পিপির উপর হামলার ঘটনায় আইনজিবীর সদস্য পদ স্থগিত
যৌতুক মামলায় শুনানীর সময় সরকার পক্ষে আপত্তি উত্থাপন করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন এ্যাডভোকেটের উপর হামলা চালিয়ে আহত করা ঘটনায় অভিযুক্ত আইনজিবী জাহিদুল মাহমুদ পলাশ এ্যাডভোকেটের সদস্যপদ এক মাসের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রংপুর আইনজিবী সমিতি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর আইনজিবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক এ্যাডভোকেট। এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশিত হলে তোলপাড় শুরু হয়।
রংপুর আইনজিবী সমিতির সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত অভিযুক্ত আইনজিবী পলাশ সদস্যপদ স্থগিত থাকাকালিন সময় রংপুর আইনজিবী সমিতির সদস্য হিসেবে কোন আদালত বা ট্রাইবুনালে মামলা পরিচালনা করতে পারবেন না। এ সংক্রান্ত পত্র রংপুরের জেলা ও দায়রা জজ, স্পেশাল জজ, জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট সহ সকল আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে আইনজিবী সমিতি সূত্রে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে রংপুর আইনজিবী সমিতির সভাপতি আব্দুল মালেক এ্যাডভোকেট জানান গত ২/৩/২৩ইং তারিখে দুপুর অনুমান ৩ টার সময় আইনজিবী পলাশের নেতৃত্বে শিক্ষানবিশ নুরল ইসলাম খন্দকার সহ রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিশেষ পিপি সিনিয়র আইনজিবী জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন এ্যাডভোকেটের অফিসে প্রবেশ করে তাকে শারীরীক ভাবে লাঞ্চিত ও কিলঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে।
এমনি লিখিত অভিযোগ আইনজিবী সমিতির কাছে করেন ভিটিম আইন জিবী তুহিন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫/৩/২৩ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সমিতির নির্বাহি কমিটির সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে অভিযুক্ত আইনজিবী পলাশকে ৭ দিনের মধ্যে কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়।
তিনি আরও বলেন অভিযোগে উল্লিখিত ঘটনার তথ্য চিত্র, ভিডিও ফেসবুক ও পত্রিকায় প্রচারিত হওয়ায় সমগ্র আদালত চত্বরে বিজ্ঞ আইনজিবী, মোহরারসহ বিচার প্রার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এমনি অবস্থায় গত ৭/৩/২৩ইং তারিখে রংপুর আইনজিবী সমিতির দুই শতাধিক সদস্যগনের উপস্থিতিতে এক বিশেষ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অভিযুক্ত আইনজিবী পলাশের কারণ দর্শানোর লিখিত জবাব নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অভিযুক্ত আইনজিবীর দাখিল করা জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে এক মাসের জন্য তার সদস্যপদ স্থগিত করার সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২ এর বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিনের সঙ্গে মঙ্গলবার বিকেলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জুনিয়র আইনজিবী পলাশের নেতৃত্বে তার উপর হামলা এবং প্রান নাশের চেষ্টার অভিযোগে তিনি রংপুর মেট্রো কোতয়ালী থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন। পুলিশ এখনও তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন আইনজিবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ তিনি নিয়েছেন সমিতির সিদ্ধান্ত তিনি মেনে নেবেন। তিনি বলেন, আইনজিবী পলাশের নেতৃত্বে তার উপর হামলার ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাকে হত্যার চেষ্টার ঘটনার প্রমান ভিডিও চিত্র। তিনি ন্যায় বিচার পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। ঘটনায় অভিযুক্ত দুই আইনজিবী পলাশ ও মানিকের সঙ্গে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়ায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
এএজেড