রংপুরে কারাগারের আদলে রেস্টুরেন্ট
রংপুর নগরীর পার্কের মোড় এলাকায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশ পথের কাছেই কারাগারের আদলে অভিনব কায়দায় স্থাপন করা হয়েছে ‘কারাগার রেস্টুরেন্ট’। রেস্টুরেন্টের ভেতরে রয়েছে হাজতখানা, ফাঁসির মঞ্চ। রেস্টুরেন্টটির ডেকোরেশনের কিছু অংশ দেখে কারাগার মনে হলেও বস্তুত এটি একটি রেস্তোরাঁ। উৎসুক মানুষ এখানে রেস্তোরাঁর খাবার জেলে বসে খেয়ে কারাগারের জীবন বৈচিত্র্য উপলব্ধি করছেন।
রংপুর নগরীর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন কারাগার নামে রেস্তোরাঁ চালু করেছেন এক ব্যক্তি। কারাগারের হাজতের মতোই সাজিয়েছেন রেস্তোরাঁর কক্ষগুলোকে। লোহার মোটা রডের গ্রিলে আবদ্ধ কক্ষে মাথা নিচু করেই প্রবেশ করতে হয়। ভেতরে প্রবেশ করলে মনে হবে যেন কারাগারের মধ্যে আছি। এ ছাড়াও রয়েছে কৃত্রিমভাবে তৈরি ফাঁসির মঞ্চ। নতুন হওয়া এই রেস্তোরাঁয় আসেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। অনেকেই অতি উৎসাহে ছবি তোলেন বন্দি কারাগারে আটক থাকার দৃষ্টি ভঙ্গি করে।
এই কারাগার রেস্তোরাঁয় খেতে আসা গ্রাহকরা বলেন, সত্যিকার কারাগারে যেতে চাই না। মূলত মজা করতেই এখানে আসা। এখানে রয়েছে চাইনিজ ও দেশীয় খাবার। এখানকার রান্নার মান খুবই ভালো সুস্বাদু।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বীথি হোসাইন ও তার বান্ধবীরা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এর ছবি দেখেছি। এরপর আগ্রহ দুচোখে দেখার, যেন সত্যিকার কারাগারে আছি। একটু মজা করার জন্য এসেছি। অনেক ছবি তুলেছি আমরা। ফাঁসির মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়েও ছবি তুলেছি। চিকেন বার্গার খেয়েছি আর কোল্ড ড্রিংক পান করেছি।
কারাগার রেস্তোরাঁর কথা শুনে এসেছেন রিপন ও আফরুজা দম্পতি বলেন, একবার পুলিশি ঝামেলায় পড়ে একরাত হাজতে থাকার অভিজ্ঞতা হয়েছিল। সে যেন অসহনীয় পরিস্থিতি। সারা রাত মশার কামড় আর দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে গেছিলাম। সে স্মৃতি এখনো মনে হলে শিউরে উঠি। রেস্তোরাঁটি ঠিক কারাগারের আদলেই তৈরি করা হয়েছে। প্রবেশ করতেই সেই পুরাতন স্মৃতি মনে জেগে উঠেছে।
কারমাইকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থী আপেল মাহমুদ ও আনোয়ারুল বলেন, ‘সত্যিকার কারাগারের স্বাদ নিতে চাই না। নকল কারাগারে অবস্থান করে নুডুলস খেয়ে কিছুক্ষণ অবস্থান করে ছবি তুলে চলে যাচ্ছি।’
কারাগার রেস্তোরাঁর কর্মচারী লোকমান বলেন, সব ধরনের খাবার এখানে পাওয়া যায়। দাম খরিদ্দারের সাধ্যের মধ্যে।
কারাগার রেস্তোরাঁর মালিক আমিনুর রহমান বলেন, ভিন্ন স্বাদ দিতেই নতুন ধারণা থেকে রেস্তোরাঁটি দিয়েছি। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসেন এখানে। ভেতরে ডেকোরেশনও ভালো হয়েছে। হাতের নাগালের দামের মধ্যে মানসম্মত খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।
এসএন