কম্বল তৈরি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের তাঁতীরা

বাজারে নিম্নমানের গরম কাপড়ের (কম্বল) ছড়াছড়ির কারণে টেকশই ও ভালো মানের কম্বল তৈরি করে বিক্রয়ে হিমশিম খাচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের তাঁতীরা। কমেছে বেচা-কেনা। ফলে পুরোনো এই পেশা ছেড়ে যুক্ত হচ্ছেন অন্য পেশায়। হারাতে বসেছে ঐতিহ্য।
তাঁতীদের তথ্য মতে, গত তিন বছর আগেও এই পেশায় নিয়োজিত ঠাকুরগাঁওয়ের কেশুরবাড়ী গ্রামের পাঁচ শতাধিক তাঁতী কম্বল তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বর্তমানে ওই গ্রামের দুই শতাধিক তাঁতী কম্বল তৈরি করছেন।
জানা গেছে, একটা সময় সকাল হলেই তাঁতের খুটখাট শব্দে ঘুম ভাঙতো কেশুরবাড়ী গ্রামের মানুষের। শীত আসার আগে থেকেই গরম কাপড় (কম্বল) তৈরিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করতেন গ্রামটির পাঁচ শতাধিক তাঁতী। কিন্তু বর্তমানে বাজারে নিম্নমানের কম্বল কম দামে বিক্রি হওয়ায় বাজারের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না তারা।
অন্যদিকে হাতের তৈরি ভালো মানের কম্বল তৈরি করেও কাঙ্খিত দাম না পাওয়া এবং পুঁজির অভাবে কাঁচামাল সংগ্রহ করতে না পারায় এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় ঝুকছেন অনেকে। তবে স্বল্প সুদে ঋণ এবং শীতকালীন সময়ে সরকারিভাবে তাদের তৈরি করা কম্বল ক্রয় করলে এই ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখা সম্ভব বলে মনে করেন তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা।
তাঁতীরা জানান, পুঁজি স্বল্পতার কারণে তারা তাদের ব্যবসাকে বড় করতে পারছেন না। কম্বল তৈরি করতে জিনিসের দাম বাড়লেও বাড়েনি কম্বলের দাম। এ ছাড়াও পাইকারদের দৌরাত্মের কারণে তারা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বর্তমানে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা এ পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তা ছাড়াও তারা তেমন কোনো সরকারি সুযোগ সুবিধাও পাচ্ছেন না।
এদিকে ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে তাঁতীদের কম্বল তৈরির পাশাপাশি অন্যান্য শীত বস্ত্র তৈরির পরামর্শসহ স্বল্প সুদে ঋণের সুবিধায় আনা হচ্ছে বলে জানান বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক নুরেল হক।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, শিল্প বিকাশে সহযোগিতা করা হবে তাঁতীদের।
এসআইএইচ
