পূর্ণাঙ্গ তফসিলের আগেই রসিকে সরগরম মাঠ
রংপুর সিটি করপোরেশন (রসিক) নির্বাচনের পূর্ণাঙ্গ তফসিলের আগেই সরগরম মাঠ। নগরীজুড়ে দলীয় মনোনয়ন প্রার্থীদের দৌড় ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিটি করপোরেশন রংপুর। ইতোমধ্যে প্রচারণা, সভা-সমাবেশ শুরু করে দিয়েছেন মেয়র প্রার্থীরা।
এবারের নির্বাচনে কারা মেয়র প্রার্থী হবেন এ নিয়ে চলছে আলচনা। প্রচারণায় নেমেছেন আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন দলের প্রায় এক ডজন নেতা।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত। গত ২৫ অক্টোবর রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তার নাম ঘোষণা করেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
রবিবার (৬ নভেম্বর) বিকালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ মাঠ থেকে সহস্রাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে শোভাযাত্রা বের করেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এসময় তিনি বলেন, আমার সময়ে নগরীর ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বর্ধিত এলাকাগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এবার কাজ করা হয়েছে। করোনা মহামারির মধ্যেও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং জনসেবা বন্ধ ছিল না। যেকোনো সময়ের চেয়ে বর্তমান পরিষদ উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের বিচার বিশ্লেষণে এগিয়ে আছে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নগরবাসী এবারও আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন।
আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান সফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আতাউর জামান বাবু এবং রংপুর জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এম এ মজিদ।
মহানগর জামায়াতের সাবেক আমির মাহবুবুর রহমান বেলাল নগরবাসীর দোয়া ও সমর্থন কামনা করে পোস্টার সাঁটিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির সাবেক কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক পৌর মেয়র আবদুর রউফ মানিক, তরুণ ব্যবসায়ী ও সংগঠক তানবীর হোসেন আশরাফি, নারী নেত্রী সুইটি আনজুম,বাসদ থেকে আনোয়ার হোসেন বাবলু ও আব্দুল কুদ্দুস, ওয়াকার্স পার্টি থেকে কাজী মাজহারুল ইসলাম লিটন, ইসলামী আন্দোলন থেকে এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু, খেলাফত মজলিস থেকে উপাধ্যক্ষ তৌহিদুর রহমান মন্ডল রাজু এবং এনপিপির শফিকুল ইসলাম রাকুর নাম শোনা যাচ্ছে।
গত ৩০ অক্টোবর দুই শতাধিক ট্রাকে নৌকা প্রতীক নিয়ে শোভাযাত্রা করেছেন রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল। ভোট আমেজ শুরুর অনেক আগে থেকেই তিনি মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছেন। প্রতিদিন পাড়া-মহল্লায় উঠান বৈঠক করছেন।
তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, চার বছর ধরে নগরবাসীর কাছে গিয়ে বর্তমান সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরেছি। উঠান বৈঠক করে আসছি। তাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। আশা করি আমাকে মনোনয়ন দিলে নগরবাসী হতাশ হবে না।
রসিক নির্বাচনে মেয়র মনোনয়ন প্রত্যাশী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরিকল্পিত নগর উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক সাফিউর রহমান সফি বলেন, রংপুর সিটি করপোরেশনকে নিয়ে এখনই ভাববার সময়। কেননা আগামী প্রজন্মের জন্য বসবাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে হলে আমাদের যানজটমুক্ত,জলাবদ্ধতামুক্ত, পরিচ্ছন্ন, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিমুক্ত, জবাবদিহিমূলক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর পরিকল্পিত নগরী গড়তে হবে।
রবিবার বিকেলে নগরীর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তার সমর্থনে এক নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়ে তিনি ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন করেছেন। তিনি রংপুর বিভাগ, রংপুর সিটি করপোরেশন, ৪ লেন সড়কসহ অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। যে লক্ষ্য নিয়ে সিটি করপোরেশন গঠিত হয়েছে সেই কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি, উন্নয়ন করতে হলে আওয়ামী লীগের একজন মেয়র দরকার। তাই আর ভুলের মধ্যে না থেকে রংপুরের উন্নয়নের স্বার্থে নৌকার মেয়র নির্বাচিত করতে হবে।
এসজি