ছেঁড়া বস্তা সেলাই করে জীবন চলে ৫শ’ শ্রমিকের
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি করা বিভিন্ন পণ্য ঘিরে তৈরি হয়েছে বস্তার ব্যাপক চাহিদা। সেই চাহিদা সামনে রেখে হিলিতে গড়ে উঠেছে বেশকিছু পুরোনো বস্তার দোকান। এসব দোকানে ছেঁড়াফাটা বস্তা সেলাই করে ছেলেমেয়েদের পড়ালেখাসহ জীবিকা নির্বাহ করছেন পাঁচ শতাধিক নারী ও পুরুষ। একটা সময় এসব শ্রমিকের কেউ কেউ চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও এখন বস্তা সেলাইয়ের মতো বৈধ কাজ করে দারুণ খুশি তারা।
শ্রমিকরা সারা দিনে ১০০-১৫০ ছেঁড়াফাটা বস্তা সেলাই করে। এতে দিন শেষে সাড়ে ৩০০-৪০০ টাকা মজুরি পাই। তা দিয়ে সংসারের যাবতীয় মিটিয়ে দিন ভালোভাবেই চলে যায়।
বস্তা সেলাই করা শ্রমিক খোকন হোসেন বলেন, আমরা সারা দিনে ছেঁড়াফাটা বস্তা সেলাই করে ৩০০/৪০০ টাকা ইনকাম করি। এতে করে আমাদের সংসারও ভালোভাবে চলে এবং পকেট খরচের টাকা উঠে। সংসার চালাতে অসুবিধা হয় না।
সবুজ ইসলাম আরেক শ্রমিক বলেন, বাবা অসুস্থ কারণে বাবা সংসার চালাতে পারে না। এজন্য আমি পড়াশোনার পাশাপাশি বস্তা সেলাই করে সংসার চালাই। বস্তা সেলাই করে আগের থেকে অনেক ভালো আছি।
মোসলেমা বেগম বলেন, আমার বড় মেয়ে স্কুলে পড়াশোনা করে, আর ছোট ছেলে বাসায় থাকে। স্বামী না থাকার কারণে আমি বস্তা সেলাই করি ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা পাশাপাশি সংসারও চালাই। এতে করে আগের মতো আর দুঃখের দিন নেই। ছেলে মেয়ে নিয়ে এখন অনেক ভালো আছি।
বস্তা ব্যবসায়ী মিথুন সরকার বলেন, হিলি স্থলবন্দর এলাকায় ভারত থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানি হওয়ার কারণে বস্তার প্রয়োজন হয়। এ কারণে আমরা এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ছেঁড়াফাটা বস্তা সংগ্রহ করে থাকি। ছেঁড়াফাটা বস্তাগুলো শ্রমিকদের দিয়ে সেলাই করার পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করি। একই সঙ্গে হিলি স্থলবন্দরে বস্তা দিয়ে থাকি। এতে আমরা যেমন লাভবান হই শ্রমিকরা তেমন লাভবান হয়। এসব বস্তা পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে নবাবগঞ্জ, ফুলবাড়ী, ক্ষেতলাল, কালাই, বগুড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে থাকি। বাজারের সবকিছুর দাম বৃদ্ধি হওয়ায় বস্তার দামও বেড়েছে। আগে আমরা ছেঁড়াফাটা বস্তা কিনতাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা বর্তমানে তার দাম বেড়ে হয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
এসএন