‘হামলাকারীরা আমাদের সব শেষ করে দিয়েছে’

শনিবার (৪ মার্চ) পুরো দিন পঞ্চগড় জেলা শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অবস্থান নেয়। সারাদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও রাতে হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে পড়ে ২ জন মুসলমানকে হত্যা করেছে কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের লোকজন।
এমন গুজবে হঠাৎ শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তেই দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। চারদিকে মানুষজন দৌড়ে পালিয়ে যেতে শুরু করে। পরে বিক্ষোভকারীরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এসময় তারা শহরের কদমতলা এলাকায় ওয়াকার সু হাউজে হামলা চালায়। হামলাকারীরা দোকানের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে মালামাল লুট করে। এসময় ওই সু হাউজের পাশে কাদিয়ানীদের দুটি দোকানেও ভাঙচুর ও দোকানপাটের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পরে পুলিশ হামলাকারীদের ধাওয়া দিলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
এদিকে রাতেই প্রশাসন ও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করে মানুষজনকে শান্ত হতে বলা হয়। অযথা জটলা না করে বাড়ি ফিরে যেতে অনুরোধ করা হয় তাদের।
ওয়াকার সু হাউজের ব্যবস্থাপক সুমন কুমার বলেন, শনিবার সন্ধ্যায় আমরা দোকান বন্ধ করে চলে যাই। পরে শুনতে পাই কারা যেন আমাদের দোকানে হামলা করেছে। এসে দেখি আমাদের সুন্দর সাজানো সু হাউজ একেবারে এলোমেলো। ভেঙে ফেলা হয়েছে হাউজের কাচের সেল। দোকানে ২০০ এর বেশি জুতা ও শতাধিক ব্যাগসহ নানা মালামাল নিয়ে গেছে। তারা আমাদের শেষ করে দিয়েছে। এতে আমাদের ৭০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় মৌখিকভাবে জানিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের নির্দেশনা পেলে আমরা মামলা করব।
ওয়াকার ও আরএফএলের রিটেইল ম্যানেজার আরিফ হাসান বলেন, আমি খবর পেয়ে ছুটে এসে দেখি সব শেষ। আসলে হামলাকারীরা কোন উদ্দেশে হামলা করল জানি না। এটা কোনো সভ্য মানুষের কাজ হতে পারে না। আমরা জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রেখেছি। বর্তমানে কোনো ভয়ভীতির কারণ নেই। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে আমরা মাঠে রয়েছি। তবে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা সদা তৎপর রয়েছি।
এসজি
