ট্রাকসহ ৫৮ টন চাল উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৬
ছবি : ঢাকা প্রকাশ
চাল আত্মসাৎ করার অভিযোগে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বগুড়ার আদমদীঘি থানা পুলিশ। সেই সাথে দুটি ট্রাকসহ ৫৮ টন চাল উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার ১২ জানুয়ারি নওগাঁ শহর ও বগুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগের প্রেক্ষিতে আদমদীঘি থানা পুলিশ নওগাঁ জেলা পুলিশের সহযোগীতায় দিনব্যাপী এই অভিযানটি পরিচালনা করেন।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার (৮ জানুয়ারি) আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারের মেসার্স সালমান অটোমেটিক রাইস মিলস্ এর ১৪টন ও একই পরিমাণ চাল মেসার্স বুশরা এগ্রো ফুডস্ রাইচ মিলের এবং মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) বৈশাখী অটো রাইচ মিলস ৩৮ টন চাল ঢাকার বিভিন্ন কোম্পানীতে ডেলিভারি দেওয়ার জন্য ট্রাকযোগে পাঠানো হয়।
কিন্তু গত শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) পর্যন্ত চালগুলো ওই সকল কোম্পানিতে পৌঁছায়নি। চালগুলো নির্দিষ্ট সময়ে না পাওয়ার কারণে তারা এখানকার অটো মিল মালিকদের জানায়। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় রাইচ মিলগুলোর প্রতিনিধিরা থানায় অভিযোগ করেন।
অভিযোগের ভিত্তিতে আদমদীঘি থানা পুলিশ নওগাঁ জেলা পুলিশের সহযোগীতায় নওগাঁ জেলায় ও বগুড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দুটি ট্রাকসহ ৫৮ (আটান্ন) টন চাল উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় ওইসকল চাল আত্মসাৎ চক্রের ৬ সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, বগুড়া জেলার কাহালু থানার বিবিরপুকুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে আজমল হোসেন (৩৩), নহাজাল গ্রামের আবুল কালামের ছেলে নাজমুল হোসেন(৩৬), পূর্বপাড়া গ্রামের বাবু শেখের ছেলে লিটন শেখ (৩০) ও নওগাঁ জেলার সদর থানার চক-বাবিয়া এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে সুজন হোসেন (২৬)ও একই এলাকার সাইদুল ইসলমের ছেলে হৃদয় হোসেন (২০) এবং আনন্দনগর এলাকার আব্দুল সামাদের ছেলে হাসান (২৪)। তাদের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে।
বৈশাখী অটোমেটিক রাইস মিলের মালিক পক্ষের একজন রায়হান। তিনি বলেন, ঢাকার সততা নামের এক পার্টি আমাদের চালের অর্ডার দিলে আমরা চাল পাঠানোর জন্য দুটো গাড়ি ঠিক করি। গাড়ি দুটো ঠিক করে দেয় আনিস নামের একজন। এরপর আমরা গত মঙ্গলবারে প্রতি গাড়িতে ৩শত বস্তা করে মোট ৬শত বস্তা চাল লোড করে ছেড়ে দিই। কিন্তু কয়েক দিনেও ঢাকার নির্দিষ্ট জায়গায় গাড়ি দুটো পৌঁছেনি। এরপর আমরা আনিসকে বিষয়টি জানাই। এছাড়া আমরা জানতে পারি মেসার্স সালমান অটোমেটিক রাইস মিলস্ ও মেসার্স বুশরা এগ্রো ফুডস্ রাইচ মিলেরও চালের গাড়ি হারিয়ে যায়। পরবর্তীতে আমরা বিষয়টি থানা পুলিশকে জানাই। এরপর থানা পুলিশ ট্রাকসহ চালগুলো উদ্ধার করে।
আমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ রাজেশ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, স্ব স্ব মিল মালিকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা অভিযানে নামি। নওগাঁ জেলা পুলিশের সহযোগীতায় নওগাঁর একাধিক জায়গা থেকে ও বগুড়া জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ৬জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। তাদেরকে নিয়ে সারারাত অভিযান পরিচালনা করে দুটি ট্রাকসহ ৫৮টন চাল উদ্ধার করা হয়েছে। এঘটনায় আরও একজনসহ মোট সাত জনের নামে থানায় পৃথক ৩টি মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।