পেটের মধ্যে কাঁচির বয়স ২০ বছর!

অপারেশনের পর ২০ বছর ধরে পেটের মধ্যে কাঁচি বয়ে বেড়াচ্ছেন চুয়াডাঙ্গা জেলার নওদা হাপানিয়া গ্রামের বাচেনা খাতুন (৪৮)। গণমাধ্যমে এমন সংবাদের প্রকাশের পর অসুস্থ বাচেনার চিকিৎসার ভার নিয়েছেন অভিযুক্ত রাজা ক্লিনিকের মালিক ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা।
মঙ্গলবার ১১টার দিকে রোগীকে পাঠানো হয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়নের কাছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাচেনা খুতুনের ছোট ছেলে ইয়ামিন হোসেন।
ইয়ামিন হোসেন জানান, সকাল ১১টার দিকে তার মা ও বাবাকে পাঠানো হয়েছে চুয়াডাঙ্গাতে। সেখানে মায়ের সব ধরনের চিকিৎসা ভার নিয়েছে রাজা ক্লিনিকের মালিক।
ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা বলেন, ‘বিষয়টি জানার পরই রোগীকে আমার ক্লিনিকে নিয়ে আসা হয়েছে। একটি এক্সরে এবং বেশ কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এক্সরেতে একই ফল মিলেছে। তবে রোগীর ডায়াবেটিস রয়েছে। তারা সুগারের মাত্রা ছিল ২০। তারপরও তাকে বিশেষেজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রণের পর অস্ত্রপচারে যাবে চিকিৎসকেরা। অস্ত্রপচার করে কাঁচিটি বের করা হবে।’
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. ওয়ালিউর রহমান নয়ন বলেন, ‘ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। রোগীটি আমার কাছে আসার কথা রয়েছে। এলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. জাওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকী বলেন, ‘বিষয়টি শোনার পর আমরা বিস্মিত হয়েছি। অপারেশনের পর এত বছর ধরে কীভাবে একটি রোগীর পেটে যন্ত্রটি থেকে গেছে! তারপরও আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে ক্লিনিকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ২৫ মার্চ বাচেনা খাতুন পিত্তথলিতে পাথর নিয়ে মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার রাজা ক্লিনিকে ভর্তি হয়। সেখানে অস্ত্রপচারের পর থেকে আর সুস্থ হতে পারেননি তিনি। সবশেষ গেল ২ জানুয়ারি রাজশাহিতে এক চিকিৎসকের পরামর্শে এক্সরে করে তার শরীরের ভিতরে অস্ত্রপচারারের কাঁচি (রাফ সিজর) ধরা পড়ে।
/এএন
