দেশের বিভিন্ন এলাকার সীমান্ত অবৈধভাবে পার হওয়ার অভিযোগে ১২৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ৯ জন ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ ছাড়া ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ২৯৯ জন চোরাচালানিকে আটক করা হয়।
নভেম্বর মাসে বিজিবির অভিযানে তাদের আটকের পর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় একটি পিস্তল, ১১টি গান ও চারটি চাইনিজ কুড়াল।
বিজিবি সদর দফতরের তথ্য অনুযায়ী, অভিযানে চলতি বছরের নভেম্বর মাসে ৮৭ কোটি ৯৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা মূল্যের চোরাচালান পণ্য সামগ্রী, অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়।
জব্দকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে ১৩ লাখ ১২ হাজার ২৬৯টি ইয়াবা ট্যাবলেট, ৩ কেজি ২৩০ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস), ২৪ হাজার ৫৫০ বোতল ফেনসিডিল, ১৬ হাজার ২২৪ বোতল বিদেশি মদ, ১ হাজার ৪৩৬ ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৩৫৮ কেজি গাঁজা, ৮ কেজি ৩৪০ গ্রাম হেরোইন, ৯ হাজার ৯০২টি ইনজেকশন, ৫ হাজার ৬৯৮টি ইস্কাফ সিরাপ, ১ হাজার ৮৮৯ বোতল এমকেডিল ও কফিডিল, ৩৪ হাজার ২১৫টি ওষুধ, ৩৯ হাজার ৫৫৯টি অ্যানেগ্রা ও সেনেগ্রা ট্যাবলেট এবং ১০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৩টি অন্যান্য ট্যাবলেট।
জব্দ করা অন্যান্য চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৩ কেজি ২৯৪ গ্রাম স্বর্ণ, ৪৩ কেজি ৯৯৯ গ্রাম রূপা, ১ লাখ ২৩ হাজার ২৯৫টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ১ হাজার ৯২২টি ইমিটেশন গহনা, ৪ হাজার ১৬৪টি শাড়ি, ১ হাজার ৩৩টি থ্রিপিস ও শার্টপিস, ৩২০ মিটার থান কাপড়, ২ হাজার ২২৫ ঘনফুট কাঠ, ৪ হাজার ৫৫৮ কেজি চা পাতা, ১০০ কেজি গ্যামাক্সিন পাউডার, ৯ হাজার ৯৫০ কেজি কয়লা, ছয়টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, পাঁচটি প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস, নয়টি পিকআপ, ৪১টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ৬৫টি মোটরসাইকেল।
ওবায়দুল কাদের দেশেই আছেন দাবি সাংবাদিক ইলিয়াসের। ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেশেই আছেন বলে দাবি করেছেন প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন। তিনি সোমবার (৩ মার্চ) সকালে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এই দাবি করেন।
পোস্টে ইলিয়াস হোসাইন বলেন, "অত্যন্ত বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছি, ওবায়দুল কাদের দেশেই আছেন। তিনি দেশ ছেড়েছেন কিংবা মারা গিয়েছেন এসব খবর পরিকল্পিতভাবে ছড়ানো হচ্ছে।"
এর আগে, ওবায়দুল কাদের মারা গেছেন- এই দাবিতে ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে ৩টি ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তবে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার এ তথ্যটি মিথ্যা বলে জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, উক্ত গণমাধ্যমগুলো কোনো ফটোকার্ড কিংবা সংবাদ প্রকাশ করেনি। বরং সেসব গণমাধ্যমগুলোর ডিজাইন নকল করে আলোচিত ফটোকার্ডগুলো প্রচার করা হয়েছে।
রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, এ ধরনের দাবিগুলোর সত্যতা যাচাইয়ের পর কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে পাওয়া যায়নি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছিল ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক এক প্রতিবাদের দিন। স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে সারা দেশের মতো রাজধানী ঢাকার বাড্ডায়ও ঘেরাও কর্মসূচি পালিত হয়। সেই আন্দোলনে অংশ নেন সিএনজি চালক সুজন।
সকাল ৯টায় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার পর সকাল ১০টার দিকে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এ সময় পাশে থাকা এক ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লে সুজন নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাকে উদ্ধারে এগিয়ে যান। তখন পুলিশের ছররা গুলিতে তার শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা অজ্ঞান অবস্থায় দেয়ালের পাশে পড়ে থাকেন তিনি। বিকেল ৪টার দিকে নিরাপত্তা বাহিনীর তাণ্ডব কিছুটা কমলে তিনটি বাসার দেয়াল ভেঙে তাকে উদ্ধার করে আফতাব নগরের নাগরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা না পেয়ে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অতিরিক্ত আহতদের ভিড়ে সেখানেও ভর্তি না হওয়ায় তাকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সরকারি চিকিৎসা সেবা পেলেও অর্থাভাবে উন্নত চিকিৎসা সম্ভব হয়নি।