মানবতার দেয়াল আছে, মানবতা নেই
উল্লাপাাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল গোলচত্বরের পাশে অবস্থিত মানবতার দেয়ালটিতে নেই মানবতার চিহ্নমাত্র।
রাস্তা, ফুটওভার ব্রিজে বেড়েছে ভ্রাম্যমাণ বাস্তুহীন মানুষের সংখ্যা। এসব বাস্তুহীনদের প্রয়োজন একটি পোশাক। শীতকালে বাস্তুহীনরা খুঁজে বেড়ান এক টুকরো গরম কাপড়। ভ্রাম্যমাণ সেসব বাস্তুহীন মানুষ রাস্তার ‘মানবতার দেয়াল’-এর দিকে তাকিয়ে থাকেন। কিন্তু মানবতার দেয়ালে এখন তারা পান না মানবতার চিহ্নমাত্র!
সরেজমিনে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার হাটিকুমরুল গোলচত্বরের একমাত্র মানবতার দেয়ালে দেখা যায় লাগানো রয়েছে নানা রকম পোস্টার।
দুইবছর আগে শাহেদ ওয়ালী নামে এক যুবক গড়ে তুলেছিলেন মানবতার দেয়ালটি। দেয়ালে ‘আপনার অপ্রয়োজনীয় কাপড় এখানে রেখে যান, প্রয়োজনীয় কাপড় নিয়ে যান’ লিখে সেখানে অসহায়, সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য কাপড় ঝুলিয়ে রাখা হতো। বর্তমানে মানবতার দেয়ালটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। মাত্র মাস খানেক চলেছিল কার্যক্রম।
ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম জানান, শুরুতে কিছুদিন এখানে প্রতিনিয়ত কাপড় ছিল। একটা সময় পর এখানে আর কেউ কাপড় রাখতো না। তিনি বলেন, ‘দেওয়ার চেয়ে নেওয়ার লোক অনেক বেশি। অনেক দিন এমনিতেই পড়ে আছে এ মানবতার দেয়ালটি।’
মানবতার দেয়ালটি বৃষ্টি এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মানবতার দেয়ালের উদ্যোক্তা শাহেদ ওয়ালী বলেন, ‘উত্তরাঞ্চলের প্রবেশপথ হাটিকুমরুল গোলচত্বর। দেশের প্রায় ২২ জেলার মানুষের চলাচল এখান দিয়ে। গুরুত্বপুর্ণ জনবহুল স্থান এটি। অন্য স্থানের চেয়ে এখানে ভ্রাম্যমাণ বাস্তুহীনের সংখ্যা বেশি। এসব বাস্তুহীনের বস্ত্রের অভাব মেটাতে প্রায় দুই বছর আগে একক চেষ্টায় এই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মানবতার দেয়াল স্থাপন করে কিছু কাপড় রাখি। কিছুদিন ভালোই চলছিল। পড়ালেখার জন্য শহরে আসার পর মাবতার দেয়ালের দিকে খেয়াল রাখতে পারি না। এখন আর ওখানে কেউ মানবিকতা দেখায় না। সবাই শুধু নিতে চায়। দেওয়ার মতো মানসিকতার মানুষ খুব কম। এখানে নির্বাচনী পোস্টারসহ নানারকম পোস্টার লাগানো হয়, নিচে ময়লার স্তুপ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মানবতার দেয়ালটি। সবাই নিজ নিজ মানবিক দিক থেকে এর দিকে নজর রাখলে মানবতার দেয়ালে মানবতা বেঁচে থাকবে।’
/এএন