বড় বোনের পর ছোট বোনের মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন পূরণ
দিবা ইসলাম। ছবি: ঢাকাপ্রকাশ
আমরা যেন ডাক্তারি পড়াশোনা করি, সেজন্য ছোটবেলা থেকেই আব্বু-আম্মু উৎসাহ দিয়ে এসেছে। তাঁদের কথা মতো সব সময় আমরা ভালো করে পড়াশোনা করেছি। আপু দুই বছর আগে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছে, এবার আমিও চান্স পেলাম। এখন আমাদের চেয়ে আব্বু-আম্মুই বেশি খুশি।’
কথাগুলো বলছিলেন নওগাঁর মেয়ে দিবা ইসলাম। এবারের মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। বড় বোন রাহমানিয়া ইসলাম রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ২০২১-২০২২ সেশনের শিক্ষার্থী রাহমানিয়া বর্তমানে এমবিবিএস তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
তাঁদের সাফল্যের পিছনে রয়েছে নিজেদের চেষ্টা আর বাবা-মার সংগ্রাম। তাঁদের বাড়ি নওগাঁ সদর উপজেলার রামরায়পুর সরদারপাড়া গ্রামে। বাবা আসাদুল ইসলাম রামরায়পুর দিঘীরপাড় উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। মা দেওয়ান মোসলেমা বেগম গৃহিনী। মা-বাবা আর দুই বোনের সংসার তাঁদের।
দুই বোনই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে পড়াশোনা করেছেন নওগাঁ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে। ওই প্রতিষ্ঠান থেকে দুইজনেই প্রাথমিক ও জেএসসিতে জিপিএ-৫ ও মেধাবৃত্তি পেয়েছেন। একই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসিতেও পান জিপিএ-৫। আবার উচ্চমাধ্যমিকেও দুই বোন একই প্রতিষ্ঠান রাজশাহী কলেজে পড়াশোনা করেছেন। সাফল্যের ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রেখে রাজশাহী কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে পাশ করেন।
সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বড় বোন রাহমানিয়া ইসলাম দোলা ২০২১-২০২২ সেশনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। বড় বোনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবার মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মেডিকেলে পড়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে ছোট বোন দিবা ইসলাম। দিবা রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
দিবার বাবা আসাদুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘আমার দুই মেয়ে যেন চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে পারে, এটা আমাদের একটা বড় স্বপ্ন। ওদের দুজনেরও স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। আমার দুই মেয়েই বেশ বুদ্ধিদীপ্ত এবং পড়াশোনায় মনোযোগী। ওদের মা দুজনের পেছনে অনেক সময় দিয়েছে। বড় মেয়ের পর ছোট মেয়েটাও মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পাওয়ায় পরিবারের সবাই অনেক খুশি। এখন ওরা যাতে করে ভালো করে চিকিৎসাশাস্ত্রের পড়াশোনা শেষ করে মানুষের সেবা করতে পারে এটাই আমাদের চাওয়া।’
দিবা ইসলাম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। বড় আপু যখন মেডিকেল ভর্তির চান্স পেল। তখন আমার চিকিৎসক হওয়ার আকাঙ্খা আরও বেড়ে যায়। পড়াশোনায় মনোযোগ আরও বাড়িয়ে দেই। অবশেষে সেই স্বপ্ন ধরা দেওয়ায় এখন অনেক ভালো লাগছে। আব্বু-আম্মুও অনেক খুশি।’
দিবা বড় বোন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী রাহমানিয়া ইসলাম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘আমাদের সাফল্যের পেছনে বাবা-মার অবদানই বেশি। তাঁরা অনেক কষ্ট করে আমাদের বড় করেছেন। এছাড়া আমাদের শিক্ষকসহ আরও অনেকেই উৎসাহ দিয়েছেন। তাঁদের কষ্টের কথা মাথায় রেখে আমরা স্বপ্ন পূরণ চেষ্টা চালিয়ে যাব।’