বাবার মৃতদেহ উঠানে রেখে পরীক্ষার হলে মেরাজ
বাবার মৃতদেহ বাড়ির আঙ্গিনায়, বাবা হারানোর টাটকা কষ্ট বুকজুড়ে। চোখ বেয়ে নামছে অশ্রু। এ অবস্থায় এইচএসসি পরীক্ষা হলে বসেছেন মেরাজ হক। বৃহস্পতিবার (০২ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সাইফুর রহমান সরকারি কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনার দেখা মেলে।
বৃহস্পতিবার পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রায় সব শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাবা এলেও মিরাজের সঙ্গে ছিলেন তার খালু পলাশ হোসেন। তা চোখে পানি দেখে অনেকে প্রশ্ন করেছেন সে কাঁদছে কেন? মুখ খুলে মিরাজ কথা বলতে পারেনি। তার বাবার মৃত্যুর খবর কিছুক্ষণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষার হলেও সবাই জানতে পারে। খবর শুনে মিরাজকে সান্ত্বনা দেন সহপাঠীরা। এক হাতে চোখ মুছে অন্য হাতে কলম দিয়ে খাতায় লিখতে থাকে মিরাজ। সহপাঠীদের শান্তনায় ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে সে।
সহপাঠী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘মেরাজ হক পরীক্ষা হলে খাতায় লেখার সময় বাবার শোকে পুরো সময় কেঁদেছে। এ দৃশ্য দেখে তার সহপাঠী, শিক্ষকসহ পুরো কেন্দ্রে নেমে আসে শোকের ছায়া।’
মিরাজের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মিরাজের বাবার নাম শরিফুল হক মিল্টন (৪৭)। বধুবার রাত ১২টার দিকে হার্ট অ্যাটাক করে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। বাবাকে হারানোর পর ভেঙে পড়লেও কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষার হলে গেছে মিরাজ। আড়াইটার দিকে মেরাজের বাবা মিল্টনের লাশ পারিবারিক ভাবে দাফন করা হয়েছে।
সাইফুর রহমান সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পরীক্ষার্থী মিরাজ হকের বাবার মৃত্যুর বিষয়টি আমরা জেনেছি। আমরা তাকে সান্ত্বনা ও উৎসাহ দিয়েছি পরীক্ষা দিতে। তবে তার জন্য কোনো বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। সে সবার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষা দিয়েছে।’
/এএন