ঘুষ নেওয়া সেই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদের প্রকাশ্যে ঘুষ কেলেঙ্কারির তদন্তে দুটি কমিটি গঠন হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নবেজউদ্দিন জানান, ঘুষ কেলেঙ্কারির তদন্তে জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আলাদা আলাদা দুটি কমিটি গঠন হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের ১ সপ্তাহের মধ্যেই জেলা প্রশাসন থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অসুস্থ থাকায় তদন্তকাজ শুরু করতে বিলম্ব হচ্ছে বলে জানান এই শিক্ষা কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান,ঘুষ কেলেঙ্কারির ঘটনায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। ফাইল তৈরি হচ্ছে। বিভাগীয় মামলাসহ তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের একটি তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন নীলফামারীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(শিক্ষা ও আইসিটি) মির্জা মুরাদ হাসান বেগ।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।অপর তদন্ত কমিটির চিঠি এখনও হাতে পাননি বলে জানান জেলা শিক্ষাকর্মকর্তা।
এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিলো। গত ২৪ আগস্ট ভাইরাল হওয়া ভিডিওচিত্রে, নিজ অফিসে বসেই প্রকাশ্যে ঘুষের টাকা গুনে গুনে নিতে দেখা যায় নুর মোহাম্মদকে।
জানা গেছে, উপজেলার ৮৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় মেরামতে বরাদ্দ এসেছে দুই লাখ টাকা করে। রুটিন মেইনটেন্যান্স বাবদ ৯৯টি বিদ্যালয় পেয়েছে ৪০ হাজার টাকা করে। স্লিপ বাবদ ৪০ হাজার টাকা করে পেয়েছে ২১৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়। এসব টাকা ৩০ জুন ২০২২ সালের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের হিসাব নম্বরে পাঠানোর কথা ছিল।
কিন্তু ডিমলা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ ৩০ জুনের মধ্যে একটি বিদ্যালয়ের টাকাও ছাড় করেননি। টাকা ছাড়ের ক্ষেত্রে তিনি শর্ত দেন তিনি শর্ত দেন, মেরামতকাজের জন্য ৮৮টি বিদ্যালয়কে ১২ থেকে ২০ হাজার টাকা করে দিতে হবে।
পাশাপাশি স্লিপের টাকার চেকের জন্য বিদ্যালয়প্রতি ৫ হাজার, রুটিন মেইনটেন্যান্স চেকপ্রাপ্তির জন্য বিদ্যালয়প্রতি ৬ হাজার করে টাকা দিতে হবে। সে অনুযায়ী উপজেলার ২১৭ টি প্রাথমিক স্কুল থেকে ২০ লাখ টাকার উপরে ঘুষ নিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ।
ওই শিক্ষা কর্মকর্তা সরাসরি প্রধান শিক্ষকদের মোবাইলে ফোন করে নিজ অফিসে ডেকে ঘুষের এসব টাকা নেন। তার অফিসে বসে প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহণের ভিডিও এবং শিক্ষকদের সাথে ঘুষ নিয়ে দরদামের ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় উপজেলাজুরে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এএজেড