আদিতমারিতে ইউপি সচিবের নিয়ন্ত্রণে ১৩৪ ভিজিডি কার্ড!

ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে দুঃস্থ নারীদের (ভিজিডি) ১৩৪টি কার্ড মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বিতরণের অভিযোগ উঠেছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ৪ নম্বর সারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের বিরুদ্ধে। এদিকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ওই পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী। এরই মধ্যে প্যানেল চেয়ারম্যানের এধরনের একটি স্ট্যাটাস ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ২ হাজার ৩৮৭টি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে সারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদে দুঃস্থদের মাঝে ৪৩৪টি ভিজিডি কার্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির নাম ভাঙিয়ে ১৩৪টি কার্ড তার নিয়ন্ত্রণে রাখেন। তবে অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রাশিদা বেগমের সঙ্গে আঁতাত করে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ইউপি সচিব ১৩৪টি নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। সম্প্রতি ভিজিডি কার্ড বিতরণের সময় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরপর শুরু হয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের মাঝে চরম উত্তেজনা। তারা বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের এক কর্মচারী জানান, ইউপি সচিব আমাদের অফিসের ম্যাডামসহ একাধিক কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে কাজটি করেছেন। সম্প্রতি ওই ইউনিয়নে ভিজিডি কার্ড বিতরণের সময় ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যায়।
সারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শাহজাহান আলী বলেন, প্রশাসন ও জনপ্রনিধির নাম ভাঙিয়ে ১৩৪টি ভিজিডি কার্ড সচিব নিলেও এসব কার্ড তিনি কাউকে দেননি। মহিলাবিষয়ক অফিসের এক কর্মকর্তার সহায়তায় প্রতিটি ভিজিডি কার্ড থেকে ৬/৭ হাজার টাকার বিনিময়ে এসব নাম অন্তর্ভুক্ত করেছেন সচিব।
এ বিষয়ে ৪ নম্বর সারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সাইফুল ইসলামের সঙ্গে এসব বিষয় নিয়ে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমি এখানে চাকরি করতে এসেছি, আমি তো আর কাউকে চিনি না।
সারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম হুমায়ুন কবিরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও ফোন রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
আদিতমারী উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা রাশিদা বেগম বলেন, এসব নামের তালিকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিবের স্বাক্ষর হয়ে উপজেলায় জমা হয়। তবে তিনি একজনের নামের সুপারিশ করেছেন বলে দাবি করেন।
ভিজিডি কর্মসূচির সভাপতি ও আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জি. আর সারোয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।
এসএন
