রসিক নির্বাচনে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের আশায় বিএনপি

রংপুর সিটি করর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়ার আশায় চাতকপাখির মতো তাকিয়ে আছেন বিএনপি নেতারা। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএনপির এমন সিদ্ধান্তে প্রচার থেকে সাময়িক সরে এসেছেন নেতারা। এখন তারা কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তাকিয়ে আছেন। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে যাওয়ার ইঙ্গিত আসে।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সাফ কথা, দেশে নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
রংপুর সিটি নির্বাচনের হাওয়া বইছে নগরীতে। জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল আলম নাজু ও গত দুই সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক কাওছার জামান বাবলা আগাম প্রচারে রয়েছেন।
নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফেস্টুন ও বিলবোর্ডে ব্যানার লাগান তারা। তাই বিগত সময়ের দুটি নির্বাচনের মতো এ নির্বাচনেও ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্ধিতা করার আভাস আসে। গত ২৯ অক্টোবর রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে বিএনপির গণসমাবেশে তত্ববাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আগে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। ৭ নভেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণা করা হয়। তফসিলে ২৭ ডিসেম্বর সিটিতে ভোট নেবে ইসি।
নির্বাচনে জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।আওয়ামী লীগের একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী প্রচারণা চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার বোর্ড দু-এক দিনের মধ্যে সভা করে প্রার্থী চূড়ান্ত করবে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে রসিক নির্বাচনে অংশ নেওয়ার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে আগাম প্রচারণায় থাকা বিএনপি নেতাদের।
রংপুর জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল আলম নাজু বলেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশে তত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না এমন ঘোষণা দিয়েছেন। কেন্দ্রের নির্দেশনার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমি রংপুর সিটি নির্বাচনের প্রচারণা থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।
রংপুর মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাওছার জামান বাবলা বলেন, গত দুটি সিটি নির্বাচনে আমি অংশ নিয়েছিলাম। দুটি নির্বাচনেই কারচুপি করে আমাকে হারানো হয়েছে। এ নির্বাচনে আমাকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা নগরীতে বিলবোর্ডে আমার প্রচারণা ব্যানার লাগিয়ে ছিলেন। রংপুরে ধানের শীষের অনেক ভোট রয়েছে। আমি যদি নির্বাচনে না যাই তবে তারা কোথায় ভোট দেবেন? তারা চান আমি যেন নির্বাচন করি। আমিও দলীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।
রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু বলেন, ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন থেকে দেশের নির্বাচন গুলোতে জনগণের রায়ের প্রতিফলন হচ্ছে না। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে না। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে মাঠে নেমেছি। যতদিন নিরপেক্ষ তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা না হচ্ছে আমরা কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না।
বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে আমরা অংশ নেব না। যদি দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ নির্বাচনে যায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
এএজেড
