গোবিন্দগঞ্জে গুড়িয়ে দিয়েছে অবৈধ কাঠকয়লার কারখানা

পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসনের উদ্যোগে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পল্লীতে গড়ে ওঠা অবৈধ কাঠকয়লার কয়েকটি কারখানা গুড়িয়ে অভিযান দিয়েছে ভ্রাম্যমান আদালত। বুধবার (২ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের তিনটি গ্রামে গড়ে ওঠা বেশ কয়েকটি কারখানা ধ্বংসে এ অভিযান পরিচালিত হয়। বিকেল পর্যন্ত কয়েকটি কারখানা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ করেছেন, উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের আট-দশটি কারখানায় প্রতিদিন টনকে টন কাঁচা কাঠের গুড়ি পুড়িয়ে তৈরি হতো কাঠকয়লা। তারপর ট্রাকে ভরে দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে তোলা ব্যাটারি পোড়ানোর কারখানায় পাঠানো হতো সেগুলো। অবৈধভাবে পরিবেশ নষ্ট করে তৈরি ওই কয়লা দিয়ে আবার অবৈধভাবেই পোড়ানো হতো ব্যাটারির শিসা।
এলাকার বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ধার ঘেসে স্থাপিত কারখানাগুলোর ধোঁয়ায় শিশু শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণির মানুষ চরম স্বাস্থ্যঝুঁকির শিকার হন। তারা অভিযোগ করেন, কারখানা বন্ধ বা অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে এলাকাবাসীর শত অনুরোধেও কোন কাজ হয়নি। সকল প্রকার নিয়মনীতিকে এবং আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা কারখানাগুলো পরিবেশের চরম বিপর্যয় ঘটিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছিল। অবশেষে আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরীর বেশ কয়েকটি কারখানা গুড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন।
বুধবার (২অক্টোবর)দুপুরে জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জের গোপালপুর, জীবনপুর ও ছয়ঘরিয়া এলাকায় গড়ে ওঠা কয়েকটি কাঠকয়লা তৈরীর কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় চুল্লিগুলোর আগুন নেভানোর পর বুলডোজার দিয়ে কারখানার চিমনিসহ সকল স্থাপনা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানের সময় কারখানার মালিক ও শ্রমিকরা পালিয়ে যায়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ হোসেন জানান, স্থানীয় মানুষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই ধরণের কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। পরিবেশ ধ্বংসকারী এমন সকল অবৈধ কারখানা বন্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে।
অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ হোসেন জানান, অবৈধভাবে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরীর কারণে পরিবেশ দুষণসহ নানা ধরণের রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় এ অভিযান চালানো হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে অভিযান চালিয়ে উপজেলার সবগুলো কারখানা ধ্বংস করা হবে।
এএজেড
