দিনের পর দিন খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

ভবন ফাটল ধরায় ও জরাজীর্ণ হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে মাঠেই পাঠদান করছে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার ৪৭ নম্বর টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ উপজেলায় বেশ কয়েকটি প্রাথমিকের নতুন ভবন হলেও ভাতুরিয়া ইউনিয়নের এই বিদ্যালয়টি অবহেলায় আর অব্যবস্থাপনায় রয়ে গেছে। ফলে দিনের পর দিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করাচ্ছেন শিক্ষকরা।
জানা যায়, ১৯৮৮ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। এর জন্য ১৯৯৩ সালে একটি ভবন নির্মিত হয়। এরপর ৩৪ বছরেও বিদ্যালয়টিতে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্লাস করতে এসে আমাদের ভয়ে আর আতঙ্কে থাকতে হয়। কখন যে উপর থেকে ভেঙে পড়ে। ভবনের রড দেখা যাচ্ছে, যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ঝুঁকি এড়াতে আমাদের মাঠে ক্লাস করান স্যাররা।
দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী হিরা মনির বাবা হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়টি এতই ঝুঁকিপূর্ণ যে, মেয়েকে স্কুলে পাঠানোর পর বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত খুবই চিন্তিত থাকতে হয়। তাই আমি সরকারকে বিনীত অনুরোধ করছি বিদ্যালয়টিকে দ্রুত সংস্কার করার।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজালাল বলেন, ‘বিদ্যালয়ে যোগদানের প্রায় ৩৪ বছর অতিক্রম হয়েছে। ভবনের নাজুক অবস্থা দেখে উপজেলা শিক্ষা বিভাগে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের নিয়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে আবেদন করেছি কিন্তু কোনো প্রতিকার পাইনি। বিদ্যালয়ে এসে সবসময় চিন্তিত থাকি কখন না জানি বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালে উপজেলা প্রকৌশলী অফিস ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছেন কিন্তু তা আজ পর্যন্ত মেরামত বা সংস্কার করা হয়নি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি সভাপতি হয়ে ব্যর্থ হয়েছি তা বলব না। আমার পূর্বেও যারা ছিলেন তারা বহু চেষ্টা করেছেন। তারপরও ফলাফল আসেনি।’
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আজিজার রহমান বলেন, টেংরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সংস্কারের ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দ্রুতই এর সমাধান হবে।
এসআইএইচ
