ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের আওয়ামী লীগ নেতার হুমকি
প্রায় আড়াই বছরের প্রেমের সম্পর্ক ভাটা পড়ায় ঠাকুরগাঁওয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে উঠেছেন এক কলেজছাত্রী। প্রেমিক রিয়াজুল ইসলাম (২০) সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের গোয়াবাড়ি গ্রামের মানিক হোসেনের ছেলে। গত বুধবার (২২ মার্চ) সকালে প্রেমিকা আইরিন আক্তার হ্যাপী (১৮) বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নেন। অন্যদিকে বিয়ের দাবিতে কলেজছাত্রীর অবস্থানের খবর পেয়ে বৃহস্প্রতিবার (২৩মার্চ) বিকালে প্রেমিক রিয়াজুলের বাড়িতে ছুটে যান স্থানীয় সংবাদকর্মীরা। সেখানে তথ্য সংগ্রহকালে ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন সংবাদকর্মীদের সঙ্গে মারমুখী আচরণ করেন এবং সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য হুমকি দেন।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় আরাই বছর ধরে ওই মেয়েটির সঙ্গে রিয়াজুলের প্রেমের সম্পর্ক। কিন্তু হঠাৎ প্রেমিকা আইরিন আক্তার হ্যাপী বুধবার সকালে এখানে এসে অবস্থান নেন। আর তাদের বিষয়টি গ্রামের সবাই জানে।
ওই কলেজছাত্রীর এক বান্ধবী বলেন, দশম শ্রেণিতে থাকা অবস্থায় রিয়াজুলের সাথে হ্যাপীর পরিচয় হয়। পরে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে তারা দুজনে একই কলেজে ভর্তি হন। তাদের বিষয়টি প্রায় সকলেই জানত। কিন্তু রিয়াজুল বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। পরে নিরুপায় হয়ে হ্যাপী তার বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়।
স্থানীয় সংবাদকর্মী সালাম রুবেল বলেন, বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে কলেজছাত্রীর অবস্থান এমন সংবাদ পেয়ে আমরা কয়েকজন ঘটনাস্থলে তথ্য নিতে গেলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন বলেন এ বিষয়টি আমি দেখছি তোরা চলে যা। বেশি বাড়াবাড়ি করলে সমস্যা হবে। এ সময় তিনি আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে কামাল হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ কামাল হোসেনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকার লোকজন। আওয়ামী লীগের পদ পেয়ে কাউকে মানুষ মনে করেন না তিনি। এলাকার সব বিষয়ে তিনি মাথা ঢোকান। একে-অপরের দ্বন্দ্ব লাগিয়ে ফায়দা নেন।
এ বিষয়ে জানতে গড়েয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আফিজার রহমান সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহ করবেই তাদের বাঁধা দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই। ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন কেন এমন আচরণ করলেন তা আমার জানা নেই। তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে তার এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রইছ উদ্দিন সাজু বলেন, বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে কলেজছাত্রীর অবস্থান বিষয়টি আমি শুনেছি। আর সাংবাদিকদের সাথে কামাল যে আচরণ করেছে সেটা তার করা উচিত হয়নি।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআইএইচ