ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশের উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে টানা দুই দিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে শতশত হেক্টর জমির আমন ধান মাটিতে হেলে পড়াসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে জেলা জুড়ে জনজীবন চরম দুর্ভোগে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
বুধবার জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে-ভারী বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে ঘরবাড়ী গাছপালার ক্ষয়ক্ষতি না হলেও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শীর্ষ বেড়ানো শতশত জমির আমন ধান মাটিতে হেলে পড়ে আমন চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। শুধু আমন ধানের পাশাপাশি শাক-সবজিসহ আগাম শীত কালীন সবজিরও ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা চরম দুচিন্তায় পড়েছেন।
বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে হেলে পড়া ধানের ধানের অর্ধেক ফসল আসবে না বলে জানান আমন চাষিরা। এ ছাড়া দমকা বাতাসে বেগুন, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মরিচ, লালশাকসহ অন্যান্য শাক-সবজীর পাতা ছিঁড়ে যাওয়া, হেলে পড়াসহ ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার কুরুষাফেরুষা গ্রামের কৃষক ধীরেন্দ্র নাথ রায় ও বজলু মিয়া জানান, ধার-দেনা করে আমন ধান জমিতে লাগাইছি। হঠাৎ দমকা-বাতাসে খেতের সমস্ত ধান গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। এ বছর পেটের ভাত জোগার হবে কিনা তা নিয়ে আমরা চরম দুঃচিন্তায় আছি।
একই উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কুরুষাফেরুষা কৃষক আলম মিয়া, গোরকমন্ডল গ্রামের কৃষক নুরজামাল ও কৃষক মোশারফ হোসেন জানান তাদের প্রত্যেকের দেড় থেকে দুই বিঘা করে আমন খেত দমকা বাতাসে হেলে পড়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফসলের ক্ষতি হওয়ায় আমরা বড় দুচিন্তায় আছি। আর কয়েকদিন পরেই খেতের ধান পাঁকতো। ঝরে সব কিছুই শেষ।
নাগেশ্বরী উপজেলার গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া ও সুভাষ চন্দ্র রায় জানান,ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে তাদের প্রত্যেকের দেড় বিঘা জমির আদা পাকা আমন মাটিতে পড়ে ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তারা আরও জানান,তাদের এলাকার শতশত কৃষকের আমন ধান দমকা বাতাসে হেলে পড়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গেলে পড়া ধানের চার ভাগের এক ভাগ ফলন আসতে পারে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত, এ বছর কুড়িগ্রাম জেলা জুড়ে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৫ হেক্টর জমিতে চাষিরা আমন ধানের চাষাবাদ করেছে। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়,বৃষ্টিপাত ও দমকা বাতাসে জেলার নয় উপজেলায় ১ হাজার ৫৫৯ হেক্টর জমির আমন ধান গাছ মাটিতে হেলে পরেছে। আমরা নয় উপজেলার কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের হেলে পড়া ধান গাছগুলো পরিদর্শন করছে। সেই সাথে হেলে পড়া ধান গাছগুলো ছোট ছোট করে আঁটি বেঁধে তুলে দেওয়ার পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। ধান গাছ গুলো তুলে দিলে কিছুটা রক্ষা পাবে কৃষক।
এএজেড