এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে ফিরে দেখল মায়ের রক্তাক্ত লাশ
মায়ের কাছে দোয়া চেয়ে পরীক্ষা দিতে যায় এসএসসি পরীক্ষার্থী আরিফা। জয়পুরহাট রামদেও বাজলা বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে পরীক্ষা শেষ করে বাসায় ফেরেন আরিফা। বাসায় এসে মা মা বলে চিকিৎসা করেও মায়ের কোনো সাড়া পান না। মায়ের রুমে প্রবেশ করেই দেখতে পায় রক্তাক্ত দেহ মেঝেতে পড়ে আছে। মায়ের লাশ দেখেই জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন আরিফা।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জয়পুরহাট শহরের জানিয়ার বাগান পারভিন ডাক্তার ভবনে হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। নিহত নারী হাফিজুলের স্ত্রী সাজেদা ইসলাম (৩৭)। দুই মেয়ে আর বড় মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ের আইইউ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ছোট মেয়ে জয়পুরহাট বালিকা সরকারি বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
ব্যাপারে স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, সাজেদা ইসলামের গ্রামের বাড়ি পাঁচবিবি উপজেলার আয়মা রসুনপুর। তার স্বামী ঢাকার কম্পানিতে চাকুরি করেন। তার বড় মেয়েও ঢাকায় থাকেন। ছোট মেয়ে আরিফাকে নিয়ে পারভিন ডাক্তারের বাসভবনে বাসা ভাড়া নিয়ে প্রায় একবছর যাবৎ ভারাটিয়া হিসাবে অবস্থান করেছেন।
ছোট মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার হলে যাওয়ার কারণে বাড়িতে সাজেদা ইসলামকে একা পায় কাজের মহিলা। সেই সুযোগ নিয়ে বাড়ির সোনা গহনা এবং টাকা লুট করেন। তারপর সাজেদা ইসলাম কে হত্যা করে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। তার ছোট মেয়ে আরিফা এসএসসি পরীক্ষা শেষে বাসায় ফেরার পর বাসায় তার মায়ের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায়। মেয়ের কান্নাকাটি দেখে প্রতিবেশিরা এসে পুলিশকে খবর দেন। এর পর সাজেদা ইসলামের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত সাজেদা ইসলামের মেয়ে আরিফা কান্নাকাটি করে বলেন, আমার মাকে এনে দাও! আমার মাকে দেখতে চাই। ঐ কাজের মেয়ে আমার মাকে হত্যা করে মেরে ফেলেছে। আমি তার শাস্তি চাই।
উল্লেখ্য, এসএসসি পরীক্ষার্থী আরিফার মায়ের এমন নির্মম হত্যাকান্ডে প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন, সহপাঠী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দ্রুত হত্যাকারীকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তির দাবি জানান।
এএজেড