নীলফামারীতে দেশি মুরগির সংকট, দাম বেড়েছে বেগুনের
গত কয়েক মাস থেকে নীলফামারীর বাজারে মুরগির দামের ঊর্ধ্বগতি থামছেই না। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা বা তারও বেশি দামে বিক্রি হয়ে রেকর্ড গড়েছে। যদিও চলতি বছরের শুরুতে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা। তবে গ্রাহকরা বলছে, ব্রয়লারের দাম ২০০ টাকার বেশি হওয়া অযৌক্তিক। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে ব্রয়লার মুরগীর দাম নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হলেও কার্যত তা মানা হচ্ছে না।
জেলার বাজারগুলোতে দেশি মুরগি ৫৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও চাহিদার তুলনায় মুরগীর পরিমাণ কম থাকায় মুহূর্তের মধ্যেই দেশি মুরগী বিক্রি শেষ হয়ে যাচ্ছে।। রোজার প্রথম দিন জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে সোনালী মুরগী ৩৫০ টাকা ও ব্রয়লার কাঁচা মাংস ৩৪০ টাকা দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এ প্রসঙ্গে মুরগী ব্যবসায়ী মশিয়ার জানান, শুক্রবার সকালে মাত্র ১৬টি মুরগী কিনতে পেরেছি যা ৫ মিনিটেই বিক্রি হয়ে গেছে। আরেক ব্যবসায়ী মাহবুব জানান, রমজান মাসে দেশি মুরগীর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে বাজার ও আরতে ১ সপ্তাহ ধরে দেশি মুরগী পাওয়া যাচ্ছে না। গ্রামে গ্রামে গিয়েও গৃহস্থের বাড়িতে মুরগী মিলছে না। অন্যদিকে ডিমের বাজারেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। ব্রয়লারের ডিমের হালি ৪৫ টাকা ও দেশি মুরগীর ডিম ৭০ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা লিটন জানান, কাচা বাজার থেকে শুরু করে মুরগী পর্যন্ত সব কিছুর দাম বেড়েছে। দাম বাড়লেও বাজার মনিটরিং না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বেশি দামে পণ্য বিক্রি করছেন। তবে ব্যবসায়ীরা জানান, আড়তে দাম বেশি হওয়ায় বেশি দামে পণ্য বিক্রি করতে হচ্ছে।
আনোয়ারা নামে এক নারী বলেন, প্রথম রমজানে সবাই মিলে মাংস-ভাত খাবো এই আসায় বাজারে এসেছি ব্রয়লারের মুরগী কিনতে। তবে মুরগীর যে দাম বাধ্য হয়ে আধা কেজি কাঁচা ব্রয়লারের মাংস কিনলাম ১৭০ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা বেশি উৎপাদন কম হওয়ায় দাম বেড়েছে ব্রয়লারের। তা ছাড়া ফিডের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে।
এদিকে ফার্মের মালিক মনজু জানান, ফিডের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় আপাতত ফার্ম বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছি। মুরগীর পাশাপাশি বেড়েছে সব সবজির দাম। বেগুন ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, পটল ও কায়তা ৬০ টাকা, সজনা ১২০ টাকা করলা ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে আদা ও রসুনেরও। আদা ২০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেপে ছাড়া সব সবজির দাম ৫০ টাকার উপরে বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচা বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, দুই দিন আগে বেগুন ২০ টাকা দরে কিনলেও রোজার প্রথম দিন ৫০ টাকা দরে বেগুন বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়।
ক্রেতারা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে বাজার করা দুস্কর হয়ে পড়বে। নির্দিষ্ট আয়ের মানুষদের মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাড়াচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম।
এ ব্যাপারে জেলা ভোক্তা অধিকারেরর উপ-পরিচালক সামসুল আলম জানান, প্রতিদিনই বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। রমজান উপলক্ষে জিনিসপত্রের দাম বাড়ালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসআইএইচ