারপিটের ঘটনা সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ আমি থানায় পাইনি।

 

Header Ad
Header Ad

আজ দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তান মহারণ  

ছবিঃ ঢাকাপ্রকাশ

ভারত নাকি পাকিস্তান! চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উত্তাপ আজ দ্বিগুণ, কারণ মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান! রাজনৈতিক বৈরিতার ছায়া পড়েছে ক্রিকেটেও, ভারত পাকিস্তানে না খেলে দুবাইয়ে নিজেদের ম্যাচ আয়োজন করায় টুর্নামেন্ট পেয়েছে নতুন মাত্রা, বাড়িয়েছে উত্তেজনা।

দুবাইয়ে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৩টায় ম্যাচ মাঠে গড়াবে। ম্যাচ শুরুর আগেই শুরু হয়েছে কথার লড়াই। প্রথম ম্যাচে জিতে এগিয়ে ভারত। পরাজয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করে ব্যাকফুটে পাকিস্তান।

ভারত-পাকিস্তান মানেই বারতি উত্তেজনা। এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পাকিস্তান স্বাগতিক। তবে পাকিস্তানের মাঠে খেলতে অস্বিকৃতি জানানোয় ভারতের ম্যাচগুলো হচ্ছে দুবাইয়ে। স্বাগতিক হয়েও এই ম্যাচে পাকিস্তান অতিথি। হোম ভেন্যুর স্বাদ নিচ্ছে ভারত। ম্যাচ নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ সিমাহীন।
প্রথম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে কোনঠাসা পাকিস্তান। রিজওয়ানদের জন্য ডু অর ডাই ম্যাচ। আইসিসি ইভেন্টে ভারতের বিপক্ষে রেকর্ডটাও পক্ষে নেই। অনুপ্রেরণা শুধু সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা হাতে তোলা। যদিও সেই দলের দুই নায়ক ফখর জামান ও মোহাম্মদ আমির নেই এবার।

তুলনায় অনেকটাই নির্ভার ভারত। পুরো টুর্নামেন্ট এই ভেন্যুতেই খেলবে ব্লু শার্টরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় জয়ে আত্মবিশ্বাসের পালে হাওয়া। শুভমান গিল সেঞ্চুরি পেয়েছেন, বোলিংয়ে পাঁচ উইকেট মোহাম্মদ শামির। কথার লড়াইয়ে ঢিলের জবাব পাটকেল ছুড়ছে টিম ইন্ডিয়া।

অনেকটা এগিয়ে থেকেই চিরপ্রতিদ্ব্ন্দ্বীর মোকাবেলা করবে টিম ইন্ডিয়া।

 

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চোখে লাল কাপড় বেধে ঢাকার উদ্দেশ্যে কুয়েটের ৮০ শিক্ষার্থী  
বিয়ে বাড়িতে গান বাজানোর জেরে বাসর ঘরে হামলা  
আজ দুবাইয়ে ভারত-পাকিস্তান মহারণ  
মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে বাবা গ্রেপ্তার  
দুপুরের মধ্যে ১৪ জেলায় বজ্রবৃষ্টির আভাস  
সারা দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে যা জানালো র‍্যাব  
এ বছরই মধ্যে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন : দুদু  
জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিল না ইসরাইল  
জশ ইংলিসের সেঞ্চুরিতে রেকর্ড গড়ে ইংল্যান্ডকে হারাল অস্ট্রেলিয়া
১৫ বছর দলীয় বিবেচনায় অনেক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বানানো হয়েছে: উপদেষ্টা ফারুক
দিনাজপুরের বিরামপুরে ৮ জুয়াড়ি গ্রেফতার
চীনে নতুন করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব, আবারও মহামারির শঙ্কা
নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি রায়হান, সম্পাদক বেলায়েত
শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে ফুল আনতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রত্যেক শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে: মঈন খান
জামায়াত দাবি করে ২১ শে ফেব্রুয়ারির সমস্ত কৃতিত্ব তাদের: রনি
যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম, মোটরসাইকেল পুড়িয়ে আ.লীগ নেতাকে পুলিশে সোপর্দ
দীঘি নয়, ‘টগর’ সিনেমায় নায়িকা হচ্ছেন পূজা চেরী
নারী গোয়েন্দার প্রেমের ফাঁদে পড়ে ভারতের গোপন তথ্য ফাঁস (ভিডিও)
নির্বাচনের আগেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি নিহতদের পরিবারের