মনোনয়ন পত্র তোলেননি জাতীয় পার্টির মানিক!
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সোমবার পর্যন্ত মেয়র পদে জাতীয় পার্টির চুড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়া মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ মনোনয়ন ফরম তুলেছে ৭ জন। তবে আলোচনায় থাকা জাতীয় পার্টির বহিস্কৃত নেতা আব্দুর রউফ মানিক সোমবার (সন্ধা ৭ টা পর্যন্ত) মনোনয়ন ফরম তোলেন নি।
অন্যদিকে এই নির্বাচনে এবার ৩৬ টি কেন্দ্র এবং ৩২ হাজার ৫৭৫ জন ভোটার বৃদ্ধি হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা আফতাব হোসেন জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধাা পর্যন্ত মেয়র পদে ৭ জন মনোনয়ন ফরম তুলেছেন। এরমধ্যে সোমবার তুলেছেন লতিফুর রহমান মিলন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী।
এছাড়া মনোনয়ন ফরম তুলেছেন জাতীয় পার্টি মনোনিত লাঙ্গল প্রতিকের প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আমিরুজ্জামান পিয়াল, জাকের পার্টির মোঃ খোরশেদ আলম, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এমএ মজিদ, জামায়াতে ইসলামীর রংপুর মহানগরীর সাবেক আমীর মাহবুবার রহমান বেলাল এবং ব্যবসায়ি মেহেদী হাসান বনি। এর মধ্যে জামায়াত নেতা বেলাল ও ব্যবসায়ি বনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর থেকে সোমবারের সন্ধা ৭ টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুযায়ী আলোচিত জাতীয় পার্টির বহিস্কৃত নেতা একেএম আব্দুর রউফ মানিক মেয়র পদের জন্য কোন মনোনয়ন পত্র তোলেন নি। কিন্তু রোববার চাউর হয়েছিল তার পক্ষে মনোনয়ন পত্র তোলা হয়েছে। কিন্তু সে বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে।
এদিকে তিনি আদৌ মনোনয়নপত্র তুলবেন কিনা কোন সূত্রই তা এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত নিশ্চিত করেনি। তবে তার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, মেয়র পদে তাকে তারা লড়তে দিতে চান না। ভোটের সময় তাকে তারা আমেরিকায় পরিবারের কাছে রাখতেও চান বলে জানায় সূত্রটি। কিন্তু একটি পক্ষ তাকে জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দিতা করাতে চেস্টা চালাচ্ছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর সূত্র আরও জানিয়েছে, সোমবার সন্ধা পর্যন্ত সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৫৭ এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৬ জন মনোনয়ন ফরম তুলেছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন জানিয়েছেন, এবার ভোটার ও কেন্দ্র সংখ্যা বেড়েছে। গতবছর ১৯৩ টি কেন্দ্র থাকলেও ৩৬ টি বেড়ে এবার কেন্দ্র সংখ্যা হয়েছে ২২৯টি। এছাড়াও এবার স্থায়ী ভোট কক্ষ করা হয়েছে ১ হাজার ৩৪৯ টি এবং অস্থায়ী ভোট কক্ষ আছে ১৯৩ টি।
গত ২০১৭ সালের নির্বাচনের ভোটার সংখ্যার তুলনায় এবার ভোটার বেড়েছে ন৩২ হাজার ৫৭৫ জন। গত বছর ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৮৯৪ জন ভোটার থাকলেও এবার ভোটার সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৯ জনে। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন এভং মহিলা ২ লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও জানান, এখন পর্যন্ত প্রার্থীরা আচরণবিধি মেনে মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আমরা আইনানুগ, গ্রহনযোগ্য, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সকল ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছি। যেহেতু এই সিটিতে এবার সব কেন্দ্রে ইভিএমএ ভোট হবে, সেকারণে ইভিএম সম্পর্কে ভোটার এবং ভোটগ্রহন কর্মকর্তাদের পরিচিত করে তুলতে সকল ধরনের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
আগামী ২৯ নভেম্বর মনোনয়ন পত্র উত্তোলন ও দাখিলের শেষ দিন। ৮ ডিসেম্বর প্রত্যাহারের শেষ দিন। ৯ ডিসেম্বর দেয়া হবে প্রতিক বরাদ্দ। আগামী ২৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ভোট।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, তৃতীয় বারের মতো এই নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভোট। দ্বিতীয় নির্বাচন ২০১৭ সালের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ১ লাখ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন জাতীয় পার্টি মনোনিত প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। ইতোমধ্যেই তাকে জাতীয় পার্টির চুড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।
এএজেড