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার অলোয়া ইউনিয়নের আকালু গ্রামের বাসিন্দা সুজনের বাবা মৃত আনছের আলী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে তিনি বড় এবং পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। বাবাকে হারানোর পর পরিবারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে প্রাইমারি স্কুলের পড়াশোনা ছেড়ে ঢাকায় রিকশা চালানো শুরু করেন। পরে তিনি সিএনজি চালানো শুরু করেন এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি অলোয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। বিএনপির সক্রিয় কর্মী হিসেবে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন।
বাড্ডার ঘেরাও কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পর পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন সুজন। তার শরীরে এখনো প্রায় ৩০০ স্প্লিন্টার রয়েছে। চলাফেরা করতে পারলেও প্রচণ্ড ব্যথার কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপন অসম্ভব হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, “আমি দরিদ্র মানুষ, কিন্তু অন্যায় সহ্য করতে পারি না। তাই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে গিয়েছিলাম। পুলিশের একতরফা গুলিতে ২৯৬টি স্প্লিন্টার আমার শরীরে লাগে। পরে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জ্ঞান ফেরে। এখনো শরীরে গুলির স্প্লিন্টার নিয়ে বেঁচে আছি, কিন্তু উন্নত চিকিৎসার অভাবে কষ্ট পাচ্ছি।”
অর্থাভাবের কারণে সুজন ও তার পরিবার চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছে। তার স্ত্রী নূপুর বলেন, “আমার স্বামী আহত হওয়ার পর থেকেই সংসারে কোনো আয় নেই। বাবার বাড়ি বরিশাল থেকে ধার করে মাত্র ৮০০ টাকা সংগ্রহ করে ঢাকায় স্বামীকে উদ্ধার করতে যাই। এখন শ্বশুরবাড়ির মানুষদের কাছ থেকে ধার করে খেতে হচ্ছে। অনেক সময় রান্নার চুলো জ্বলে না। আমাদের তিন সন্তানের লেখাপড়াও বন্ধ হওয়ার উপক্রম। আমার স্বামী পঙ্গু হয়ে পড়েছে, শাশুড়িও প্যারালাইসিসে ভুগছেন। সংসার চালানোর মতো কোনো উপায় নেই।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের সম্পদ বলতে মাত্র তিন শতাংশ জমিতে জরাজীর্ণ একটি ছোট ঘর, যা যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। উপজেলা প্রশাসন থেকে একবার কিছু সহায়তা পেয়েছিলাম, যা তখন কাজে লেগেছিল। কিন্তু এখন কোনো সাহায্য পাচ্ছি না, ফলে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. পপি খাতুন বলেন, “বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এ উপজেলায় একজন নিহত ও ১৬ জন আহত হয়েছেন। সরকারি ও ব্যক্তিগতভাবে আহতদের সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তবে এখনো কর্মসংস্থানের কোনো সরকারি নির্দেশনা আসেনি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আহতরা কোনো সমস্যার সম্মুখীন না হন।”
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
আহত সুজন তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন। তাকে বিকাশ (০১৯২১-৬৯৪০৯১) অথবা সোনালী ব্যাংকের ভূঞাপুর শাখায় সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর (৬০০৩৮০১০২২৩৫৩) -এর মাধ্যমে সহায়তা পাঠানো যেতে পারে।
দেশের বিভিন্ন কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণের সর্বোচ্চ ভাড়া ৬ টাকা ৭৫ পয়সা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।
রোববার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, কৃষি বিপণন আইনের ক্ষমতাবলে এই ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন চলতি মৌসুমে প্রতিকেজি আলুর ভাড়া ৮ টাকা নির্ধারণের কথা জানিয়েছিল। সংগঠনটির সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু দাবি করেন, ২০২৫ সালের খরচ বিবেচনায় এই ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
তিনি ব্যাখ্যায় বলেন, “১০ হাজার মেট্রিক টনের একটি হিমাগারে ব্যাংক ঋণের সুদ কেজিপ্রতি আলু সংরক্ষণের খরচ হিসেবে রূপান্তর করলে তা দাঁড়ায় ৫ দশমিক ৮৬ টাকা। এর সঙ্গে বিদ্যুৎ খরচ ১ দশমিক ১০ টাকা যোগ করলে মোট খরচ হয় ৬ দশমিক ৯৬ টাকা।”
এর আগে, হিমাগারে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজশাহী, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর ও বগুড়ার কৃষকরা সড়কে আলু ফেলে বিক্ষোভ করেন।