হিলিতে ক্রেতা সংকটে গুদামেই নষ্ট হচ্ছে পেঁয়াজ

দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরে শারদীয় দুর্গাপূজার বন্ধে বাড়তি পেঁয়াজ আমদানি করে ক্রেতা সংকট দেখা দিয়েছে। এদিকে পেঁয়াজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা। বাইরে থেকে পাইকার না আসায় গুদামেই পচে নষ্ট হচ্ছে পেঁয়াজ। ৮/১০টাকা কেজি দরে বিক্রি করেও অনেক পেঁয়াজ ফেলে দিতে হচ্ছে। এতে করে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন আমদানিকারকরা।
হিলিতে পেঁয়াজ কিনতে আসা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শুনলাম হিলিতে নাকি পেঁয়াজের দাম কম। তাই বিরামপুর উপজেলা থেকে হিলি স্থলবন্দরে এসেছি পেঁয়াজ কিনতে। আড়তে বেছে বেছে পাঁচ বস্তা পেঁয়াজ কিনেছি ৮ টাকা কেজি দরে। এগুলো বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বাছাই করে ভালোগুলো হাটে বিক্রি করব। তাতে করে খরচ বাদ দিয়ে আমাদের কিছু লাভ হবে।
মিরাজুল ইসলাম নামে আরেক ক্রেতা বলেন, হিলির আমদানিকারকদের গুদামে গরমে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে প্রতি বস্তা ১০০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি করছে শুনে কিনতে এসেছি। ৪০০ টাকা দিয়ে দুই বস্তা কিনেছি। এগুলো বাসায় নিয়ে গিয়ে পচা পেঁয়াজগুলো ফেলে দিয়ে যেগুলো ভালো বের হবে সেগুলো খাওয়ার জন্য রেখে দেব। যেহেতু বাজারে ভালোমানের পেঁয়াজ ২০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। আর এখানে ২০০ টাকা বস্তা পেঁয়াজ যার কারণে কিনলাম, তাতেও লাভ।
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক হারুন উর রশীদ বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দর দিয়ে টানা ৮ দিন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে। যার কারণে বন্দর দিয়ে এসময়ে কোনো পেঁয়াজ আমদানি হবে না। দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বন্ধের আগে বন্দর দিয়ে বাড়তি পেঁয়াজ আমদানি করেন আমদানিকারকরা। কিন্তু দেশীয় পেঁয়াজের দাম কম থাকায় ও বন্ধের আগেই অধিকাংশ মোকামগুলোতে পেঁয়াজ কেনার ফলে নতুন করে মোকামগুলোতে পেঁয়াজের চাহিদা তেমন নেই।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যেসব পাইকাররা হিলি স্থলবন্দরে পেঁয়াজ কিনতে আসতেন, তারা এখন আসছেন না। এ কারণে বন্দরে পেঁয়াজের ক্রেতা সংকট তৈরি হয়েছে। এর উপর প্রচণ্ড গরমের কারণে গুদামেই পেঁয়াজ পচে নষ্ট হচ্ছে। সেই সঙ্গে ঘন ঘন লোডশেডিং গরম আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এতে করে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারকদের প্রায় ৫০০ টনের মতো পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে আমদানিকারকদের। শ্রমিক দিয়ে বাছাই করে কিছু ভালো পেঁয়াজ ৮/১০টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। আবার যেসব পেঁয়াজ খারাপ হয়ে গেছে এর মধ্যে কিছু কিছু পেঁয়াজ ১০০ বা ২০০ টাকা বস্তা হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। আবার যেগুলো একেবারেই খারাপ হয়ে গেছে সেগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এর কারণে ওই সময় থেকে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। তবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকারি ছুটির দিন ছাড়া বন্দরের ভেতরের কার্যক্রম চালু রয়েছে।
এসএন
