কালো মানবে পরিণত রিপন, সহযোগিতা চায় পরিবার

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের দরিদ্র ভ্যানচালক মহেন্দ্র রাম দাসের ছেলে রিপন দাস (১৩)। বৃক্ষ মানব থেকে এখন তিনি কালো মানবে পরিণত হয়েছেন। এটি একটি জটিল ও বিরল রোগ। দারিদ্রতার কারণে চিকিৎসা করাতে পারছে না তার পরিবার। বন্ধ হয়ে গেছে তার লেখাপড়া। বর্তমানে নিদারুণ কষ্টে কাটছে রিপনের জীবন। তার চিকিৎসা করাতে স্থানীয় বিত্তশালী ও প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চেয়েছে রিপনের পরিবার।
রিপন দাসের শরীর জুড়েই অস্বাভাবিকতা। হাত-পায়ে গাছের মতো শাখা-প্রশাখা। জন্মের ৩ মাস পর থেকেই রিপনের শরীরে গাছের শেকড়ের মতো লক্ষ্য করে পরিবার। যা পরে ট্রি ম্যান সিনড্রোম বলে শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, রিপনকে ২০১৬ সালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার প্লাস্টিক সার্জারিসহ ৩টি অপারেশন করা হয়। পরে ২০১৮ সালের দিকে কিছুটা সুস্থ হলে তাকে বাড়িতে নিয়ে এসে স্কুলে ভর্তি করা হয়। সে স্কুলে ভালো পড়াশোনা ও খেলাধুলা করত সহপাঠীদের সঙ্গে। দুই মাস আগে হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হয়। তারপর থেকেই রিপনের শরীরের চামড়া কালো হওয়া শুরু করে। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারেনি তার পরিবার।
রিপনের বাবা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ছেলেকে সুস্থ করতে সহায় সম্বল শেষ। অসহায় তিন সন্তানের জনকের চোখে-মুখে হতাশা। সরকারের সহায়তা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
অসুস্থ রিপন দাস জানায়, আগে তার হাত-পা গুলোতে শেকড় গজাতো। চিকিৎসা নিয়ে সে সুস্থ হয়ে উঠে। কিন্তু কিছুদিন থেকে তার শরীরের ত্বক কালো হয়ে যায় ও হাত-পাগুলো আগের মতো হয়ে যাচ্ছে। সে সুস্থ হয়ে আগের মতো স্কুলে যেতে চাই।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফয়সাল আজম মুঠোফোনে জানান, রিপন বর্তমানে যে সমস্যায় ভুগছেন। সেটি হচ্ছে স্থানীয় কবিরাজের কাছে তেল নিয়ে ব্যবহার করার কারণে তার ড্রাগ রিঅ্যাকশন। বর্তমানে তার ড্রাগ রিঅ্যাকশনের চিকিৎসা চলছে। সে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠবে কি না তা বলা যাচ্ছে না। তবে চিকিৎসা করে বা প্লাস্টিক সার্জারি করলে সে হয়তো ভালো থাকবে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সনাতন চন্দ্র রায় বলেন, মহেন্দ্র রাম দাস অন্যের জায়গায় বসবাস করে ভ্যান চালিয়ে কোনো মতো সংসার চালান। তার ছেলের রিপন বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছে। টাকার অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারছেন না। চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির বলেন, বিষয়টি মানবিক। সরকারি যেসব সাহায্য-সহযোগিতা আছে আমরা সেগুলো করব।
এসআইএইচ
