আহমদিয়াদের উপর হামলা ঠেকাতে মুসলমানদের বাড়িতে সাদা-লাল পতাকা

পঞ্চগড়ের মিলগেট থেকে মাড়েয়া সড়কের আহমদ নগর, নতুন বন্দর, ফুলতলা এলাকাসহ তৎসংলগ্ন শালশিরি, সোনাচান্দি এলাকাতে সড়কের দুইধারে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ঝুলছে সাদা-লাল পতাকা। কোনোটাতে লাল গ্যাঞ্জি আবার সেন্ডো গ্যাঞ্জি। সেখানেও আহমদিয়া সম্প্রদায় নয়, এমন বাড়িতে বাড়িতে লাল-সাদা কাপড় টাঙানো দেখা গেছে।
গত শুক্রবার বিকালে হামলার আগে সাধারণ মুসলমানদের বাড়ি চিহ্নিত করতে সাদা-লাল পতাকা টানানো হয়। তবে সোমবার দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে ঘুরে বেশ কিছু বাড়িতে এখনো পতাকা ঝুলতে দেখা যায়। গত কয়েকদিন ধরে এসব পতাকা দেখে আহমদিয়াদের মনে সন্দেহ হয়। অনেকে অভিযোগ করে বলেন, হামলাকারীরা বাসার সামনে পতাকা ঝোলানো দেখে তাদের বাড়িতে হাত দেয়।
বোদা উপজেলার নতুনবন্দর এলাকার মকবুল হোসেন (৪৫) নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমাদের মনে হয় কাদিয়ানীদের জলসাকে কেন্দ্র করে আবারো হামলা হতে পারে। এ কারণে আমরা আমাদের বাড়ি চিহ্নিত করতে বাড়ির সামনে পতাকা ঝুলিয়েছি। আমরাও ভয়ে ছিলাম।
একই এলাকার কিনার উদ্দীন (৫৫) বলেন, অনেকে পতাকা ঝুলিয়েছিল তাই আমিও ঝুলিয়েছিলাম। তবে আমরা পতাকা নামিয়ে ফেলেছি। অনেকে এখনো নামায়নি। আমরা কোনো অশান্তি চাই না। কারো কোনো ক্ষতি আমাদের কাম্য নয়।
এদিকে শুক্রবার বিকালে আহমদিয়া সম্প্রদায়ের ঘরবাড়িতে হামলা করে লুটপাট করে জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ লোকজন। চারিদিকে হামলা আর অগ্নিসংযোগ করে পুরো এলাকা ধ্বংসস্তুপে পরিণিত করে। হামলাকারীদের হাত থেকে বাদ যায়নি কাদিয়ানীদের কলা বাগান, সুপারি বাগানসহ বিভিন্ন ফসল। তবে পতাকা ঝোলানো বাড়িগুলোতে কোনো ক্ষয়ক্ষতির চিহ্নই পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে আহমদিয়া মুসলিম জামাতের জনসংযোগ, বহিসম্পর্ক ও গণমাধ্যেম বিষয়ক সম্পাদক আহমেদ তবশের চৌধুরী বলেন, সাধারণ মুসলমানদের বাড়িতে পতাকা ঝোলানো হয়েছে গত শুক্রবার। পতাকা ঝোলানো বাড়িগুলোতে কোনো হামলা হয়নি। আমাদের বাড়িতে হামলা করে লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করে। অথচ তাদের বাড়িগুলোতে কোনো হামলাই হয়নি। তবে এসব আগে থেকে পরিকল্পিত করে হামলা করা হয়।
এ ব্যাপারে বোদা উপজেলার বেংহারি বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আলী বলেন, ‘ইউনিয়নের কিছু বাড়িতে এমন কাপড় টাঙানো দেখা গেছে। আমরা সেগুলো নামিয়ে নিতে বলেছি। অনেকে নামিয়েছেন। যারা নামাননি তারা শীঘ্রই নামবেন।
এসআইএইচ
